Advertisement
E-Paper

Santiniketan: স্কুল বন্ধ দু’বছর পূর্ব মেদিনীপুরের গ্রামে, পড়ুয়াদের এক টুকরো শান্তিনিকেতন উপহার শুভজিতের

খেটে খাওয়া মানুষের কাছে ছেলেমেয়ের হাতে মোবাইল অথবা ট্যাব তুলে দেওয়ার স্বপ্ন এখনও অলীকই। তাঁদের কাছে এখন ভরসা শুভজিৎ স্যার।

খোলা আকাশের ক্লাসের নিচ্ছেন শুভজিৎ স্যার।

খোলা আকাশের ক্লাসের নিচ্ছেন শুভজিৎ স্যার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২১ ০০:২১
Share
Save

চার দেওয়ালের খোপের মধ্যে দমবন্ধ হয়ে আসত। বরং বইয়ে ডুবে যেতে ভাল লাগত প্রকৃতির কোলে। তাই উন্মুক্ত শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলেছিলেন শান্তিনিকেতনে। এই করোনা কালে রবীন্দ্রনাথের সেই ভাবনাকেই আঁকড়ে ধরেছেন শুভজিৎ জানা। কোভিডে লেখাপড়াকে প্রকৃতির কোলে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন তিনি। তাই স্কুল বন্ধ থাকলেও, শেখায় ইতি পড়েনি খাদালগোবরার খুদে পড়ুয়াদের।

ঝাড়গ্রামের কুমুদকুমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শুভজিৎ। করোনায় গত দু’বছর যাবৎ স্কুল যাওয়া বন্ধ তাঁর। তবে বেতনের নিশ্চয়তায় ভর করে দুপুরে শুয়ে বসে আড়মোড়া ভাঙায় নিজেকে বেঁধে রাখেননি তিনি। বরং এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কী ভাবে খুদে পড়ুয়াদের মধ্যে শেখার আগ্রহ বাঁচিয়ে রাখা যায়, সেই চিন্তাই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল তাঁকে। আর সেখান থেকেই শিক্ষাকে আক্ষরিক অর্থেই উন্মুক্ত করে ফেলেছেন তিনি।

ডিজিটাল যুগে হাতে হাতে মোবাইল পৌঁছে গেলেও, খাদালগোবরার খেটে খাওয়া মানুষের কাছে ছেলেমেয়ের হাতে মোবাইল অথবা ট্যাব তুলে দেওয়ার স্বপ্ন এখনও অলীকই। তাঁদের ছেলেমেয়েদের জন্য গ্রামে ঘুরে ঘুরে ক্লাস নিচ্ছেন শুভজিৎ। কখনও রাস্তার পাশে ঘাসের সবুজ গালিচায় বসছে তাঁর পাঠশালা। কখনও আবার দিঘির ধারে অথবা খেলার মাঠে। একরত্তিদের পুনরায় বইমুখী করতে চেষ্টায় কসুর রাখছেন না শুভজিৎ। তাতে সাড়াও পাচ্ছেন। খোলা আকাশের নীচে শুভজিৎ স্যারের ক্লাস করতে পৌঁছে যাচ্ছে ৫ থেকে ১৫, সব পড়ুয়াই।

শুভজিৎ জানিয়েছেন, এলাকার অধিকাংশ মানুষেরই দিন আনি দিন খাই অবস্থা। ছেলেমেয়েকে অনলাইন ক্লাস করানো তো দূর, টিউশন পড়াতে পাঠানোর ক্ষমতাও নেই তাঁদের। তাই নিজের সাধ্যের মতো যতটুকু সম্ভব ছিল করার চেষ্টা করেছেন তিনি। শুভজিৎ বলেন, ‘‘এলাকার অধিকাংশ মানুষই মৎস্যজীবী। কেউ ভ্যান চালান, কেউ দিনমজুরের কাজ করেন। সরকারি স্কুলে পয়সা লাগত না, ছেলেমেয়েকে পাঠাতেন। কিন্তু স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ১০০ ছেলেমেয়ের পড়াশোনা বন্ধ। ছেলেমেয়েক অনলাইন পড়ানোর ক্ষমতা নেই কারও। টাকার অভাবে টিউশন পর্যন্ত পড়াতে পারছেন না। এমনকি ছোট ছোট ছেলেমেয়েগুলিকে শ্রমিকের কাজ করতে হচ্ছে। এদের বইমুখী করতেই ৮ মাস ধরে এই ভ্রাম্যমান স্কুল চালাচ্ছি।’’

খাদালগোবরা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী জয়ন্তী আদক বলে, ‘‘অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করাচ্ছিল বাবা-মা। টিউশন পড়তে যাওয়ার মতো টাকা নেই আমাদের। শুভজিৎ স্যারই আমাদের পড়াচ্ছেন।’’

স্কুল কবে খুলবে এখনও পর্যন্ত জানা নেই কারও। তত দিন শুভজিৎই ভরসা এলাকার মানুষের।

Rabindranath Tagore Students Teachers Shantiniketan coronavirus Coronavirus Lockdown Open Schooling

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।