সার কারখানার আবাসন। নিজস্ব চিত্র
ভগ্নস্তূপে পরিণত হলদিয়ায় সরকারি সার কারখানার আবাসন। আর এই আবাসনকে ঘিরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিল্পশহরের বাসিন্দারা।
সোমবার বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সম্পত্তি অব্যবহৃত অবস্থায় ফেলে রাখা যাবে না। অথচ শিল্পশহর হলদিয়ার বুকে প্রায় ১৭ বছর ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে সরকারি সার কারখানার আবাসন। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় আবাসনের বেশিরভাগ অংশই আজ ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে হলদিয়া রিফাইনারি সংলগ্ন এলাকায় স্থাপিত হয় হিন্দুস্তান ফার্টিলাইজার কর্পোরেশন লিমিটেড নামে একটি সার কারখানা। ১৯৮৪ সালে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়।পাশাপাশি হলদিয়া টাউনশিপের সেক্টর ৮ এবং ১৩তে গড়ে ওঠে কর্মী-আধিকারিকদের আবাসন। কিন্তু সার কারখানাটি কোনওদিনই বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করতে পারেনি। ২০০৩ সালে মুখ থুবড়ে পড়ে কারখানা। কারখানার প্রায় ১৫০০ কর্মীকে স্বেচ্ছা অবসর নিতে বাধ্য করা হয়। স্বেচ্ছা অবসর নেওয়ার পরেও কিছু কর্মী সংস্থার অফিসে টাকা জমা দিয়ে আবাসন ভাড়া নেন। ২০০৩ সাল থেকে অব্যবহৃত অবস্থায় এই সংস্থার প্রায় সাড়ে সাতশটি আবাসন পড়ে রয়েছে। ওই সব আবাসনের বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, সেখানে অসামাজিক কাজকর্ম চলে। ময়লা-আবর্জনা, সাপখোপের সঙ্গে সঙ্গে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যেও অতিষ্ঠ বাসিন্দারা।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জাহাজ মন্ত্রকের হাতে এই সংস্থার আবাসনের কাগজপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আইনি জটিলতায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ওই এলাকার দখল নিতে পারছে না। এ দিকে পরিতক্ত আবাসনের জানলা-দরজা চুরি হয়ে যাচ্ছে। দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে ইট। ওই সংস্থার এক প্রাক্তন কর্মী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা আর বাস্তব ছবি দুটো একদম আলাদা। কেন্দ্রীয় সরকারের সদিচ্ছা থাকলে কারখানা এত সহজে বন্ধ হত না। কারখানা বন্ধ হওয়ার পরে তার আবাসনের উপযুক্ত ব্যবহার করা হত। কিন্তু সে সব না হওয়ায় কোটি কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি পড়ে নষ্ট হচ্ছে।’’
হলদিয়া শহর তৃণমূলের সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘সাত বছর হয়ে গেল বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছে। যদি পড়ে থাকা সম্পত্তির সঠিক ব্যবহারের ইচ্ছা থাকত, তা হলে অনেক আগেই ব্যবস্থা নিতে পারত। বাজেটে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। হলদিয়ার মানুষ সেটা বুঝে গিয়েছেন।’’ এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় বাজেটের নির্দেশিকার বাস্তবায়ন আদৌ সম্ভব কি না সেই প্রশ্ন উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy