—প্রতীকী চিত্র।
আজ, মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান। পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের নামে ডাকা হয়েছে এই অভিযান। আসলে এর পেছনে কোন দল তা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছে। সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম দুই জেলাতেই আড়ালে থেকে এই অভিযানের প্রস্তুতি নিয়েছে গেরুয়া শিবির। সমাজ মাধ্যমে তো বটেই, গোপন বৈঠক করেও নবান্ন যাত্রার প্রস্তুতি নিয়েছেন পদ্ম নেতা, কর্মীরা। সূত্রের খবর, বাস নয়, বেশিরভাগ ছাত্র যাবেন ট্রেনে করেই।
তৃণমূলের দাবি, এই কর্মসূচির পিছনে রয়েছে পদ্মশিবিরই। নবান্ন অভিযান থেকে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। বিজেপির পাল্টা দাবি, কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’। তৃণমূল ছাত্রদের আন্দোলনকে ভয় পাচ্ছে। অভিযানের পিছনে যে গেরুয়া শিবিরের প্রত্যক্ষ সমর্থন রয়েছে, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রবিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরে এক মশাল মিছিল হয়েছে। ছিলেন বিজেপির যুব মোর্চা, মহিলা মোর্চা প্রভৃতি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মিছিল থেকে নবান্ন অভিযান সফল করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সভাপতি আশীর্বাদ ভৌমিক বলছেন, ‘‘মঙ্গলবার ইতিহাস তৈরি হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হবে। তৃণমূলের পুলিশ আটকানোর চেষ্টা করলে পরবর্তী সময়ে সারা রাজ্য স্তব্ধ হয়ে যাবে।’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষ বলছেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে লোক খেপিয়ে গন্ডগোলের চেষ্টা হচ্ছে। বিজেপি, এবিভিপি, আরএসএসের কিছু লোক হাওয়া দিচ্ছেন।’’ জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘‘তৃণমূল ভয় পেয়েছে। কারণ, সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। ছাত্র সমাজ রাস্তায় নেমেছে।’’
খড়্গপুর থেকে বিপুল সংখ্যক নবান্নে ছাত্র সমাজের কর্মসূচিতে যোগদান করতে চলছে। শুধু ছাত্র নয়, বহু শিক্ষানুরাগীও ওই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন বলে জানা গিয়েছে। খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা এবিভিপির জেলা নেতা ইন্দ্রজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “যার যে ভাবে ইচ্ছে পৌঁছবে। সাধারণ মানুষও যাচ্ছে।” খড়্গপুর শহরের টিএমসিপি নেতা আকাশ মেহেতা বলেন, “নবান্ন অভিযানের নেপথ্যে বিজেপি ও এবিভিপির উস্কানি রয়েছে। তবে খড়্গপুর শহর থেকে কলেজ পড়ুয়া কেউ যাচ্ছে না বলেই আমরা জানি।”
ঘাটাল, খড়ার, চন্দ্রকোনা, দাসপুর থেকে অনেকে সোমবার বাসে, ট্রেনে করে গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন বলেও খবর। তবে ঘাটাল থেকে কোনও বাস ভাড়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ঘাটালের বাস মালিক সংগঠন। ছোট গাড়িতে অনেকে যেতে পারেন। গড়বেতার তিনটি ব্লক থেকে কিছু সংখ্যক মানুষ যাবেন বলে জানা গিয়েছে। এই তিনটি ব্লক থেকে লোক নিয়ে যাওয়ার জন্য বিজেপি গোপনে প্রস্তুতি নিয়েছে বলে খবর। নারায়ণগড় থেকে ছাত্র ও মহিলা মিলে পাঁচ শতাধিক ও দাঁতন থেকে যাবেন চার শতাধিক মানুষ। সকলেই ট্রেনেই যাবেন বলে জানা গিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলছেন, ‘‘মঙ্গলবার জেলার কোথাও বেআইনি জমায়েত করে গোলমাল ছড়ানোর চেষ্টা হলে পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করবে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলার ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া সীমানায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
ঝাড়গ্রাম জেলা থেকেও গেরুয়া শিবিরের লোকজন নবান্ন অভিযানে যাচ্ছেন। জেলার এবিভিপি নেতা বাপি দাস জানাচ্ছেন, কর্মসূচির জন্য কোনও বাস ভাড়া হয়নি। তবে সূত্রের খবর, নবান্ন অভিযানের জন্য জেলা থেকে লোকজন নিয়ে যাওয়ার জন্য বিজেপি রাজ্য স্তর থেকে ২০টি বাস পাঠানো হচ্ছে। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলছেন, ‘‘ছাত্র সমাজের ওই কর্মসূচিতে যে কেউ যেতে পারেন।’’ টিএমসিপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি বর্তমানে জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি আর্য ঘোষ বলছেন, ‘‘রাম-বামের ওই যৌথ কর্মসূচির আড়ালে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম জেলার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন কেউ ওখানে যাবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy