প্রতীকী ছবি।
কোনটা আসল কোনটা নকল—সেই নিয়ে জোর চর্চা এখন জামবনির কেন্দডাংরি পঞ্চায়েতে।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ওই পঞ্চায়েতের ৯টি আসনের মধ্যে ৩টি আসনে জয়ী হন বিজেপি-র প্রার্থীরা। ২টি আসনে জেতে তৃণমূল। বাকি ৪টি আসনে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী সমর্থিত নির্দলরা জয়ী হন। ওই পঞ্চায়েতের প্রধান পদটি তফসিলি জাতির মহিলা প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত ছিল। তাই বিজেপি-র নির্বাচিত সদস্য সুচিত্রা সিংহ তপসিলি জাতির হওয়ায় নির্দলদের সমর্থন পেলে বিজেপি বোর্ড গঠন করতে পারত। সেটা হয়নি কারণ বিজেপি-র টিকিটে নির্বাচিত সবিতা খিলাড়ির সঙ্গে তৃণমূলের সমঝোতা হয়ে যায়। তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা প্রশাসনিক দফতরে আবেদন জানিয়ে সবিতার তফসিলি জাতিগত শংসাপত্র করিয়ে দেন। সবিতা তৃণমূল ও নির্দলদের সমর্থনে প্রধান হয়ে যান। পরে তৃণমূলে যোগদানও করেন। তারপরেই সবিতার জাতিগত শংসাপত্রকে জাল বলে অভিযোগ জমা পড়েছে মহকুমা শাসকের দফতরে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধানকে শো-কজও করেছেন মহকুমাশাসক। স্থানীয় সূত্রে খবর, সবিতা ফের গেরুয়া শিবিরের দিকে ঝুঁকেছেন বলে সন্দেহ করছে শাসক দল। তারপরেই এই ঘটনা। গত ২৮ অগস্ট সবিতাকে পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে মহকুমাশাসকের শো-কজের চিঠি ধরান জামবনির যুগ্ম বিডিও।
মহকুমাশাসক সুবর্ণ রায় বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রধানকে শো-কজ করা হয়েছে। তাঁর জবাব পেলে বিষয়টি শুনানি করে পদক্ষেপ করা হবে।’’
সবিতার অভিযোগ, তাঁর জাতিগত শংসাপত্রটি তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের কাছেই রয়েছে। প্রধান নির্বাচিত হওয়ার পরে সেটি তাঁকে দেওয়া হয়নি। তাঁর দাবি, ‘‘প্রশাসন সব দিক তদন্ত করে দেখুক। শংসাপত্র আমার কাছে নেই। আর বোর্ড গঠনের সভায় প্রশাসনের আধিকারিকের উপস্থিতিতেই শংসাপত্র দেখে আমাকে প্রধান নির্বাচিত করা হয়েছিল। তাই প্রশাসনও দায় এড়াতে পারে না।’’ তাঁর অভিযোগ, তিনি তৃণমূলের নেতাদের দাবি মতো কাজ করছেন না বলেই তাঁকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ঝাড়গ্রামের গড়শালবনিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সভায় সবিতা আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দেন। গত কয়েক মাসে উন্নয়নের কাজ নিয়ে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মন কষাকষি শুরু হয়েছে সবিতার। স্থানীয় সূত্রের খবর, সবিতা ফের গেরুয়া শিবিরের দিকে ঝুঁকেছেন বলে সন্দেহ করছে শাসকদল। পঞ্চায়েতের আইন অনুযায়ী প্রধান নির্বাচিত হওয়ার আড়াই বছরের মধ্যে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যায় না। তাই জাতিগত শংসাপত্র বাতিল করে সবিতাকে প্রধান পদ থেকে সরানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলে সবিতার অভিযোগ।
জামবনি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি নিশীথ মাহাতো অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘পরিস্থিতি অনুযায়ী সবিতা প্রধান হয়েছিলেন। জাতিগত শংসাপত্র তাঁর নামে তৈরি হয়েছিল। সুতরাং কীভাবে সেটা হল, কেন হল এ প্রশ্নের জবাব তিনিই ভাল দিতে পারবেন।’’ সবিতা তো শাসক দলের বিরুদ্ধেই নালিশ করছেন? একটি ভিডিওতে সবিতার সঙ্গে নিশীথকে বৈঠক করতেও দেখা যাচ্ছে? সদুত্তর দিতে পারেননি নিশীথ।
জামবনির বিডিও সৈকত দে বলেন, ‘‘সবিতাদেবী সাধারণ আসনে জয়ী হন বোর্ড গঠনের সভায় প্রধান পদে ভোটাভুটির সময় তিনি জাতিগত শংসাপত্র দাখিল করেন। তাঁর জাতিগত শংসাপত্রটি ভুয়ো বলে মহকুমাশাসকের দফতরে অভিযোগ জমা পড়েছে। মহকুমাশাসক সবিতাদেবীকে শো-কজ করেছেন। আমরা সেই নোটিস ওনাকে ধরিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy