মৌসুমী বলেন, ‘‘এই গ্রেফতারি তো স্বাভাবিক। আমার মতে, আরও আগে ওঁকে (তাপস) গ্রেফতার করা উচিত ছিল। অনেক বছর দেরি হল।’’ —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাপস মণ্ডলের গ্রেফতারির পর বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন কামদুনি কাণ্ডের প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী কয়াল। এক সময় তিনি তাপসের অফিসেই কাজ করতেন। সেই মৌসুমীর অভিযোগ, ঠিক মতো পারিশ্রমিক না পেয়ে কাজ ছেড়ে দিয়েছিলেন। তাপসকে জেরা করলে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে আরও বড় বড় নাম উঠে আসবে বলে দাবি মৌসুমির।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্তমানে তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপসকে রবিবার দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায় সিবিআই। টানা জেরার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাপস নিজে বলছেন, কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হল, সেটা তাঁর বোধগম্য হচ্ছে না। কারণ, তিনি তদন্তে সহযোগিতাই করছিলেন। অন্য দিকে, রবিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে তাপসের অফিসের প্রাক্তন কর্মী মৌসুমী বলেন, ‘‘এই গ্রেফতারি তো স্বাভাবিক। আমার মতে, আরও আগে ওঁকে গ্রেফতার করা উচিত ছিল। অনেক বছর দেরি হল।’’
মৌসুমীর কথায়, ‘‘এ রাজ্যে বিএড কলেজগুলোতে কাউন্সেলিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন তাপস। এই দায়িত্ব ওঁকে দিয়েছিলেন স্বয়ং মানিক ভট্টাচার্য (প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি)। তবে একা মানিক নন, এই দুর্নীতি কাণ্ডে আরও বড় বড় মাথা রয়েছেন। সেগুলো তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে।’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘অনেক দেরি হল গ্রেফতারিতে। এত দিন হয়তো ইডিকে তদন্তে সহযোগিতা করেছেন তাপস। কিন্তু এখনও উনি পুরোপুরি মুখ খোলেননি। অনেক কথা ওঁর পেটে আছে। আমি সাধারণ মানুষ হিসেবে বলতে পারি, যে ভাবে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন উনি, তার বিচার হোক। উনি রাজসাক্ষী হোন। সাজা ওঁর প্রাপ্য।’’
আনন্দবাজার অনলাইনকে মৌসুমী জানান, বছর দেড়েক ধরে মহিষবাথানে তাপসের একটি অফিসে কাজ করতেন তিনি। দীনদয়াল উপাধ্যায় কেন্দ্রীয় কারিগরি শিক্ষা প্রকল্পের কাজ ছিল। সব মিলিয়ে ১৩-১৪ জন মিলে কাজ করতেন। কিন্তু কেউই সময়মতো পারিশ্রমিক পাননি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এক সঙ্গে অনেকে কাজ ছেড়ে দিয়েছিলাম। মানুষ তো দু’টো টাকার জন্য কাজ করেন। কিন্তু যেখানে সময় মতো স্যালারিই দেবে না, সেখানে কাজ করে লাভ কী!’’ এখানেই থামেননি মৌসুমি। তিনি বলেন, ‘‘যাঁদের কাছে কোটি কোটি টাকা আছে, তাঁরা কর্মীদের সামান্য কয়েক হাজার টাকা পারিশ্রমিক দিতেন না। আশ্চর্যের বিষয় হল, ওই অফিসে যিনি চা বানাতেন, তাঁকে পর্যন্ত টাকা দেননি। এঁরা এমনই মানুষ।’’
মৌসুমী জানান, মহিষবাথানের তাপসের অফিসে বিএড কলেজেরও কাজ হত। তবে ওই কাজ দেখার জন্য অন্য কর্মীরা ছিলেন। দুর্নীতি প্রসঙ্গটা তিনি জেনেছেন পরে। অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘২০১৬ সাল নাগাদ অনেক কর্মী এই দুর্নীতির বিষয়টি জানতে পেরে যান। তাই তাঁদের ছাড়িয়ে দেওয়া হয়।’’ তিনি আশা করছেন, শীঘ্রই বিচার পাবেন রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy