Advertisement
২৭ অক্টোবর ২০২৪
TMC Councilors

ক্ষতি দেখতে গিয়ে আবাস-প্রশ্নের মুখে

পুজোর আগের টানা বৃষ্টিতে অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙেছিল। তখনও উঠেছিল আবাসের দাবি। তার আগে জুলাই-অগস্টের বৃষ্টিতেও একই দাবি তুলেছিলেন গ্রামের গরিব মানুষ।

— প্রতীকী চিত্র।

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য
গড়বেতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:১১
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড় দানা-র দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে বেরিয়ে আবাস নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের। শনিবার এই ছবি দেখা যায় পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার তিনটি ব্লকের বেশ কিছু পঞ্চায়েতেই। তৃণমূলের প্রতিনিধিদের অনেকেই অবশ্য এই বিষয়ে কেন্দ্রের ঘাড়ে দোষ ঠেলেছেন।

পুজোর আগের টানা বৃষ্টিতে অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙেছিল। তখনও উঠেছিল আবাসের দাবি। তার আগে জুলাই-অগস্টের বৃষ্টিতেও একই দাবি তুলেছিলেন গ্রামের গরিব মানুষ। এ বার ঘূর্ণিঝড় দানা-র দুর্যোগেও জোরালো হচ্ছে আবাস যোজনায় বাড়ির দাবি। এ দিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সাংসদ-বিধায়কেরা তো বটেই, স্থানীয় পুরসভা-পঞ্চয়েত সমিতি এমনকি জেলা পরিষদের কোনও তৃণমূল নেতাও যেন বাংলা আবাস যোজনার সমীক্ষায় হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা না করেন।

এই আবহে এ দিন সকালে ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে বেরিয়েছিলেন গড়বেতা ১ ব্লকের আগরা পঞ্চায়েতের প্রধান আজিম চৌধুরী। এই পঞ্চায়েত এলাকায় ১০টি মাটির বাড়ি ভেঙেছে, ৫০টির মতো বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রধানকে পেয়ে আবাস যোজনার বাড়ির প্রসঙ্গ তোলেন অনেকে। কারও জিজ্ঞাসা, কবে মিলবে আবাসের বাড়ি? কেউ জানতে চান, আবাস-প্লাসের তালিকাভুক্তদের নতুন করে সমীক্ষা কবে হবে? প্রধান তাঁদের বোঝান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আবাসের বাড়ি রাজ্য সরকারই করে দেবে। মুখ্যমন্ত্রীর উপর আস্থা রাখতে বলেন তিনি। আবাস নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় সন্ধিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান আশরাফ গায়েনকেও।

আগরার পঞ্চায়েত প্রধান আজিম চৌধুরী বলছেন, “কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে আবাস যোজনা থেকে বঞ্চিত করে না রাখলে অনেককে এই দুর্বিষহ অবস্থায় পড়তে হত না। আমরা বলছি কেন্দ্রের জন্যই এই অবস্থা। সঙ্গে বলছি কেন্দ্র না দিলেও, রাজ্য সরকার বাড়ি তৈরি করে দেবে।” সন্ধিপুরের প্রধান আশরাফ গায়েনও মানছেন, “ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি আবাসের কথা জিজ্ঞাসা করছে। আমরা বলছি, তালিকাভুক্তদের আবাসের বাড়ি করে দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।”

গড়বেতা ২ অর্থাৎ গোয়ালতোড় ব্লকেও অনেক মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানে একটি পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি বলছেন, “ক্ষতির খবর নিতে গিয়ে মানুষের ক্ষোভ টের পাচ্ছি।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীনবন্ধু দে-র কথায়, “ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে আমরা বলছি, রাজ্য সরকার পাশে আছে।” এই ব্লকে আবাস তালিকায় ১২ হাজারের বেশি পরিবার নথিভুক্ত। উপনির্বাচন মিটলেই এক বার সমীক্ষা হবে, জানান এক পঞ্চায়েত প্রতিনিধি। গড়বেতা ৩ অর্থাৎ চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের শঙ্করকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জ্ঞানাঞ্জন মণ্ডলের দাবি, “মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি ভরসা আছে গরিব মানুষের।”

বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিশ্রের পাল্টা প্রশ্ন, “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় গত দফায় ৫৬ হাজার কোটি টাকা পাঠিয়েছিলেন এই রাজ্যে। সেই টাকায় অনেক বাড়ি হত। সেই টাকা কেন পড়ে আছে? যথাসময়ে বাড়ি করা হলে গরিব মানুষকে এই দুর্ভোগে পড়তে হত না।”

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Councilors protests Garhbeta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE