উদ্ধার করেন মহম্মদ আকমল নামে এক ব্যক্তি। তার পর শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। — নিজস্ব চিত্র।
কুমারী কুন্তী সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েছিলেন সূর্যদেবের ঔরসে। লোকলজ্জা ও ভয়ে সদ্যোজাত কর্ণকে বেতের পেটিকায় ভাসিয়ে দেন নদীতে। মহাভারতের সেই কাহিনি আবার ভেসে এল আধুনিক ভারতে। ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া সদ্যোজাত শিশুকন্যা উদ্ধার হল মালদহের রতুয়ায়। সুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করলেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রতুয়া থানার নয়া বিলাইমারি এলাকায় গঙ্গার উপরে একটি সবুজ প্লাস্টিকের ভেলা ভেসে যেতে দেখেন কয়েক জন। এর পর নৌকা বেয়ে সেই ভেলার কাছে গিয়ে দেখা যায় ভেলার ভিতরে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। তখনও তার দেহে প্রাণ আছে। শিশুটিকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করেন গ্রামবাসীরা। খবর দেওয়া হয় থানায়। এর পর তড়িঘড়ি শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রথমে শিশুটিকে মহানন্দটোলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। আপাতত ওই শিশুর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন মালদহ মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা।
মহম্মদ আকমল নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনিই বাচ্চাটিকে নৌকা করে গিয়ে তুলে আনেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা গঙ্গার পাড়ে বসেছিলাম। দেখলাম একটা বেলুনের মতো ভেলা ভাসছে। তার মধ্যে একটি বাচ্চাও রয়েছে। এটা দেখেই আমরা দৌড় দিই কিনারার দিকে। একটি নৌকা নিয়ে ওর কাছে যাই। গিয়ে দেখি ভিতরে একটি ছোট্ট মেয়ে শুয়ে হয়েছে। ওর বয়স হবে দিন সাতেক।’’
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় শিশুটিকে গঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়েছে কোনও পরিবার। তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে। তবে এখনও সন্ধান মেলেনি। ভীষ্মের রথের সারথি অধিরথ ও তাঁর স্ত্রী রাধা সদ্যোজাত কর্ণকে উদ্ধার করে পুত্রস্নেহে তাঁকে পালন করেছিলেন। তবে রতুয়ায় উদ্ধার হওয়া শিশুসন্তানটির পরিবারের খোঁজ মেলেনি। এখন সে কার কাছে প্রতিপালিত হবে তারও সিদ্ধান্ত হয়নি। আপাতত শিশুটি হাসপাতালেই থাকছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy