পুর এলাকার গম্ভীরনগরে এখন যাতায়াতে ভরসা ডিঙি। ছবি: কৌশিক সাঁতরা।
এ বার বিপুল পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। সময়ে না হলেও অসময়ে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। ভাঙবে কি তিন দশকের রেকর্ড, সব দিক দেখে শুরু হয়েছে চর্চা।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জেলায় সাধারণত বছরে গড়ে ১,৪০০ থেকে ১,৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। গত ৩২ বছরের তথ্যের নিরিখে জেলায় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১,৫২০ মিলিমিটার। গত ১০ বছরের তথ্যের নিরিখে জেলায় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১,৫২৬ মিলিমিটার। আর এ বছর ইতিমধ্যেই ১,৩৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে গিয়েছে।
গত শনিবার থেকে এ দফায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবারও জেলায় মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই ১,৩৫০ মিলিমিটারের মধ্যে গত শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২১৩ মিলিমিটার। সবে অক্টোবর মাস শুরু হয়েছে। এরপর নভেম্বর, ডিসেম্বর। একাধিক মহলের অনুমান, এ বার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হবে। এ ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ডও হতে পারে। জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, "নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও ভারী, কখনও মাঝারি। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।"
অনুমান, আর কয়েক দফায় ভারী বৃষ্টি হলে, এ বার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২ হাজার মিলিমিটার ছাড়াতে পারে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, গত দু'দশকের মধ্যে দু'বার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২ হাজার মিলিমিটার ছাড়িয়েছে। একবার ২০০৭ সালে। আরেকবার ২০২১ সালে। দু'বারই ঘাটাল-সহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা হয়েছিল। ২০২১ সালে জেলায় সব মিলিয়ে বৃষ্টি হয়েছিল ২,২৯৪ মিলিমিটার আর ২০০৭ সালে ২,১০৬ মিলিমিটার।
এই জেলায় সাধারণত জানুয়ারিতে ১৩ থেকে ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। ফেব্রুয়ারিতে ২০ থেকে ২৭ মিলিমিটার, মার্চে ২৯ থেকে ৩৩ মিলিমিটার, এপ্রিলে ৪৩ থেকে ৪৯ মিলিমিটার, মে মাসে ১১৬ থেকে ১৩৩ মিলিমিটার, জুনে ২৩১ থেকে ২৪৫ মিলিমিটার, জুলাইয়ে ৩২১ থেকে ৩৪৫ মিলিমিটার, অগস্টে ৩১৩ থেকে ৩১৯ মিলিমিটার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ থেকে ২৬৪ মিলিমিটার, অক্টোবরে ১২৩ থেকে ১২৮ মিলিমিটার, নভেম্বরে ৮ থেকে ২২ মিলিমিটার এবং ডিসেম্বরে ৫ থেকে ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। গত কয়েক বছরের মধ্যে ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ২০২১ সালে— ১২২ মিলিমিটার। আর নভেম্বরে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ২০১৯ সালে— ৫৪ মিলিমিটার। অক্টোবরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে ২০১৩ সালে— ৩৯৯ মিলিমিটার। চলতি বছর অক্টোবরে এই রেকর্ড ভাঙবে বলেই অনুমান একাধিক মহলের।
জেলায় বিপুল বৃষ্টিপাতে দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। ঘাটাল, সবংয়ের মতো জলভাসি এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছেন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার প্রমুখ। জল বেড়েছে কংসাবতী, শিলাবতী, সুবর্ণরেখা, রূপনারায়ণ, কেলেঘাই, কপালেশ্বরীর। একাধিক বাঁশের সাঁকো ভেসে গিয়েছে, ভেঙে গিয়েছে। নদী লাগোয়া কিছু এলাকাও ভাসছে। শতাধিক ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। জেলাশাসক মানছেন, "টানা বর্ষণে নদীর জল উপচে কিছু নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় যাবতীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy