মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি:পিটিআই
হাথরস-কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তফসিলি কার্ড খেলছে গেরুয়া শিবিরও। আজ, মঙ্গলবার থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা সফর শুরু হচ্ছে মমতার। দু’দিনের সফর। তার আগে পরপর দু’দিন মমতাকে তফসিলি প্রশ্নেই বিঁধলেন বিজেপি নেতারা।
সোমবার ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম। সেখানে আদিবাসী উন্নয়নে প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন তিনি। ঝাড়গ্রামে আদিবাসীদের অধিকাংশই তফসিলি জনজাতিভুক্ত। প্রশ্নের আড়ালে কুনার বোঝানোর চেষ্টা করেন, মা-মাটি-মানুষের সরকার তফসিলি জাতি, জনজাতিদের উন্নয়নে যে সাফল্য দাবি করছে তা আসলে অন্তঃসারশূন্য। রবিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কেশিয়াড়ি গিয়েছিলেন। সেখানেও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে যেসব রাজনৈতিক খুন হচ্ছে সবই তফসিলি জাতি, জনজাতি, অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত। যে মহিলারা ধর্ষিতা হচ্ছেন, খুন হচ্ছেন তাঁরাও পিছিয়ে থাকা অংশের।’’ রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিগত ভোটগুলির প্রবণতা অনুযায়ী, তফসিলি জাতি, জনজাতি কেন্দ্রগুলিতে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে শাসকদল। তাই বিধানসভা ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখে শাসক যেমন হাথরস-কাণ্ডকে সামনে রেখে হারানো জমি ফিরে পেতে চাইছে, তেমনি বিজেপিও চাইছে নিজেদের সুবিধাজনক অবস্থান ধরে রাখতে। তাই দু’পক্ষের অস্ত্র তফসিলি কার্ড।
মুখ্যমন্ত্রী যে প্রকল্পগুলিকে সামনে রেখে আদিবাসী উন্নয়নের দাবি করেন, কার্যত তার প্রত্যেকটির সমালোচনা করেছেন কুনার। কখনও বলেছেন, ‘‘আমি ঝাড়গ্রাম জেলার বহু গ্রাম ঘুরেও ‘জয় জোহার’ প্রকল্পের উপভোক্তাদের খুঁজে পাইনি। মুখ্যমন্ত্রী যেন দয়া করে একশো জন উপভোক্তার নাম ঘোষণা করে দিয়ে যান।’’ আবার কখনও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আবাস যোজনায় এখনও ৭০ শতাংশ আদিবাসী পরিবার বঞ্চিত। তাঁর অভিযোগ, লোধা উন্নয়নে রাজ্যের বরাদ্দ ১০ কোটি টাকা জেলায় পড়ে আছে। কাজ হয়নি।’’ কুনারের কটাক্ষ, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে উদ্বাস্তুদের জমির পাট্টা দেওয়া হলেও ঝাড়গ্রামে আদিবাসী ও লোধা-শবরদের পাট্টা দেওয়া হচ্ছে না। ইমাম ও পুরোহিতদের ভাতা দেওয়া হলেও সাঁওতাল সমাজের ‘নায়কে বাবা’দের ভাতা দেওয়া হচ্ছে না।
যদিও সব সমালোচনা উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি দুলাল মুর্মুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কুনারবাবুর মনে হয় চোখ খারাপ হয়ে গিয়েছে, তাই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আদিবাসী উন্নয়নের বিপুল কাজকর্ম উনি দেখতে পাচ্ছেন না। সংসদ হয়ে উনি এক বছরে কী কাজ করেছেন, সেই হিসেবটা দিচ্ছেন না কেন?’’
আগামিকাল, বুধবার ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। জেলা স্তরের জনপ্রতিনিধি ও আধিকারিকদের একাংশ বৈঠকে যোগ দেবেন অনলাইনে। অর্থাৎ করোনা পরিস্থিতিতে বহরে খুব বড় হচ্ছে না প্রশাসনিক বৈঠক। তবে এ দিন কুনার বললেন, ‘‘আমি সাংসদ হওয়ার পরে এই প্রথমবার জেলা সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। সভায় ডাক পাইনি। তবে মুখ্যমন্ত্রীকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সম্মান জানাতে চেয়ে জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy