তমলুক মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারদের আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার বিকেল থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন। ক্ষুদিরাম মোড়ে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। ছবি পার্থপ্রতিম দাস
সকালে কালো ‘ব্যাজ’ পরে প্রতিবাদ, তার পর সোমবার বিকেল থেকে কর্মবিরতিতে শামিল হলেন তমলুক মেডিক্যালের কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসকে খুন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের মতো এখানেও আন্দোলনে নেমেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তার জেরে যাতে হাসপাতালের পরিষেবায় বিঘ্ন না ঘটে, সে জন্য সিিনয়র চিকিৎসকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ দিন বিকেল থেকে কর্মবিরতিতে শামিল হন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সব রেসিডেন্ট ডাক্তার। ইন্ডোরে জুনিয়র (হাউস্টাফ) ও সিনিয়র (বন্ডেড ও নন-বন্ডেড) চিকিৎসকদের একাংশও রোগী দেখা বন্ধ করে দেন। সন্ধ্যায় মেডিক্যাল কলেজের সামনে থেকেই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এলাকা পরিক্রমা করেন প্রতিবাদী চিকিৎসকেরা।
রেসিডেন্ট ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে হাসপাতালে জরুরি বিভাগ ও ইন্ডোরে চিকিৎসা পরিষেবা সামাল দিতে বিভিন্ন বিভাগে সিনিয়র ও ইন্টার্নদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, হাসপাতালে রেসিডেন্ট (জুনিয়র ও সিনিয়র) ডাক্তারের সংখ্যা প্রায় ৫০জন। সিনিয়র ও ইন্টার্ন মিলিয়ে ৩৭ জন ডাক্তার রয়েছেন। রেসিডেন্ট ডাক্তারেরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করায় সিনিয়র ও ইন্টার্নরা জরুরি বিভাগ ও ইন্ডোরে রোগী চিকিৎসা পরিষেবা চালিয়ে যাবেন বলে ঠিক হয়েছে। হাসপাতালের বহির্বিভাগও খোলা থাকবে।
তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারি পড়ুয়া ও চিকিৎসকেরা গত শনিবার মোমবাতি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছিলেন। এর পরে রবিবার চিকিৎসকদের সংগঠন আইএমএ (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়শন )-এর তরফে প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। সোমবার দেশজুড়েই হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল ‘রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া’। সোমবার সকালে তমলুক মেডিক্যাল কলেজের আউটডোর ও ইন্ডোরে সমস্ত চিকিৎসকেরা ‘কালো ব্যাজ’ পরে রোগীদের চিকিৎসা করেছেন। তবে এ দিন বিকেল থেকেই অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। ইন্ডোরে চিকিৎসা পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের সিনিয়র ডাক্তার ও ইন্টার্নদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তমলুক মেডিক্যালের অধ্যক্ষ শর্মিলা মল্লিক বলেন, ‘চিকিৎসকেরা যাতে কর্মবিরতি পালন না করেন, সে জন্য বোঝানো হয়েছিল। তবে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা বজায় রাখতে বিভিন্ন বিভাগের সিনিয়র চিকিৎসক ও ইন্টার্নদের বলা হয়েছে। পরিষেবা যাতে কোনওভাবে ব্যহত না হয়, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।’’
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তি দাবিতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সংগঠন ‘মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার’-এর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির উদ্যোগে সোমবার বিকেলে তমলুক মেডিক্যাল কলেজের ক্যাম্পাস থেকে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে তমলুক হাসপাতাল মোড় পরিক্রমা করে। সংগঠনের জেলা সম্পাদিকা লীনা দাস বলেন,‘‘আরজি কর হাসপাতালের মতো কলকাতার নামী হাসপাতালে যে ভাবে চিকিৎসক খুন হয়েছেন, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যে ভাবে নির্মম অত্যাচার চালিয়ে চিকিৎসককে খুন করা হয়েছে তার রিপোর্ট জনসমক্ষে চলে এসেছে।কিন্তু দোষীদের এখনও শাস্তি হয়নি। সমস্ত দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে আমরা রাস্তায় নেমেছি।’’
লীনা আরও বলেন, ‘‘প্রত্যন্ত এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রাতের বেলায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ডিউটি করতে হয়। সেখানে কোনও নিরাপত্তা রক্ষী থাকেন না। আমরা যাতে নিরাপদে ডিউটি করতে পারি, তার জন্য উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।’’ সোমবার সন্ধ্যায় বিজেপির যুব মোর্চার উদ্যোগে নন্দকুমার বাজারে বিক্ষোভ মিছিল হয়। বিডিও অফিসের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে বাজার এলাকায় পরিক্রমা করে। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করের প্রতিবাদে এগরাতেও মোমবাতি মিছিল করেছে বিজেপি। সোমবার এগরা শহর বিজেপির উদ্যোগে দলীয় কার্যালয় থেকে মোমবাতি মিছিল শুরু হয়ে শহর পরিক্রমা করে। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন এগরার প্রাক্তন পুরপ্রধানের শঙ্কর বেরা-সহ বিজেপি পুরপ্রতিনিধি ও অন্য নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy