ছাত্রাবাসের সামনে পুলিশের গাড়ি। ফাইল ছবি।
দু’পাঁচ বছর নয়। প্রায় ২৫ বছর ধরে শিক্ষাঙ্গনে জাঁকিয়ে বসে আছে পুলিশ! যে কারণে শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ নিয়ে তো প্রশ্ন উঠছেই। পাশাপাশি এক বিপুল পরিমাণ আর্থিক দায় বহন করতে হচ্ছে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে। টাকার অঙ্কে যা মাসিক চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজারের কাছাকাছি।
হলদিয়ার দুর্গাচক থানা এলাকার সুপার মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে হলদিয়া আইটিআই কলেজ। ১৯৬৯ সালে এই আইটিআই প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৮-’৯৯ সালে হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের কিছু পুরনো আবাসন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলে ওই আবাসনে থাকা রাজ্য পুলিশের অধীন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর একটি ব্যারাক, হলদিয়া ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয় ও উক্ত ট্রাফিক পুলিশের ব্যারাক অস্থায়ী ভাবে সরিয়ে আনা হয় আইটিআই কলেজের ছাত্রাবাসে। তখন থেকেই এই পরিস্থিতি। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, তিনতলা ওই ছাত্রাবাসের নীচে রয়েছে জেলা সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর ব্যারাক, দোতলায় রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয় এবং তিন তলায় রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের ব্যারাক।
কলেজ সূত্রে খবর, সবসময় পুলিশ কর্মী থাকায় অস্বস্তি বয়ে বেড়াতে হয় ছাত্র-ছাত্রীদের। কারণ আবাসন কলেজ চত্বরে। তাছাড়া পুলিশের কার্যালয় থাকায় সর্বক্ষণ গেট খোলা রাখতে হয়। পুলিশকর্মী ছাড়াও অবাঞ্ছিত মানুষের যাতায়াত লেগেই থাকে। কেউ কেউ বুঝতে না পেরে কলেজেই চলে আসেন। রয়েছে আর্থিক বোঝার চাপও। ব্যারাকে থাকা পুলিশ কর্মীদের জল, আলো ও পাখার যথেচ্ছ ব্যবহার ছাড়াও কেউ কেউ রান্নার জন্য হিটার ব্যবহার করায় বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হয়। যা কলেজ কর্তৃপক্ষই মিটিয়ে থাকেন। কলেজের যা পরিকাঠামো সেই অনুযায়ী মাসে এক থেকে এক লক্ষ দশ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসার কথা। কিন্তু বিল আসে দেড় লক্ষ টাকা। বছরে ছ'লাখ টাকার বোঝা বইতে হচ্ছে কলেজকে।
পুলিশকর্মীরা বিদ্যুতের অপচয় করছেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের এই অভিযোগ ঘিরে সম্প্রতি পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বচসাও হয়। পরে ঊর্ধ্বতন পুলিশ আধিকারিকদের সাথে কলেজের অধ্যক্ষের বৈঠকে সমস্যা মেটে। যদিও এই নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
আবাসনের এক পুলিশ কর্মী বলেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে থাকতে আমাদেরও খারাপ লাগে। কিন্তু কী করব?’’ জেলা পুলিশের ডিএসপি (ট্রাফিক) পবিত্র বারিক বলেন, ‘‘কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও চিঠি পাইনি। তবে কলেজ ক্যাম্পাসেই হলদিয়া ট্রাফিক অফিস আছে। রাজ্য সরকারের অনুমোদন পেলে অফিস অন্যত্র সরানো হবে।’’ ভারতীয় মজদুর সংঘের (বিএমএস) রাজ্যের সহ-সভাপতি প্রদীপ বিজলীর কটাক্ষ, ‘‘মাওবাদী দমনে জঙ্গলমহলের স্কুলগুলিতে যৌথ বাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাতে বলতেন। অথচ তাঁর আমলেই স্কুলে পুলিশ রয়েছে! উনি দেখতে পান না?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy