Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
আবাস যোজনায় মৎস্যজীবীদের অনুদান
Homes

House: জট কাটিয়ে উপকূলে বাড়ি-অনুমতি

কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এপ্রিল মাসে ৩৬৭ জনকে বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর তৈরির জন্য রাজ্য সরকার অনুমোদন দিয়েছে।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মন্দারমণি শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২২ ০৬:০৫
Share: Save:

মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। শেষ সম্বল বলেত যা ছিল, বছর দুয়েক আগে কেড়ে নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় আমপান। তারপর গত বছর ইয়াসে একেবারে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছিল সাগর পাড়ে বসবাসকারী গরিব মৎস্যজীবীদের বাসস্থান। তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও সিআরজেড আইনের গেরোয় মন্দারমণি সংলগ্ন কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচটি মৌজায় আটকে ছিল সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পে আর্থিক অনুদান দেওয়ার প্রক্রিয়া। প্রায় এক দশক বাদে আইনি জট কাটিয়ে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত আবাস যোজনা প্রকল্পে ওই এলাকায় বাড়ি তৈরির জন্য গরিব মৎস্যজীবীদের আর্থিক অনুদান দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এপ্রিল মাসে ৩৬৭ জনকে বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর তৈরির জন্য রাজ্য সরকার অনুমোদন দিয়েছে। ইতিপূর্বে ওই সব প্রাপকদের প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১৪ সাল থেকে মন্দারমণি সংলগ্ন কালিন্দী পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মন্দারমণি, সিলামপুর, সোনামুই, দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর এবং দাদনপাত্রবাড় মৌজায় সবরকম নির্মাণ বন্ধ রয়েছে। সিআরজেড (কোস্টাল রেগুলেটরি জোন অ্যাক্ট) আইন জারি থাকায় মৎস্যজীবীদের বাড়ি তৈরির অনুদান দেওয়ার প্রক্রিয়াও বন্ধ ছিল। ফলে সমস্যা হচ্ছিল গরিব মৎস্যজীবীদের। দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের সভাপতি দেবাশিস শ্যামল বলেন, ‘‘তথ্য জানার অধিকার আইনের মাধ্যমে সর্বপ্রথম ব্লক প্রশাসন মারফত বিষয়টি আমরা জানতে পারি। সেখানে সিআরজেড আইনের কারণে মৎস্যজীবীদের বাড়ি তৈরির জন্য আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে না।’’ এরপরে মৎস্যজীবী সংগঠনগুলি আন্দোলনে নামে।

পূর্ব মেদিনীপুর মৎস্যজীবী ফোরামের সভাপতি তমাল তরু দাস মহাপাত্র বলেন,‘‘গরিব মৎস্যজীবীদের ভাঙাচোরা বাড়ির দুর্দশা ঘোচানোর দাবি জানিয়ে আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে চিঠি লিখেছি। তার ফলেই শুধুমাত্র গরিব মৎস্যজীবীদের জন্য আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর তৈরির অনুমোদন দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে ওই মৌজাগুলিতে অন্যান্য নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারি ভূমিকা কী হবে তা আমরা জানি না।’’

এদিকে অনুদান পেয়েও বাড়ি তৈরির কাজ এখনও শুরু করতে পারেননি বহু মৎস্যজীবী। স্থানীয় বাসিন্দা তরুলতা প্রধান, শ্রীকান্ত দাস বলেন, ‘‘বাড়ি তৈরির জন্য দীর্ঘদিন বাদে প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছি। তবে প্রস্তাবিত মেরিন ড্রাইভের রোডম্যাপ নিশ্চিত ভাবে জানতে পারছি না। তাই এখনই বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করতে পারিনি।’’ এ ব্যাপারে কালিন্দী পঞ্চায়েতের প্রধান স্বপন কুমার দাস বলেন, ‘‘জেলাশাসকের নির্দেশমত ৩৬৭ জনকে বাড়ি তৈরির আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। আপাতত তাঁদের বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে কোনও বিধি-নিষেধ থাকছে না।’’

পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, ‘‘স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং প্রশাসনের কাছ থেকে পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা জানতে পেরেছি গরিব মৎস্যজীবীরা সমুদ্র উপকূল থেকে অনেকটা দূরে বাড়ি তৈরি করছেন। তাই তাঁদের পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’’ সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি হলেও সিআরজেড আইন জারি থাকায় সেখানে হোটেল কিংবা অন্যান্য নির্মাণ নিয়ে প্রশাসন কী পদক্ষেপ করে সেটাই দেখার।

অন্য বিষয়গুলি:

Homes Coastal Area
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy