Advertisement
৩০ নভেম্বর ২০২৪
Crime News

স্ত্রীর ‘বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক’, প্রতিশোধ নিতে অপহরণ শ্যালককে! জেরায় কবুল বহরমপুরের ‘জামাইবাবু’র

গত বৃহস্পতিবার অনলাইনে খাবার অর্ডার করেছিল বহরমপুরের বদরপুরের একটি পরিবার। সেই খাবার আনার জন্য বাড়ি থেকে মাত্রা ৫০ মিটার দূরত্বে গিয়েছিল পরিবারের এক খুদে সদস্য। তার পর থেকে নিখোঁজ ছিল সে।

Kidnapped

এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:০৬
Share: Save:

স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়েছেন। সে কথা জানার পর থেকে নাকি স্ত্রী-সহ শ্বশুরবাড়ির উপর তাঁর খুব রাগ। তাঁদের সকলকে জব্দ করতে নাবালক শ্যালককে অপহরণ করে বহরমপুরের হোটেলে লুকিয়ে রেখেছিলেন। এমনকি, মুক্তিপণও দাবি করেন শ্বশুরবাড়ির কাছে। গ্রেফতারির পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এমনই স্বীকারোক্তি নকুল গোয়েলের। যদিও তদন্তকারীরা মনে করছেন, কিছু একটা লুকোচ্ছেন অভিযুক্ত। তদন্তের প্রয়োজনে তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার অনলাইনে খাবার অর্ডার করেছিল বহরমপুরের বদরপুরের একটি পরিবার। সেই খাবার আনার জন্য বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরত্বে গিয়েছিল পরিবারের এক খুদে সদস্য। কিন্তু তার পর থেকে আর তার খোঁজ মিলছিল না। ছেলেটি নিখোঁজের প্রায় এক ঘণ্টা পর তার দিদির মোবাইলে একটি ভিডিয়ো পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে বহরমপুরের একটি হোটেল থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় অপহৃত বালককে উদ্ধার করে পুলিশ। অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ছেলেটির দিদির স্বামী নকুলকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, মাত্র ন’মাস আগে আগরার বাসিন্দা নকুলের বিয়ে হয় বহরমপুরের বদরপুরের এক যুবতীর সঙ্গে। কিন্তু বিয়ের কিছু দিনের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিজের জন্মভিটে আগরায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন নকুল। কিন্তু স্ত্রী তাতে রাজি হননি। সেখান থেকে নকুলের ধারণা হয় যে, স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি, এক বার ঝগড়ার সময় স্ত্রী নাকি সেটা বলেওছেন। সেই আক্রোশে নাবালক শ্যালককে তিনি অপহরণ করেছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন ধৃত জামাইবাবু। তাঁর দাবি, শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে জব্দ করতেই ওই ফন্দি এঁটেছিলেন। কিন্তু স্ত্রীকে হোয়াট্‌সঅ্যাপ করে মোটা টাকা মুক্তিপণ চাইলেন কেন? ধৃতের কাছে এই প্রশ্নের পরিষ্কার জবাব পায়নি পুলিশ।

অন্য দিকে, নকুলের স্ত্রী পুলিশকে জানিয়েছেন স্বামী যে এমন একটা কাণ্ড করবেন, তা তিনি ভাবতেই পারেননি। তাঁদের দাম্পত্য কলহের জন্য তৃতীয় শ্রেণির একটি পড়ুয়াকে এ ভাবে হোটেলে নিয়ে গিয়ে বন্দি করে রাখা সুস্থ মস্তিষ্কের কাজ নয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘ভাইয়ের অচেতন অবস্থার ভিডিয়ো পাঠিয়ে আমাদের কাছ থেকে সোনা এবং টাকাপয়সা দাবি করেছিল ও (নকুল)।’’ জামাইয়ের কীর্তিতে কার্যত হতবাক এবং ক্ষুব্ধ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুক্তিপণ নিয়ে যোগাযোগের জন্য বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি গেস্ট হাউসের ঠিকানা দিয়েছিলেন নকুল। তবে তাঁর স্ত্রী বহরমপুর থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সাদা পোশাকের পুলিশ গিয়ে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করে। আর নকুলকে গ্রেফতার করে অপহরণের মামলা রুজু করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাজিদ ইকবাল বলেন, ‘‘অভিযুক্ত তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কারও সম্পর্ক রয়েছে রয়েছে বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, হোয়াট্‌সঅ্যাপে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন স্ত্রী। এ সব সহ্য করতে না পেরে তিনি শ্যালককে অপহরণ করে ‘শিক্ষা’ দিতে চেয়েছিলেন স্ত্রীকে। অভিযুক্তের বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁর স্ত্রীকে ডেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অপহৃত নাবালককে নেশাজাত তরল খাইয়ে দেওয়ায় তার শারীরিক সমস্যা হয়েছিল।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy