Advertisement
E-Paper

অনুমোদনের আগে গেরুয়া মনোনয়ন

সোমবার জেলার সমস্ত বিডিও এবং এসডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিজেপি ও বামফ্রন্ট এবং বিরোধী দলের প্রার্থীরা।

সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ভিড় সামাল দিচ্ছেন বিজেপি বিধায়ক অশোক ডিন্ডা। নাইকুড়িতে ব্লক অফিস চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ভিড় সামাল দিচ্ছেন বিজেপি বিধায়ক অশোক ডিন্ডা। নাইকুড়িতে ব্লক অফিস চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩ ০৮:১৪
Share
Save

পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী পদের মনোনয়নপত্র জমা শুরু হয়েছে শুক্রবার। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে পূর্ব মেদিনীপুরে এগিয়ে বিরোধীদলগুলি। কিন্তু বিজেপির জেলা পরিষদের মনোনয়ন জমা দেওয়া ঘিরে বিতর্ক দেখা গিয়েছে। দাবি, রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদনের আগেই সোমবার বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা এলাকায় জেলা পরিষদের ছ’টি আসনে প্রার্থী পদে মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার জেলার সমস্ত বিডিও এবং এসডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিজেপি ও বামফ্রন্ট এবং বিরোধী দলের প্রার্থীরা। গত শুক্রবার থেকে বিজেপি জেলার সমস্ত ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি আসনগুলিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও এবারের ৭০টি আসনের জেলা পরিষদ প্রার্থীপদে অধিকাংশ আসনে তারা এখনও মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি। দলীয় সূত্রে খবর, জেলা বিজেপির তরফে জেলা পরিষদ আসনের প্রস্তাবিত প্রার্থীদের তালিকা রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। ওই প্রার্থীদের তালিকা রাজ্য নেতৃত্ব এখনও অনুমোদন করেনি। কিন্তু অনুমোদন না আসার পরেও তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের একটি ও পাঁশকুড়া ব্লকের তিনটি, মহিষাদল ব্লকের দু’টি জেলাপরিষদ আসনে প্রার্থী পদে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন বিজেপির প্রার্থীরা।

শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের একটি জেলা পরিষদ আসনে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে সোমবার তমলুকের মহকুমাশাসকের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বামদেব গুছাইত। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বামদেব আগে শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ছিলেন। এদিন তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ছিলেন বিজেপি তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের কয়েকজন নেতৃত্ব। এ দিন হলদিয়া মহকুমাশাসকের অফিসে মহিষাদল ব্লকের দু’টি জেলা পরিষদের আসনে প্রার্থীপদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন শুভ্রা দাস ও সত্যেন্দ্রনাথ মণ্ডল। কিন্তু জেলা পরিষদের প্রার্থী তালিকা রাজ্য নেতৃত্ব অনুমোদনের আগে কীভাবে জেলা পরিষদের আসনে প্রার্থী পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে।

এ ব্যাপারে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন বলছেন, ‘‘জেলা পরিষদ আসনের প্রার্থীপদে যাঁদের নাম প্রস্তাব করে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছে, তার মধ্যে এঁদের নাম রয়েছে। রাজ্য নেতৃত্ব অনুমোদন দিয়ে দেবেন। দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েই এদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।’’ তবে কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় জেলা পরিষদের কোনও আসনে এখনও বিজেপির প্রার্থী পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে দলের ওই জেলার নেতৃত্ব।

উল্লেখ্য, জেলাপরিষদের আসনগুলিতে বিজেপির প্রার্থী তালিকা নিয়েও রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল রয়েছে। কারণ, ২০২৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৬০টি আসন বিশিষ্ট জেলা পরিষদের সমস্ত আসনেই জিতেছিল তৃণমূল। তবে বিরোধী শূন্য জেলা পরিষদে ফাটল ধরে গত ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগেই। তৃণমূলে ছেড়ে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে তাঁর অনুগামী হিসাবে পরিচিত জেলা পরিষদে তৎকালীন মৎস্য-প্রাণী সম্পদ কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারী, সদস্য সোমনাথ ভূঁইয়া ও মানব পড়ুয়া, চন্দ্রশেখর মণ্ডলের মতো ১২ বিজেপিতে যান। পরে মানব-সহ পাঁচ জন জেলাপরিষদ সদস্য ফের তৃণমূলে ফিরে যান। এমন পরিস্থিতিতে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া জেলা পরিষদের সদস্যরা এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রার্থী হচ্ছেন কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল রয়েছে।

অন্যদিকে, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাঁশকুড়া ব্লকে পঞ্চায়েতের ২০৮টি আসনের মধ্যে ৯৯টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় তৃণমূল। বিরোধীরা প্রার্থী দিতে না পারায় এখানে পঞ্চায়েত সমিতির ৪০টি আসনের মধ্যে ১৯ টিতে সেবার ভোটই হয়নি। জেলা পরিষদের ৩টি আসনের মধ্যে একটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় ছিনিয়ে নেয় ঘাসফুল শিবির। শাসক দলের বিরুদ্ধে ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ এনেছিল বিরোধীরা। তবে এবারের চিত্রটা সম্পূর্ণ আলাদা। পাঁশকুড়া ব্লকে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছে বিরোধী বাম-কংগ্রেস জোট এবং বিজেপি। কোলাঘাট ব্লক পাঁশকুড়া পূর্ব বিধানসভার অন্তর্গত। কোলাঘাট ব্লকেও বাম-কংগ্রেস জোট এবং বিজেপি ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। কোথাও কোনও গোলমালের অভিযোগ

শোনা যায়নি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP East Midnapore ashok dinda

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}