হাসপাতালে তাপস দণ্ডপাট। ছবি পরিবার সূত্রে প্রাপ্ত।
মাসে বেতন সাত থেকে দশ হাজার টাকা। এই টাকা রোজগার করতে গিয়েই মৃত্যু ফাঁদে পা দিচ্ছেন অনেকে।
পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের বিষ্টুপুরের বেসরকারি কোম্পানির হয়ে পাথর গুঁড়ো করার কাজে যোগ দিয়ে ফুসফুসের রোগ সিলিকোসিস এবং টিবি নিয়ে ফিরছেন নয়াগ্রাম, সাঁকরাইল, কেশিয়াড়ি ও দাঁতনের যুবকেরা। চাকরির অভাব, তাই পেটের টানে স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে পড়শি রাজ্যে পাথর ভাঙার কাজ নিচ্ছেন যুবকেরা।
ক্রাশার মেশিনে গুঁড়ো হওয়া পাথর নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে ঢুকছে। সংক্রমণ ছড়াচ্ছে ফুসফুসে। রোজগারের আশায় কাজে যাওয়া যুবকেরা কেউ ফিরছেন সিলিকোসিস, কেউ বা টিবি নিয়ে। স্থানীয়দের দাবি, সিলিকোসিসে আক্রান্ত হয়ে কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। জামশেদপুরে প্রায় এক বছর কাজ করে সিলিকোসিসে আক্রান্ত হয়ে ফিরেছিলেন কেশিয়াড়ি ব্লকের বাঘাস্তি পঞ্চায়েতের পলাশিয়া গ্রামের বুদ্ধদেব রানা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইলের বাসিন্দা গোবিন্দ জানা। তিনিও গিয়েছিলেন কাজ করতে। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তিনি এখন মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গোবিন্দ সিলিকোসিসে আক্রান্ত। গোবিন্দর স্ত্রীর কথায়, ‘‘ছেলেটাকে পড়াতেও পারলাম না। স্বামীকে মেদিনীপুর, খড়্গপুর, নয়াগ্রাম, কলকাতার পিজি, ওড়িশার কটকে চিকিৎসা করিয়েছি। অনেক টাকা দেনা হয়ে গিয়েছে।’’ নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার দেবাশিস মাহাতো বলেন, ‘‘দু’জন ভর্তি হয়েছিলেন। তাপস দণ্ডপাট এবং গোবিন্দ জানা। দু’জনেরই সিলিকোসিস এবং টিবি হয়েছে।’’ নয়াগ্রামের রাইপড়িয়ার যুবক মিলন পাত্র সিলিকোসিসে আক্রান্ত। তিনি বলছিলেন, ‘‘জামশেদপুরের বিষ্ণুপুরে একটি কোম্পানিতে পাথর ভাঙা ও গুঁড়ো করার কাজ করতাম। গত বছর চলে আসি। আমারও সিলিকোসিস ধরা পড়ে।’’ সমাজকর্মী ঝর্না আচার্য বলেন, ‘‘সবাই চিকিৎসায় ব্যস্ত। বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরছেন। সবাইকে একত্রিত করে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করার চেষ্টা চালাচ্ছি। রাজ্য সরকারের কাছেও আবেদন জানাব।’’ চেষ্টা করেও ওই পাথর ভাঙার সংস্থার কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
পাথর খাদানে কাজ করতে গিয়ে এর আগে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, মিনাখাঁ এলাকারও অনেকে সিলিকোসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং হাইকোর্টের ক্ষতিপূরণ নির্দেশের পরেও রাজ্য সরকার সঠিক পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy