Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sheikh Sufiyan

ভোটের মুখে উন্নয়ন পর্ষদে ‘পুনর্বাসন’ সুফিয়ানের 

একুশের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয়ের পরে দলের মধ্যে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন তৃণমূল নেত্রীর নির্বাচনী এজেন্ট সুফিয়ান।

শেখ সুফিয়ান।

শেখ সুফিয়ান। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫৮
Share: Save:

পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের নেতা শেখ সুফিয়ান তৃণমূলে কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন। লোকসভা ভোটের মুখে সেই সুফিয়ানকে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের যুগ্ম সহ-সভাপতি পদে নিয়োগ করল রাজ্য সরকার। গত ১৮ জানুয়ারি হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের কাছে রাজ্য নগর উন্নয়ন দফতরের তরফে ই-মেলে এই নির্দেশ এসেছে বলে পর্ষদ সূত্রে জানানো হয়েছে।

হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর মানছেন, ‘‘শেখ সুফিয়ানকে পর্ষদের জয়েন্ট ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে।’’ তবে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে ফোন করলে সুফিয়ান ধরেননি। বিরোধীদের দাবি, ভোটের আগে নন্দীগ্রামে তৃণমূলের কোন্দলে রাশ টানতেই সুফিয়ানকে এই পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। এ জন্য নজিরবিহীন ভাবে ‘জয়েন্ট ভাইস-চেয়ারম্যান’ পদটি সৃষ্টি করা হয়েছে বলেও দাবি। এতদিন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদে চেয়ারম্যানের পরে ভাইস-চেয়ারম্যানের একটিই পদ ছিল। সেই পদে রয়েছেন সাধন জানা। বিগত দিনে দু’জন সহ-সভাপতি ছিল বলে মনে পড়ছে না হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের কর্মীদেরও। দুই সহ-সভাপতি ঘরও বরাদ্দ নেই পর্ষদের প্রশাসনিক ভবনে।

একুশের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয়ের পরে দলের মধ্যে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন তৃণমূল নেত্রীর নির্বাচনী এজেন্ট সুফিয়ান। তারপর গত পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট বন্টন ঘিরে নন্দীগ্রামে সুফিয়ান বনাম সামসুল ইসলামের দ্বন্দ্ব প্রকট হয়েছিল। জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসেবে সুফিয়ানের নাম ঘোষণার পরেই নন্দীগ্রাম ১ ব্লক অফিসে সামসুল অনুগামীরা তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। তারপরই রাতারাতি সুফিয়ান টিকিট হারান। পরিবর্তে জেলা পরিষদে প্রার্থী করা হয় সামসুলকেই। এর পরে ভোটে কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে সুফিয়ান গোষ্ঠী। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ধাক্কা খায় তৃণমূল। নন্দীগ্রামের ২টি পঞ্চায়েত সমিতি ও ১৭টির মধ্যে ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতেরই দখল নেয় বিজেপি।

এরপরও চলতে থাকে নন্দীগ্রামে তৃণমূলের এই দ্বন্দ্ব। কোনও দলীয় কর্মসূচিতে সামসুল ও সুফিয়ানকে এক সাথে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় না। গত ৪ জানুয়ারি দলীয় কর্মসূচিতে আবার সুফিয়ান তাঁর বক্তব্যে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে একটিও শব্দ উচ্চারণ করেননি। এ সব নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে জলঘোলা শুরু হয়। নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতৃত্বের আবার দাবি করেন, তৃণমূলের প্রথম সারির কিছু নেতা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে সুফিয়ানের সঙ্গে বিজেপি-র বৈঠক বৈঠক নিয়েও জোর জল্পনা ছিল।

এই অবস্থায় সুফিয়ান শিবির বেঁকে বসলে লোকসভা ভোটে নন্দীগ্রামে দলের ব্যথা বাড়বে, সম্ভবত সেটা বুঝতে পেরেই সুফিয়ানকে পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। বিশেষ করে, নন্দীগ্রামের সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখার অঙ্ক এ ক্ষেত্রে কাজ করছে বলে অনুমান। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক মেঘনাদ পালের কটাক্ষ, ‘‘যে পদের কোনও মূল্য নেই সেই পদে বসানো হল। সুফিয়ান যাতে দলছুট না হয়ে যান সেই জন্য এটা সান্ত্বনা পুরস্কার।’’

অন্য বিষয়গুলি:

haldia developement authority Haldia TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy