শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের তৃণমূল সরকারের জনস্বার্থ নীতির প্রতিবাদে এবং গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল ছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামের সেই মিছিল থেকে বিদ্যুতের বিল এবং নিত্যদিনের আনাজের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তৃণমূলকে কটাক্ষ করলেন সেখানের বিধায়ক। ঘটনাচক্রে বৃহস্পতিবারই আনাজের মূল্যবৃদ্ধি রুখতে জেলা সদর তমলুকের বড়বাজার পরিদর্শন করলেন মহকুমাশাসক।
এদিন নন্দীগ্রামে সীতানন্দ কলেজ থেকে জানকীনাথ মন্দির পর্যন্ত বিজেপির প্রতিবাদ মিছিল ছিল। তাতে অংশ নেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু এবং তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। মিছিল শেষে শুভেন্দু জানকীনাথ মন্দিরের সভা মঞ্চ থেকে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, ‘‘২০ টাকার পাউচ হয়েছে। ২ কুড়িতে এক কিলো আলু হয়েছে। ৬ কুড়িতে এক কিলো টমেটো হয়েছে।’’ সভায় শুভেন্দু দাবি করেন, পূর্ব মেদিনীপুরকে ‘পিসি ভাইপো’ মুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি, তিনি সভা থেকে বাম কর্মীর ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। শুভেন্দু বলেন, ‘‘২০২১ সালে বামেরা ভোট পেয়েছিল ৬২০০। সেই সময় আপনারা বামেদের প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে জামানত বাজেয়াপ্ত করিয়েছিলেন। ২০২৪ এ সেটা কমে ৩৮০০ হয়ে গেছে। ২০২৬ এ সেটা শূন্য হয়ে যাবে। আমরা সিপিএমকে ও তৃণমূলকে তাড়াব। বাম কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘আমরা বেকার যুবকদের হাতে চাকরি নিয়োগ পত্রটা তুলে দেব। আমরা বাংলাকে বাঁচাতে চাই।’’
বাজারে আনাজের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষুদ্ধ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা-সহ সমস্ত জেলায় ১০ দিনের মধ্যে আনাজের দর কমানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই নির্দেশের পরেই পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন ব্লকে বিডিও এবং পুলিশ আধিকারিকরা বাজার পরিদর্শন করছেন। তবে জেলা সদর তমলুকে প্রশাসন ও পুলিশের অভিযান না হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছিল। এ দিন সকালে তমলুকের বড় বাজারের আনাজ বাজার পরিদর্শনে যান তমলুকের এসডিও দিব্যেন্দু মজুমদার, এসডিপিও আফজল আবরার, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সচিব শ্যামল দাস।
আধিকারিকেরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আলু, পটল, বেগুন, টোম্যাটো, কুমড়ো, ঢ্যাঁড়শের মতো আনাজের পাইকারি দর এবং বাজারে ক্রেতাদের কাছে বিক্রির দাম জানতে চান। তাতে দরের ফারাক ধরা পড়ে। অধিকাংশ আনাজ ব্যবসায়ী জ্যোতি আলু বিক্রি করছিলেন ৩৫ টাকা কিলোগ্রাম দরে। তাঁরা পাইকারি বাজারে তা ৩০ টাকা দরে কিনেছেন বলে দাবি। তবে প্রশাসনের এক আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, পাইকারি বাজারে এখন আলুর দর ২৭ টাকা ৬০ পয়সা। বেশি কেন দাম নেওয়া হচ্ছে, তা জানতে চান আধিকারিকেরা।
বাজারের ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, পাঁশকুড়া, ঘাটাল, হাওড়ার ধুলাগড়ে পাইকারি আনাজ বাজার থেকে বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে। গাড়ি ও শ্রমিকদের দিয়ে বহন খরচ বিবেচনা করেই অল্প লাভ রেখেই তাঁরা আনাজ বিক্রি করছেন। যদিও ক্রেতাদের একাংশ অভিযোগ করেন, আধিকারিকদের কাছে আনাজ ব্যবসায়ীদের একাংশ বিভিন্ন আনাজের দাম কমিয়ে বলেছেন।
বাজার পরিদর্শনের পরে মহকুমাশাসক দিব্যেন্দু মজুমদার বলেন, ‘‘কিছু আনাজের দাম মোটামুটি ঠিক আছে। তবে কয়েকটি আনাজের দাম বেশি। আমরা ঠিক করেছি পাইকারি বাজার দর উল্লেখ করে বাজারে বোর্ড টাঙানো হবে। ব্যবসায়ীদেরও খুচরো দর লিখে রাখতে বলা হয়েছে। এতে ক্রেতারা বুঝতে পারবেন।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, যাঁরা দাম বেশি নিচ্ছেন তাঁদের নোটিস দেওয়া হবে। জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সচিব শ্যামল দাস বলেন, ‘‘নিয়মিত পরিদর্শন করার চেষ্টা হচ্ছে। যাতে বাজারে আনাজের দর নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy