সাংবাদিক বৈঠকে জেলমুক্ত কুড়মি নেতারা। শনিবার ঝাড়গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
যে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে কুড়মি নির্দলরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, সেখানে বোর্ড গড়ে এলাকাবাসীর সেবা করবেন তাঁরা। কিন্তু যে সব পঞ্চায়েতে টাই বা ত্রিশঙ্কু হয়েছে, সেখানে নির্বাচিত কুড়মিরা কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করবেন না। শনিবার ঝাড়গ্রামে সংবাদিক বৈঠক করে এমনই জানালেন কুড়মি সমাজ (পশ্চিমবঙ্গ)-এর সভাপতি রাজেশ মাহাতো। রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি রাজেশদের বার্তা, তারা প্রকৃতই জনজাতি, মূলবাসীর ভাল চাইলে নির্দল বোর্ডকে ক্ষমতা ছেড়ে রাজনৈতিক উদারতার পরিচয় দিক।
রাজেশের কথায়, ‘‘আমরা বোর্ড গঠনে কোনও রাজনৈতিক দলকেই সমর্থন করব না। বিরোধিতাও করব না। সব রাজনৈতিক দলের থেকে সমদূরত্ব বজায়র সিদ্ধান্ত পূর্বঘোষিত।’’ জামিনে জেলমুক্ত হয়ে এই প্রথম রাজেশ-সহ কুড়মি আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা সংবাদমাধ্যমের সামনে এলেন। এ দিন ঝাড়গ্রাম শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাস সংলগ্ন একটি অতিথিশালায় সাংবাদিক বৈঠকে রাজেশের পাশে ছিলেন আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজের নেতা অনুপ মাহাতো, আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের নেতা শিবাজী মাহাতো, কুড়মি সমাজের (পশ্চিমবঙ্গ) আহ্বায়ক তথা ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা কৌশিক মাহাতো। এ ছাড়াও রাকেশ মাহাতো, জয় মাহাতোর মতো জেলমুক্ত নেতারাও এসেছিলেন।
রাজেশ মনে করিয়ে দেন, ভোট শেষে রাজনৈতিক দলগুলি যোগদান মেলা করছে। বিজয়ী নির্দলদের প্রতি তাই বার্তা, ‘‘মানুষের বিশ্বাস, ভালবাসা কোনও মূল্যে বিক্রি করবেন না।’’ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচিও অবিলম্বে শুরু হবে বলে জানানো হয়। কুড়মিদের জনজাতি তালিকাভুক্তির দাবির স্বপক্ষে রাজ্য সরকারের কমেন্ট, জাস্টিফিকেশনের দাবিতে এবং করম, বাঁদনা, মকর পরবে পূর্ণ দিবস ছুটি, কুড়মালি ভাষা, সংস্কৃতি ও সারনা ধর্মের স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন চলবে। অনুপের কথায়, ‘‘ঐক্যবদ্ধভাবে দাবি আদায়ের লড়াই করব।’’ নিচুতলার কর্মীদের উদ্দেশে কুড়মি নেতাদের আবেদন, ‘‘সমাজ নেতৃত্বের সুনির্দিষ্ট নির্দেশ ছাড়া কোনও কর্মসূচি বা আন্দোলন করবেন না।’’ রাজেশ জানান, জঙ্গলমহলের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা হবে। ভোটে জেতা নির্দল কুড়মিদের নিয়ে সমাজের বিজয় মিছিলও স্থগিত থাকছে।
মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলায় তাঁদের গ্রেফতার ও ভোটের ঠিক আগে মুক্তির পিছনে কি কোনও নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে? প্রসঙ্গ এড়িয়ে রাজেশের জবাব, ‘‘ঘটনার নিন্দা করে আমরা পূর্ণাঙ্গ বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছিলাম। আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি।’’ পেশায় স্কুল শিক্ষক রাজেশ জানান, তাঁর বেতন বন্ধ। খড়্গপুরের স্কুল থেকে কোচবিহারে বদলি করা হয়েছে। সুরাহা না হলে তিনি আইনের দ্বারস্থ হবেন বলে জানান।
এ দিন শিবাজী বলেন, ‘‘চাপা সন্ত্রাস সত্ত্বেও কুড়মি নির্দল প্রার্থীদের জয়লাভ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।’’ উল্লেখ্য, ঝাড়গ্রাম জেলায় মাত্র দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছেন কুড়মি প্রার্থীরা। আর একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে কুড়মিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও বোর্ড গড়তে আরও একজনের সমর্থন চাই। জেলার ১৩টি ত্রিশঙ্কু গ্রাম পঞ্চায়েতে কুড়মি প্রার্থীরা জিতেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy