হাতির হানায় মৃত আমির হাতি। নিজস্ব চিত্র
জন্মদিনের রাতে হাতি দেখতে গিয়ে হাতির হানায় মৃত্যু হল নবম শ্রেণির এক স্কুল পড়ুয়ার। বৃহস্পতিবার রাতে গোপীবল্লভপুর থানার গোপালপুরগ্রামের ভুট্টা জমিতে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতের নাম আমির হাতি (১৬)। আমিরের বাড়ি বেলিয়াবেড়া থানার ঘড়াইডাঙা গ্রামে।
বন দফতরের দাবি, বার বার নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও হাতি এলেই কয়েকশো মানুষজন ভিড় জমাচ্ছে। যার ফলে প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে বিনপুর থানার কেন্দবনি জঙ্গলে হাতি দেখতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তির। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় দেখা গিয়েছে কখনও হাতিকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়। আবার কখনও চিৎকার চেঁচামেচি করেন মানুষজন। ফলে হাতিও উত্ত্যক্ত হয়ে যায়। দলে শাবক থাকলে হাতি আরও বেশি অস্থির হয়ে পড়ে।
বন দফতর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নয়াগ্রামের চাঁদাবিলা রেঞ্জ থেকে একটি ১৩টি হাতির দল গোপীবল্লভপুর রেঞ্জের গোপালপুরে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে ঢুকে পড়ে। ওই দলে কয়েকটি শাবক রয়েছে। গরমকালে এলাকায় হাতি আসার খবর পেয়ে আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারা ভিড় জমান। ব
হস্পতিবার রাতে আমিরের দাদা দীপক হাতি ও তার মামা রাহুল আগুয়ান এবং আরও জনা তিনেক মিলে একটি টোটোতে চেপে গোপালপুরে যান। আমিরও হাতি দেখতে দাদা ও মামার সঙ্গে হাতি দেখতে যাওয়ার জন্য বায়না করেছিল। কিন্তু দীপক নিয়ে যাননি। গোপীবল্লভপুরের বাকড়া শ্যামা স্মৃতি বিদ্যাপীঠের নবম শ্রেণির ছাত্র আমির কিছুক্ষণ পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে যায়। সে তার মামাদাদুকে জানায়, হরিনাম সংকীর্তন দেখতে যাচ্ছে। আসলে হরিনাম সংকীর্তন না দেখে জমির আল বরাবার হেঁটে আমির গোপালপুর গ্রামে পৌঁছে যায়। আমিরের দাদা দীপক বলেন, ‘‘আমি প্রথমে নিয়ে যেতে চাইনি। কিন্তু ওই গ্রামে গিয়ে দেখি ভাই চলে এসেছে হাতি দেখতে। তারপর ভাইকে আমি দু’থাপ্পড় মেরে বাড়ি যেতে বলেছিলাম। কিন্তু ভাই বাড়ি যায়নি।’’
তাড়া খেয়ে গোপালপুর গ্রামে ভুট্টাখেতে হাতির দল ঢুকে পড়ে। ভুট্টাগাছগুলি প্রায় ন’ফুটের কাছাকাছি লম্বা ছিল। ওইসময় দলের একটি হাতি পেছনে ছিল তা বুঝতে পারেনি আমির। ওই হাতিটি শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে তাকে। সঙ্গে সঙ্গে আমিরকে উদ্ধার করে গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থা থাকায় তাকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে বার করার সময় আমিরের মৃত্যু হয়। শুক্রবার ঝাড়গ্রাম পুলিশ মর্গে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দীপক বলেন, ‘‘ভুট্টাখেতে গাছগুলি অনেক লম্বা ছিল। যার ফলে হাতিটি পেছনের দিক থেকে চলে আসায় ভাই বুঝতে পারেনি। হাতি দেখতে হাজার খানেক মানুষ গিয়েছিলেন। ভাইকে যেতে নিষেধ করেছিলাম। কথা শুনলে ভাইয়ের জন্মদিন ও মৃত্যুদিন একহত না।’’
শুক্রবার হাতির দলটি গোপালপুরের জঙ্গলে আছে। এ দিন বিকেলে মৃতের পরিবারের হাতে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হয়। ঝাড়গ্রামের এডিএফও পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এলাকায় হাতি এলে লকজন চলে যান। আপ্রাণ চেষ্টা করছি তবুও মানুষজন কথা শুনছেন না। ’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy