খেজুরি ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপির দুই জয়ী সদস্য যোগ দিলেন তৃণমূলে। কাঁথিতে তাঁদের হাতে দলের পতাকা তুলে দিচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদেও শাসক দলকে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দিয়েছে গেরুয়া শিবির। তবু, পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের আগে জয়ী সদস্যদের ধরে রাখতে ব্যর্থ হল বিজেপি নেতৃত্ব। তাও আবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে। শুধু তাই নয়, এমন একটা সময়ে যখন পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলন উপলক্ষে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডা সহ কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা রয়েছেন এ রাজ্যে। স্বাভাবিক ভাবেই এমন ঘটনায় বোর্ড গঠনের আগে দলের জয়ী সদস্যদের ধরে রাখা নিয়ে বিজেপি জেলা নেতৃত্বের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে।
আজ, সোমবার জেলায় ২৫টি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং সহ-সভাপতি নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। তার আগে রবিবার তৃণমূলে যোগ দেন খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির দুই জয়ী বিজেপি সদস্য। পিপাসা দাস এবং উদয় শঙ্কর মাইতি নামে দুই বিজেপি সদস্যর হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষ এবং কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তরুণ মাইতি। এঁদের মধ্যে উদয় অবশ্য খেজুরি -২ ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি পদে রয়েছেন।
এবার জেলায় কাঁথি-১, খেজুরি -২, নন্দীগ্রাম-২ এবং শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতি দখল করেছে বিজেপি। এর মধ্যে খেজুরি -২ পঞ্চায়েত সমিতির ১৫টি আসনের মধ্যে ৯টি আসনে জয়ী হয়েছে তারা। ছটি আসন পেয়েছে শাসক দল। এদিন বিজেপির দুই সদস্য শাসক দলে যোগ দেওয়ায় পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের হাতে আসা কেবল সময়ের অপেক্ষা। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, খেজুরি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে একাধিক দাবিদার ছিলেন। উদয় ছাড়াও জেলা বিজেপির সম্পাদক পবিত্র দাস এবার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দৌড়ে ছিলেন। এদিন উদয়ের পাশাপাশি আরও এক সদস্য শাসক দলে যোগ দেওয়ায় এই পঞ্চায়েত সমিতি কার্যত গেরুয়া শিবিরের হাত থেকে বেরিয়ে গেল বলেই মনে করা হচ্ছে।
তৃণমূলে যোগ দিয়ে এদিন বিজেপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন উদয়। তিনি বলেন, "মানুষকে ভুল বুঝিয়ে এবং ছাপ্পা ভোট দিয়ে খেজুরিতে বিজেপি জয়ী হয়েছে। একথা শীর্ষ নেতাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাঁরা সে সব পাত্তা দেননি। তাই দল ছাড়তে বাধ্য হয়েছি।’’ যদিও তৃণমূলে যাওয়া আর এক সদস্য পিপাসা দাস এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তাঁর স্বামী আশিস দাস বলেন, "বেশ কিছুদিন ধরে শাসক দলে যোগ দেওয়ার জন্য স্ত্রীর উপরে তৃণমূলের লোকজন চাপ দিচ্ছিল। গত দু’দিন ধরে ওঁকে খুঁজে পাইনি। তৃণমূলের লোকজন পিপাসাকে অপহরণ করেছিল।’’
বিজেপি সূত্রের দাবি, গত কয়েক দিন ধরে পঞ্চায়েত সমিতির দুই সদস্য পিপাসা এবং উদয় দূরত্ব বাড়াচ্ছিল বিজেপির ব্লক এবং জেলা স্তরের নেতাদের সঙ্গে। এদিকে দলের জয়ী দুই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় রাজনৈতিক চাপান উতোর শুরু হয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার দোলই বলেন, ‘‘দলের নিয়ম না মেনে সাংগঠনিক পদ থেকে পদত্যাগ না করেই তৃণমূলে গিয়েছেন। পকেট গরম থাকায় এখন তৃণমূলের শেখানো বুলি আওড়াচ্ছেন। এলাকার মানুষ দলবদলুদের যোগ্য জবাব দেবে।"
বিধায়ক ও তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তরুণ মাইতির দাবি, ‘‘জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং রাজ্য সরকার সবকিছুই তৃণমূল পরিচালিত। এক্ষেত্রে মানুষের উন্নয়নের জন্য শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়াকে সঠিক বলে ভাবছেন। তাই তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy