—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ভরা শ্রাবণেও তেমন জোরাল বৃষ্টির দেখা ছিল না। তবে ঘূর্ণাবর্তের জেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঝেঁপে বৃষ্টি নেমেছে জেলা জুড়ে। টানা হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের জেরে ব্যহত হল স্বাভাবিক জনজীবন।
আবহাওয়া দফতর বুধবার বিকেল থেকে শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছিল। সেই পূর্বভাস মতো এ দিন বৃষ্টি শুরু হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে রাস্তায় লোকজনের সংখ্যা কম ছিল কম। জাতীয় ও রাজ্য সড়কগুলিতে বাস ও অন্য গাড়ি চলাচলও তেমন ছিল না। এতে স্কুল ও অফিস সময়ে সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই। তমলুক শহরের অন্যতম জনবহুল তথা ব্যস্ত হাসপাতাল মোড়, শঙ্করআড়া ও মানিকতলা মোড় এলাকা এ দিন প্রায় শুনশান ছিল।
জেলার বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা ও সেচ দফতর সূত্রের খবর, বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলায় গড়ে ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। জেলার যে সব এলাকাগুলিতে বৃষ্টিতে জলমগ্ন হওয়ার সম্ভবনা থাকে, সেই সব এলাকায় নজরদারির জন্য সব ব্লক প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে। জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দফতরের আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, ‘‘পূর্বাভাস মতোই জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। জলমগ্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এমন এলাকায় বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ব্লকে উদ্ধারকারীরা প্রস্তুতি রয়েছেন। টানা বৃষ্টিতে স্বাভাবিক জনজীবন কিছুটা ব্যহত হয়েছে ঠিকই। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত জেলায় ক্ষয়ক্ষতির কোনও রিপোর্ট আসেনি। পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে।’’
সেচ দফতরের তরফে জেলার বিভিন্ন নদী বাঁধ-সহ সমুদ্র উপকূল এলাকার বাঁধে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেচ দফতরের আধিকারিক ও কর্মীরা বাঁধের বিপজ্জনক জায়গাগুলিতে নিয়মিত পরিদর্শন করছেন। এদিন সকাল থেকেই নন্দকুমার ও মহিষাদল ব্লকের সংলগ্ন দনিপুর এলাকায় রূপনারায়ণ নদের বাঁধ পরিদর্শনে যায় সেচ দফতরের দল। ময়না ব্লকে কাঁসাই ও চণ্ডীয়া নদীর বাঁধেও নজরদারি চালানো হচ্ছে। নন্দকুমার বাজার সংলগ্ন কিছু এলাকা জলমগ্ন এ দিন হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয়েরা নিজেরাই পাম্প বসিয়ে জল নিকাশির ব্যবস্থা করেছেন।
কাঁসাই, চণ্ডীয়া ও কেলেঘাই নদীবেষ্টিত ময়না ব্লক বন্যাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। এলাকায় বেহাল নিকাশির জেরে ২০২২ সালে বর্ষায় ব্লকের অধিকাংশ গ্রামের রাস্তাঘাট, ভেড়ি, জমি জলমগ্ন হয়। সে সময় নদী সংলগ্ন এলাকায় বড় পাম্প বসিয়ে জল তুলে নদীতে ফেলা হয়েছিল। গত বছর ময়না পঞ্চায়েত সমিতি সর্বদলীয় বৈঠক করে ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় স্থায়ী ভাবে পাম্প হাউস তৈরি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সে জন্য ব্লকের মাছ চাষিদের কাছ থেকে জলাশয়ের কাঠা পিছু ১০টাকা করে আদায়ের পরিকল্পনা হয়। কিন্তু চলতি বছরেও সেই পাম্প বসানো হয়নি বলে অভিযোগ।
এ ব্যাপারে ময়নার বিজেপি নেতা তথা দলের কিসান মোর্চার জেলা সহ-সভাপতি সন্দীপ সামন্ত বলেন, ‘‘প্রতি বছর বর্ষা এলেই তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি জল নিকাশির জন্য পাম্প বসানোর আশ্বাস দিয়ে থাকে। তারপর আর কিছুই হয় না।’’ যদিও ময়না পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ শাহাজাহান আলি বলছেন, ‘‘সর্বদলীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাছ চাষিদের কাছ থেকে যে টাকা আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার অধিকাংশটাই মেলেনি। তাই পাম্প বসানো যায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy