Advertisement
১৫ অক্টোবর ২০২৪
Lakshmi Puja

দুর্ঘটনা কেড়েছে এক চোখ, লক্ষ্মীপুজো এলে অন্য চোখের ক্ষীণ দৃষ্টিকে সম্বল করেই পট আঁকেন সত্তরের বৃদ্ধ

পট এঁকে যে রোজগার হয়, তাতে সংসার চলে না। তবু অনেক কষ্টে পূর্বপুরুষের এই পেশা আঁকড়ে রয়েছেন চিত্তরঞ্জন। লক্ষ্মী পুজো এলেই চায়ের দোকানের কাজ ফেলে আপন মনে এঁকে চলেন পটচিত্র।

নিজের মনে পট এঁকে চলেছেন শিল্পী চিত্তরঞ্জন পাল।

নিজের মনে পট এঁকে চলেছেন শিল্পী চিত্তরঞ্জন পাল। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ২১:৫১
Share: Save:

দুর্ঘটনা কেড়েছে এক চোখের দৃষ্টি। বয়সের কারণে ঝাপসা হয়েছে অন্য চোখ। পেটের তাগিদ এবং ইচ্ছাশক্তির জোরে প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে অবলীলায় একের পর এক লক্ষ্মীর পটচিত্র এঁকে চলেন চিত্তরঞ্জন পাল। তবে এই পেশায় আর সংসার চলে না বৃদ্ধের। তাই বাধ্য হয়ে বছরের বাকি সময়ে তিনি কাজ করেন চায়ের দোকানে। সেই রোজগারেই চলে সংসার।

পট এঁকে যে রোজগার হয়, তাতে সংসার চলে না। তবু অনেক কষ্টে পূর্বপুরুষের এই পেশা আঁকড়ে রয়েছেন চিত্তরঞ্জন। লক্ষ্মী পুজো এলেই চায়ের দোকানের কাজ ফেলে নাওয়া-খাওয়া ভুলে আপন মনে এঁকে চলেন পটচিত্র। তাঁর কাছে পটের বায়না আসে শান্তিপুরের বাইরে থেকেও। এক চিলতে টালির ঘরে বসে অনবরত পটচিত্র এঁকে চলেন তিনি। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে পটচিত্র। শিল্পী চিত্তরঞ্জন বলেন, ‘‘আগের তুলনায় পটচিত্রের চাহিদা অনেক কম। তার উপর রঙের দাম যতটা বৃদ্ধি পেয়েছে, ততটা পটচিত্রের দাম বৃদ্ধি পায়নি। তাই লাভ কম।’’

চিত্তরঞ্জনের উত্তরসূরি কে হবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে ৭০ বছর পার হওয়া বৃদ্ধের আক্ষেপ, ‘‘নতুন প্রজন্মকে এই পেশায় আনা যাচ্ছে না। আমার ছেলেরা কেউ এই কাজ করতে চায় না। এখানে রোজগার নিতান্তই সামান্য। তাই বাধ্য হয়ে সকলেই বেছে নিচ্ছে অন্য পেশা।’’ লক্ষ্মীপূজো এলেই একসময় গমগম করত তাঁর বাড়ির চত্বর। কলকাতা থেকে আসতেন খদ্দের। এমনকি মুর্শিদাবাদ থেকেও ক্রেতারা আসতেন তাঁর আঁকা পটচিত্রের খোঁজে। এখন সেসব অতীত। চিত্তরঞ্জনের দাবি, বার্ধক্য ভাতা পাননি চিনি। অভিমান রয়েছে বিস্তর থাকলেও হাতে রং-তুলি পেলে ভুলে যান সব। মেতে ওঠেন সৃষ্টির খেলায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Lakshmi Puja artist
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE