সেই বৈদ্যুতিক চুল্লি। পাশেই রয়েছে কাঠের চুল্লি। নিজস্ব চিত্র
এক বছরেরও আগে তালতলা শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লি-প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছিল ঝাড়গ্রাম পুরসভা। তবে সেটি চালু হয়নি এখনও। তবে সেই না জ্বলা চুল্লিরই বিল বকেয়া থাকায় পুরসভার কাছে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নোটিস পাঠিয়েছে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা। পুরভোটের আগে এমন ঘটনায় অস্বস্তি শুরু হয়েছে পুরসভার অন্দরে। পুরসভায় এখন নির্বাচিত পুরবোর্ড নেই। প্রশাসক রয়েছেন। পুরভোটের আগে এই বিল মিটিয়ে চুল্লিটি কীভাবে চালানো যাবে তা ভেবে পাচ্ছে না পুর-কর্তৃপক্ষ।
ঝাড়গ্রাম পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈতরণী প্রকল্পে প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করে পূর্ত দফতর বৈদ্যুতিক চুল্লিটি তৈরি করেছিল। ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর সেটি পুরসভাকে হস্তান্তর করে তারা। সেই চুল্লি একদিনও না চালিয়েও এক বছরে বিদ্যুতের ‘ফিক্সড বিল’ এসেছে ৩ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা। সেই বিল এখনও মেটানো সম্ভব হয়নি। ফলে, চুল্লি চালানোর ঝুঁকিও নেওয়া যাচ্ছে না। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, ওই বৈদ্যুতিক চুল্লি চালাতে গেলে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হয় তাতে দৈনিক চুল্লিতে অন্তত ৮টি শবদাহ করা প্রয়োজন। কিন্তু তালতলা শ্মশানে রোজ শব আসে না। এছাড়া তালতলা শ্মশানেই সাধারণ কাঠের চুল্লি রয়েছে। শহরে রয়েছে আরও শ্মশান। পুরসভার এক আধিকারিকের ক্ষোভ, প্রকল্পের সারবত্তা না দেখেই সেটি বাস্তবায়িত করা হয়েছে।
চুল্লি না জ্বললেও বিল এল কেন? বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈদ্যুতিক চুল্লির সংযোগটি ‘বাল্ক কানেকশন’। এক্ষেত্রে চুল্লি না চালালেও প্রতি মাসে নির্দিষ্ট অঙ্কের বিল দিতে হবে। তাই ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে গত বছর অক্টোবর পর্যন্ত এক বছরের ৩ লক্ষ ৭৪ হাজার ৮২৬ টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। গত নভেম্বরে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা সেটা জানিয়ে নোটিস পাঠিয়েছে। বিল জমা না দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে সেখানে। বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার পশ্চিম মেদিনীপুরের রিজিওন্যাল ম্যানেজার দিলীপ কুমার বাছার বলেন, ‘‘চুল্লিটি ৫০ কেভি-র ঊর্ধ্বে বাল্ক কানেকশন হওয়ায় প্রতি মাসে নির্দিষ্ট হারে বিল দিতেই হবে। পুরসভা এক বছরের বিল মেটায়নি। ওদের সিকিউরিটি ডিপোজিটের তুলনায় বকেয়া বিল বেশি হয়ে গিয়েছে। তাই আমরা শীঘ্রই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেব।’’
পুরভোটের আগে এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়তে না বিজেপি। দলের ঝাড়গ্রাম নগর মণ্ডলের সভাপতি নন্দন ঠাকুর বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া এলাকা। বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দাহ করার খরচ অনেকের পক্ষেই বহন করা সম্ভব নয়। এটা ঠিকাদারকে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি আর কাটমানি খাওয়ার রাজনীতি। ওই টাকায় শহরের সব শ্মশানের পরিকাঠামো উন্নয়ন করা যেত।’’
পুর-প্রশাসক সুবর্ণ রায় বলেন, ‘‘বৈদ্যুতিক চুল্লিটি চালানোর জন্য পুর-প্রশাসনিক বোর্ডের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বকেয়া বিল মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy