শেষ শ্রদ্ধা নির্মলচন্দ্রকে। নিজস্ব চিত্র
এলাকায় পরিচিত ছিলেন জনদরদি হিসাবে। শিক্ষা, এলাকার উন্নয়নেও তাঁর ভূমিকা ছিল। পাঁশকুড়ার সেই জাতীয় শিক্ষক নির্মলচন্দ্র মাইতির শেষযাত্রায় নামল জনতার ঢল। শ্যামসুন্দরপুর পাটনা গ্রামের বাসিন্দা নির্মলচন্দ্র ১৯৫৮ সালে শ্যামসুন্দরপুর পাটনা জুনিয়র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর প্রচেষ্টায় স্কুলটি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয় ১৯৭৪ সালে। ওই স্কুলের ভবন তৈরির সময় তাঁকে হাটে-বাজারে অন্য কাছে হাত পেতে টাকা চাইতেও দেখা গিয়েছে। ১৯৭২ সালে তৎকালীন সেচ মন্ত্রী এ বি এ গনিখান চৌধুরী এলাকা পরিদর্শনে আসেন। নির্মলচন্দ্রের অনুরোধে মন্ত্রী এসেছিলেন শ্যামসুন্দরপুর পাটনা বিদ্যালয়ে। স্কুলের এক শিক্ষকের স্বরচিত গানশুনে মুগ্ধ মন্ত্রী সে সময় একটি কাঁচা রাস্তা ভাল করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই মতো পাঁশকুড়া থেকে রাধাবল্লভপুর পর্যন্ত ১৮ কিমি কাঁচা রাস্তা মোরামে রূপান্তরিত হয়।
মাইশোরা এলাকায় একটি বালিকা বিদ্যালয়, দুটি ছোটদের স্কুল স্থাপন করেন নির্মলচন্দ্র। ২০১৩ সালে তাঁর প্রচেষ্টায় পথ চলা শুরু করে সিদ্ধিনাথ মহাবিদ্যালয়। পাশাপাশি পাতন্দা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ-সহ নানা ধরণের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয় মাইশোরায়।শিক্ষকতার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির রাজ্য সম্পাদক ও রাজ্য সভাপতি পদেও ছিলেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের সদস্যও হয়েছিলেন নির্মলচন্দ্র। মায়ের মৃত্যুর পর থেকে জুতো ব্যবহার করা ছেড়েছিলেন তিনি। ১৯৯৪ সালে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে জাতীয় পুরস্কার নেওয়ার সময়ও খালি পেয়ে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি ভবনে।
৮৬ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার মারা গিয়েছেন নির্মলচন্দ্র। বুধবার তাঁর দেহ নিয়ে আসা হয় এলাকায়। ‘খালিপদ’বাবুকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন বহু শুভানুধ্যায়ী। পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও প্রতিনিধি পাঠিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এসেছিলেন পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্র, সিপিআই নেতা চিত্তরঞ্জন দাসঠাকুর, অরুণ ঘোষাল, তৃনমূল নেতা আফজল শা প্রমুখ। শ্যামসুন্দরপুর পাটনা গ্রামে একটি কৃষি মহাবিদ্যালয় ও একটি প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয় গড়ার স্বপ্ন ছিল এই জাতীয় শিক্ষকের। নির্মল চন্দ্রের বড় ছেলে অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘বাবার শেষ ইচ্ছে পূরণের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy