শববাহী গাড়ি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
পুলিশি নিরাপত্তায় বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হল নাবালক সৌরভ সেনাপতির দেহ। নতুন করে অশান্তি এড়াতে গভীর রাতেই হল শেষকৃত্য। দ্রুত সেই কাজ সম্পন্ন করতে পুলিশ কর্মীই পৌঁছে দিলেন জ্বালানীর কাঠ।
গত দু’দিন ধরে চাপা উত্তেজনা রয়েছে পটাশপুরের নৈপুর গ্রামে। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা বছর বারোর সৌরভের থলে বন্দি দেহ মিলেছিল পড়শি জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের এক ধান খেতে। ঘটনায় পরেই সৌরভদের প্রতিবেশী এক দম্পতির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে সরব হয় তার পরিবার এবং এলাকাবাসী। ভাঙচুর করা হয় ওই দম্পতির বাড়ি, গাড়ি। হয় রাস্তা অবরোধও। পরে পুলিশ ওই দম্পতি অভিজিৎ রায় ও অম্বিকা রায়কে গ্রেফতার করে। পুলিশি জেরায় তারা খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি।
অভিযুক্তরা গ্রেফতার পরে এলাকায় উত্তজনা কিছুটা থিতিয়ে গেলেও ময়নাতদন্তের পরে সৌরভের দেহ বাড়িতে এলে ফের তা চাগাড় দিয়ে ওঠার আশঙ্কা ছিল পুলিশের। রবিবার সকালে খড়্গপুর হাসপাতালে সৌরভের দেহের ময়নাতদন্ত হয়। দেহ ওই দিন সন্ধ্যায় নৈপুরের বাড়িতে আসার কথা ছিল। সেই মতো পুলিশ এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ায়। তা সত্ত্বেও সন্ধ্যায় এলাকায় প্রচুর মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। তারা দেহ রাস্তায় রেখে প্রতিবাদ করতে পারে, এই আশঙ্কায় শেষ পর্যন্ত এগরার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মহম্মদ বদিউজ্জামানের নেতৃত্বে র্যাফ এবং কমব্যাট ফোর্স নামানো হয়। নৈপুর এবং লক্ষ্মীবাজার এলাকায় পুলিশ ঘিরে ফেলে।
রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ শববাহী গাড়ি নৈপুরে পৌঁছয়। গাড়ির আশপাশের বাইরের কোনও ব্যক্তিকে ভিড়তে দেয়নি পুলিশ। পুলিশি ঘেরাটোপের মধ্যে বাড়িতে সৌরভের দেহ পৌঁছে দেওয়া হয়। সেই মুহূর্তে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকায় আরও এক দফা উত্তেজনা ছড়ায়। কিশোরের পরিবারের লোকেরা দেহ শ্মশানে নিয়ে যেতে অস্বীকার করে। শেষে পুলিশ পরিবারকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। রাত দেড়টা নাগাদ দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। সে সময় অবশ্য ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর ভিড় ছিল না। পরিবারের জনাছয়েক সদস্য শ্মশানে ছিলেন। দ্রুত শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে হাত লাগায় পুলিশও। তারা জ্বালানী কাঠ শ্মশানে পৌঁছে দেয়। পুলিশি নিরাপত্তায় রাত আড়াইটা নাগাদ শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
সোমবার নতুন করে যাতে অশান্তি না হয়, সে জন্য এলাকায় অস্থায়ী পুলিশ শিবির করা হয়েছে। এ দিন অবশ্য এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। সৌরভের দেহ লোপাটের সময় গাড়ির যে চালক ছিলেন, তাঁর এখনও পর্যন্ত পুলিশ কোনও সন্ধান পায়নি। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ তাঁর খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করছে। এসডিপিও বলেন, ‘‘কিশোরের শেষকৃত্য নির্বিঘ্নে হয়েছে। খুনে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কি না, তার তদন্ত চলছে। এলাকায় অস্থায়ী পুলিশ শিবির রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy