টাকার বিনিময় জন্মের জাল শংসাপত্র তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগে বগুলা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিবসহ তিন অস্থায়ী কর্মীকে আগেই গ্রেফতার করেছিল হাঁসখালি থানার পুলিশ। এবার এই ঘটনায় বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাল তৃণমূল।
সম্প্রতি নদিয়ার দক্ষিণ প্রান্তের সীমান্ত লাগোয়া বেশ কয়েক জায়গা থেকে বাংলাদেশি নাগরিক এবং দালালদের গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের গ্রেফতারির ঘটনায় অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনা সামনে এসেছে। সেই দক্ষিণ নদিয়ারই হাঁসখালি থানার বগুলা-২ পঞ্চায়েত থেকে জন্মের জাল শংসাপত্র দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় শোরগোল পড়েছে।
সম্প্রতি দুটি শংসাপত্র জাল বলে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত নামে পুলিশ। তদন্তে বগুলা-২ পঞ্চায়েতের জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্র বিভাগের দুজন অস্থায়ী কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরায় সচিব সহ আরও এক কর্মীর নাম উঠে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তাঁরা পুলিশ হেফাজতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছরে বগুলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে প্রায় পাঁচ হাজার জন্ম সংক্রান্ত শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ শংসাপত্রের মধ্যে কতগুলি ঠিক তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ধৃতদের জেরা করে জানার চেষ্টা হচ্ছে, কত বছর ধরে তারা এই কাজ করছিল। এর পিছনে আর কোনও চক্র রয়েছে কিনা! সম্প্রতি হাঁসখালি থানা এলাকা থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার। এর মধ্যে জাল জন্ম শংসাপত্রের ঘটনা চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসনের। তৃণমূলের দাবি, এই দুর্নীতি অস্বীকার করতে পারেন না বিজেপির প্রধান। তৃণমূলের রানাঘাট সংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "এত বড় মাপের এবং পরিকল্পিত দুর্নীতি পঞ্চায়েত প্রধানকে বাদ দিয়ে কখনওই সম্ভব নয়। বিজেপির প্রধান কোনওভাবেই দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না। বিজেপি যে দুর্নীতিগ্রস্ত দল, এতে আরও স্পষ্ট হয়ে গেল।" পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির সুস্মিতা বিশ্বাস বর্মন বলেন, "প্রশাসন তদন্ত করছে। তারা ব্যবস্থা নেবে। আমরা চাই যদি কেউ দোষী হয় তারা যেন শাস্তি পায়।"
বিজেপি নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ওটা এর আগে তৃণমূলের পঞ্চায়েত ছিল। সেই অভ্যাসটাই ছাড়তে পারেনি। প্রধান সতর্ক থাকা সত্ত্বেও ওরা তাঁকে অগোচরে রেখে দুর্নীতি চালিয়েছে।"
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)