এক মঞ্চে বিজেপি বিধায়ক আর তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি।
খেলা হল। নির্বাচনী ময়দানে নয়। নেহতই ফুটবল ময়দানে!
মঙ্গলবার রাতে খেজুরিতে একটি ফুটবল ম্যাচের উদ্বোধনে এক মঞ্চে হাজির বিজেপির বিধায়ক আর তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি। বিধানসভা ভোটের পরে যে খেজুরি রাজনৈতিক হিংসার জন্য খবরের শিরোনামে এসেছে, সেখানে যুযুধান শিবিরের দুই নেতার এমন উপস্থিতি ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে শোরগোল পড়েছে।
গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মেতেছিলেন ‘খেলা হবে’ স্লোগানে। বিরোধী দলের কর্মীদের ওই স্লোগানের সাহায্যে কটাক্ষও করতে দেখা গিয়েছে ঘাসফুল শিবিরকে। তবে মঙ্গলবার রাতে ফুটবল খেলার ময়দানে খেজুরির বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামানিক এবং ভগবানপুর-২ ব্লকের গড়বাড়ি-১ অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি সাধনচন্দ্র দাস অধিকারী হাজির হওয়া নিয়ে এবার কটাক্ষ করেছে অন্য বিরোধী দলগুলি।
স্বানীয় সূত্রের খবর, একটি সংস্থার উদ্যোগে জলেশ্বর জিউ চড়ক উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। এই উপলক্ষে দুদিন ব্যাপী ফুটবল প্রতিযোগিতা চলছে। মঙ্গলবার রাতে ছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। সেখানে শান্তনু এবং সাধনচন্দ্র দাস অধিকারী ছিল। সাধন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। আর মঞ্চে বক্তৃতা করার সময় তৃণমূলের ওই নেতাকে শ্রদ্ধা জানান বিজেপি বিধায়ক। শুধু তাই নয় মাইক হাতে দর্শকদের উদ্দেশ্যে শান্তনু বললেন, ‘‘সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলতে হয়।’’
উল্লেখ্য, খেজুরির দুটি ব্লকের পাশাপাশি, ভগবানপুর-২ ব্লকের গড়বাড়ি-১ এবং ২ অঞ্চল খেজুরি বিধানসভার অন্তর্ভুক্ত। এপ্রিলের গোড়াতে বঙ্গ রাজনীতির যুযুধান দুই শিবিরের দুই অন্যতম নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর বাকযুদ্ধ দেখেছে খেজুরি। গত ৩ এপ্রিল খেজুরির ঠাকুরনগরে প্রশাসনিক জনসভা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সভাতে শান্তনু বা বিজেপির কোনও বিধায়ক আমন্ত্রিত ছিলেন না। সেদিন কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি, রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে একাধিক বিষয়ে মমতা আক্রমণ করেছিলেন। গত সোমবার একই জায়গাতেই পাল্টা জনসভা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। সেখানে তিনি মুখ্যমন্ত্রী এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে পাল্টা আক্রমণ করেন। আর ওই সভাতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুর আগে বক্তৃতা করতে গিয়ে খেজুরির বিধায়ক শান্তনু তৃণমূল কর্মীদের হাত-পা এবং কোমর ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
এমন প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার রাতে তাঁর মুখে সেই তৃণমূল নেতার তুষ্টি দেখে খানিকটা বিস্মিত খেজুরি এবং ভগবানপুরের এলাকাবাসী। তাঁদের অনেকই বললেন, ‘‘ ধরনের দৃশ্য শেষ কবে দেখেছি মনেই পড়ছে না।’’ যদিও অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি সাধন দাস অধিকারীর এ ব্যাপারে বলছেন, ‘‘উনি এলাকায় ছিলেন। তাই এসেছিলেন। আর বেশি কিছু নয়।’’ আর বিজেপি বিধায়কের ব্যাখ্যা, ‘‘আয়োজকরা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আমরা সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলতে চাই।’’
তৃণমূল-বিজেপি পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজনৈতিক সৌজন্যের নজির হিসাবে এই ঘটনাকে তুলে ধরলেও আলাদা সমীকরণ দেখছে সিপিএম। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হিমাংশু দাস বলছেন, ‘‘তৃণমূল বেকায়দায় পড়েছে বলে এখন তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। শুভেন্দুরা রাজনীতিতে পোড় খাওয়া। তাই তারা প্রকাশ্যে তৃণমূলের বিরোধিতা করেন। তবে রাজনীতিতে একেবারে অনভিজ্ঞ শান্তনু বুঝতে পেরেছেন আগামী পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল আর বিজেপির মূল শত্রু হচ্ছে সিপিএম। তাই তারা এক মঞ্চে হাজির ছিলেন। এটা সাধারণ মানুষ বুঝে গিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy