বন্দরে থমকে কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
শ্রমিক অসন্তোষের জেরে প্রায় অচল রইল হলদিয়া বন্দর। বার্থে বার্থে দাঁড়িয়ে রইল জাহাজ। ঘণ্টায় ঘণ্টায় বন্দরের আধিকারিকেরা বৈঠক করলেও মেলেনি সুরাহা।
হলদিয়া বন্দরে মূলত দুটি সংস্থাকে পণ্য পরিবহণ-সহ বন্দরের একাধিক কাজ করার বরাত দেওয়া হয়েছে। ওই দুই বেসরকারি সংস্থার শ্রমিকেরা মঙ্গলবার দুপুর থেকেই কাজ বন্ধ করে দেন। ফলে এ দিন প্রায় চারটি বার্থে জাহাজ দাঁড়িয়ে থাকে।ওই শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, সংস্থার তরফে বন্দর কর্তৃপক্ষকে মূল বেতনএক দেখানো হচ্ছে। আর তাদের অনেকটাই কম বেতন দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকদের দাবি, প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং বন্দরের কাছে যা বেতন দেখানো হয়, সেই হারেই তাঁদেরও বেতন দিতে হবে। কর্তৃপক্ষ ওই দাবি না মানা পর্যন্ত তাঁরা কর্মবিরতি পালন করবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, ‘‘২০১৯ সাল থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ড ও বন্দরের কাছে আমাদের মূল বেতন দেখানো হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু আমাদের পে স্লিপে দেখানো হয়েছে ৯৫০০ টাকা। আমরা এখন মূল বেতন পাই প্রায় ২০ হাজার টাকার মত। ১৫ হাজার টাকা মূল বেতন দেখানো হলে আমাদের বেতন গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় ৩২ হাজার টাকা। ডিসেম্বর মাসে বেতনের সঙ্গে পে স্লিপ আসতেই বিষয়টি নজরে আসে আমাদের।’’ ওই শ্রমিকের কথায়, ‘‘আগে আমাদের ১৩০০ টাকা প্রভিডেন্ট ফান্ড বাবদ নেওয়া হত। বর্তমানে সংস্থা ৫০০ টাকা বাড়িয়ে ১৮০০ টাকা নেয়। এই সবের প্রতিবাদে দুটি সংস্থার শ্রমিকরা এক সঙ্গে কর্মবিরতি পালন করছি।’’
এদিকে, বন্দরের অচলাবস্থার জন্য জাতীয় ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি বন্দর কর্তৃপক্ষের। বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, এ দিন বিকেল পর্যন্ত চারটি বার্থে জাহাজ দাঁড়িয়ে রয়েছে। ৪বি, ৮, ৯ ও ১৩ নম্বর বার্থে জাহাজদাঁড়িয়ে। রাতে জাহাজ এলে আরও বেশি প্রভাব পড়বে বন্দরে। হলদিয়া বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (ট্রাফিক) অভয় মহাপাত্র বলেন, ‘‘মঙ্গলবার হঠাৎ করে শ্রমিকদের কর্মবিরতির ফলে বন্দরের চারটি বার্থে জাহাজ দাঁড়িয়ে রয়েছে। এটা জাতীয় ক্ষতি। দুই সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে। শুনেছি প্রভিডেন্ট ফান্ড সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হয়েছে।’’
বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, দুই সংস্থার সঙ্গে কথা বলেও মেটেনি সমস্যা। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে দুই বেসরকারি সংস্থার আধিকারিকদের ফোন করা হলে তাঁরা ফোন কেটে দেন। এ দিকে, মাঝে মধ্যেই বন্দরের শ্রমিক অসন্তোষ সামনে আসছে।
এ ব্যাপারে শ্রমিক সংগঠনগুলি কী বলছে? তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক তথা প্রাক্তন শ্রমিক নেতা শিবনাথ সরকার বলেন, ‘‘বন্দরে স্বার্থে বন্দর কর্তৃপক্ষ শ্রমিক এবং বেসরকারি সংস্থা কর্তৃপক্ষ ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করে সমস্যা সমাধান করা উচিত। তৃণমূল কখনও বন্ধ বা কর্মবিরতিকে সমর্থন করে না।’’ আর বিজেপি প্রভাবিত ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্যের সহ-সভাপতি প্রদীপ কুমার বিজলি বলেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থার উচিত ছিল শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার। তৃণমূল নেতৃত্বের শ্রমিকদের উপর কোনও রাশ নেই, এই কর্মবিরতি প্রমাণ করে দিল।’’
পথ দুর্ঘটনায় জখম ৩
শমসেরগঞ্জ: দাঁড়িয়ে থাকা ডাম্পারকে ধাক্কা মারল একটি বালি বোঝাই লরি। ঘটনায় গুরুতর জখম লরির চালক-সহ তিন জন। মঙ্গলবার সকালে শমসেরগঞ্জ থানার জয়কৃষ্ণপুর ঘোষপাড়া সংলগ্ন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ঘটনা। জখম তিন জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যদিও এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায়, তাঁকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনার জেরে সাময়িক যানজট হলেও, পুলিশের তৎপরতায় তা স্বাভাবিক হয়।
নিজস্ব সংবাদদাতা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy