তাহেরপুরে প্রতীক্ষালয়ের উপর পড়ল গাছ (নীচে বাঁ দিকে)। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় এই ধাক্কাটা একেবারে অপ্রত্যাশিত ছিল। সেই ঝড়, সেই ধ্বংসাত্মক কাণ্ড। আবার ফসল তছনছ, ঘরের চাল উড়ে যাওয়া এবং বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে অন্ধকার বহু এলাকা। যেন ঝঞ্ধার পুনরাবৃত্তি। ঘটনাচক্রে দিনটাও এক। বুধবার। আমপান এসেছিল গত সপ্তাহের বুধবার মধ্যরাতে। আর কালবৈশাখী এ সপ্তাহের বুধসন্ধ্যায়।
আমপানের তাণ্ডবের মধ্যেও ফসলের যেটুকু টিঁকেছিল ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় প্রবল কালবৈশাখীতে সেইটুকুও ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, রানাঘাট লন্ডভন্ড করে দিয়েছে মিনিট পঁয়তাল্লিশের কালবৈশাখী। গতি ছিল ঘণ্টায় ৬৫-৭০ কিলোমিটার। বুধবার গড়ে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে জেলায়।
ঝড়ে প্রধানত ঝিঙে, পটল, ঢ্যাঁড়শ, কুমড়োর মতো আনাজ এবং তিল, পেঁপে, আম ও লিচুর প্রভূত ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি দফতর। এমনিতেই আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি। তার উপর এই চোট। জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) রঞ্জন রায়চৌধুরী বলেন, “নদিয়ায় প্রায় দেড় হাজার মৌজায় চাষআবাদ হয়। ফলে, এই ঝড়ের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এত দ্রুত করা সম্ভব হয়নি। হিসেবের কাজ চলছে।” জেলা উদ্যান অধিকর্তা সুরপতি মণ্ডল ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। মন্তব্য করেছেন, “এ সব নিয়ে কিচ্ছু বলব না।”
তবে বিভিন্ন জায়গার চাষিরা মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েছেন, জেলা জুড়ে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে যাবতীয় মাচার ফসলের। আনাজের চরম ক্ষতি হয়েছে শান্তিপুরে। এলাকার চাষি হরিদাস বিশ্বাস বলেন, “আমপানের পর কিছু ফসলের খেত ঠিকঠাক করার চেষ্টা হচ্ছিল। যে পেঁপে গাছ বা আনাজের মাচা আমপানে পুরোটা ভেঙে পড়েনি সেগুলো মেরামত করা হচ্ছিল। কড়া রোদে জমি শুকোচ্ছিল। তখনই এল আবার ঝড়।’’ ফল চাষি দুর্গা তেওয়ারি বলেন, “ আমার চার বিঘা লিচু বাগান অর্ধেকেরও বেশি শেষ হয়ে গেছে। সাড়ে চার বিঘা আমবাগানের অধিকাংশ গাছে আর কোনও আম নেই।”
এরই মধ্যে জেলার রাজনৈতিক মহলে উঠেছে অন্য সমালোচনা। বৃহস্পতিবার করোনা আক্রান্তদের নিয়ে নিজের ফেসবুকে আবার ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এর আগেও তিনি একাঘিক বার এই রকম বার্তা পোস্ট করেছেন। এ দিন প্রশ্ন উঠেছে, জেলায় বহু এলাকা যখন ঝড়বিধ্বস্থ এবং ক্ষতিগ্রস্তরা ত্রাণ বা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না, তখন তা নিয়ে সাংসদ কেন নীরব? কেন তা নিয়ে কোনও পোস্ট নেই? সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে-র কথায়, ‘‘আমপানের ক্ষতি মেটানোর জন্য তিনি কোনও পরিকল্পনার কথা বলছেন না। আসলে সেখানে তো নিজেদের সাফল্য প্রচারের ব্যাপার নেই।’’ রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ বিজেপির জগন্নাথ সরকারের বক্তব্য, ‘‘দুর্যোগে দুরাবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য তিনি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কোনও বার্তা দিচ্ছেন না।’’
এ দিন ফোন ধরেননি মহুয়া। আর নদিয়ায় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাংসদ ফেসবুকে কী বলেছেন দেখিনি। কোনও মন্তব্য করব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy