চলছে ঝড়ের সচেতনতা প্রচার। তার মধ্যেই শুক্রবার দিঘায় পর্যটকের আনাগোনা। ছবি: রঞ্জন পাল।
আমপান, ইয়াস—জোড়া ধাক্কা সামলে সবেমাত্র ছন্দে ফিরতে শুরু করেছিল সৈকত শহর। আশা দেখছিলেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ডিসেম্বরের গোড়ায় পর্যটনের মরসুম শুরু হতেই বিধি বাম। ফের ঘূর্ণিঝড়ের অশনি সংকেত। অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশা উপকূলে ধেয়ে আসছে ‘জ়ওয়াদ’। এর ফলে শনিবার থেকে জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে পূর্বাভাস। তাতে সপ্তাহান্তের ব্যবসা মার খাওয়ার আশঙ্কা করছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।
‘জ়ওয়াদ’-এর সতর্কতায় শুক্রবার থেকেই দিঘায় পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মাইক প্রচার শুরু করেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। সোমবার পর্যন্ত এই নির্দেশিকা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। তবে এদিন থেকে সৈকত শহরে ভালই ভিড় দেখা গিয়েছে। সতর্কবার্তা সত্ত্বেও শীতের মিঠে রোদে অপেক্ষাকৃত শান্ত সমুদ্রে স্নান করার জন্য ভিড় করেছিলেন পর্যটকেরা। হোটেল মালিকদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, প্রশাসনের সতর্কবার্তা মেনে সৈকত শহর ছেড়ে অনেক পর্যটককে বাড়ি ফিরছেন। অনেকে অগ্রিম বুকিংও বাতিল করছেন। নদিয়ার বগুলা থেকে শনিবার আসার কথা ছিল তমাল বিশ্বাস-সহ কয়েকজনের। তমালের দাবি, ‘‘দিঘায় সমুদ্রে নামতে নিষেধ করেছে জানাতে পেরে হোটেলের বুকিং বাতিল করেছি। আগামী সপ্তাহে আবহাওয়া ঠিক হলে বেড়াতে যাব।’’
প্রথমে আমপান, তার পর গত ২৬ মে ইয়াসে তছনছ হয়েছিল দিঘা, মন্দারমণি। সেই ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছিল পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী পর্যটন কেন্দ্রগুলি। ডিসেম্বরের শুরুতে পর্যটনের মরসুমে তাই ভাল ব্যবসার আশায় ছিলেন হোটেল মালিক থেকে স্থানীয় দোকানদারেরা। কিন্তু দুর্যোগের পূর্বাভাস সেই আশায় জল ঢেলেছে। দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যেহেতু সোমবার পর্যন্ত সমুদ্রে স্নান করতে নামা যাবে না, তাই পর্যটকেরা কেউই দিঘায় আসতে চাইছেন না। একের পর এক বাধা পেরিয়ে শীতের মরসুমে চলতি সপ্তাহের শেষ থেকে পর্যটকদের ভিড় বাড়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সব আশা চুরমার করে দিল।’’
মন্দারমণি, তাজপুরেও একই পরিস্থিতি। সেখানকার হোটেলেও বহু পর্যটক শনিবার এবং রবিবার ছুটি কাটানোর জন্য হোটেল বুকিং করেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করেছেন। এদিন সকালে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দুটি দল পৌঁছয় দিঘায়। তারা মাইক নিয়ে দিঘার সৈকত সহ পাশ্ববর্তী এলাকায় গিয়ে গ্রামবাসীদের ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সচেতন করেন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, ‘‘যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় স্থানীয়দের সহযোগিতা চাই। তাই তাঁরা যাতে অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানতা অবলম্বন করেন সে জন্য আমরা প্রচার করে সচেতন করছি।’’
তবে ‘জ়ওয়াদ’ মোকাবিলায় যাবতীয় সতর্কতা নেওয়া হলেও মরসুমি পর্যটনের শুরুতেই এমন ধাক্কায় মাথায় হাত পড়েছে সৈকত শহরের হোটেল মালিক থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy