জ্বলছে চোলাইয়ের ঠেক। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
কয়েক দিন আগে এক মৎস্যজীবীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তাঁকে মৎস্যবন্দর লাগোয়া একটি মদের ঠেকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তারপর গত মঙ্গলবার এক মৎস্যজীবীর কাছ থেকে সর্বস্ব লুটপাট করার অভিযোগ ওঠে। শঙ্করপুর মৎস্য বন্দরের বার বার এমন সমাজবিরোধী কাজের জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকয় চোলাইয়ের রমরমার অভিযোগ তুলেছিলেন। কিন্তু চোলাইয়ের রমরমা ঠেকাতে পুলিশ-প্রশাসনকে সে ভাবে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি বলে তাঁদের দাবি। তাই চোলাইয়ের বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে নিজেরাই আন্দোলনে নামলেন এলাকার মানুষ।
বুধবার সকালে শঙ্করপুর ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বন্দর বাঁচাতে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নেওয়া হয়। সেই মিছিলের সময়েই এলাকার মহিলারা চারটি মদের দোকানে ভাঙচুর চালান। এমনকী ওই সব দোকানে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা শিলা চন্দ বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে এই সব মদের ঠেক বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনও কাজই করেনি। উল্টে চোলাইয়ের রমরমায় এলাকায় অধিকাংশ ঘরে অশান্তি, মারধর লেগেই রয়েছে।’’ স্থানীয় আর এক মহিলার দাবি, ‘‘সন্ধ্যার পর শঙ্করপুর মৎস্য বন্দর থেকে মূল সড়কে যাওয়ার পথে হাঁটাচলাই দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ছিনতাই, লুটপাট প্রায় রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শঙ্করপুরে সমুদ্র সৈকত বরাবর তিনটি মুদির দোকানে লুকিয়ে বেআইনিভাবে চোলাইয়ের কারবার চলার অভিযোগ বেশ পুরনো। নভেম্বর মাসে তেমনই একটি দোকানে মদ খেতে গিয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়েন সাধন হালদার (৪২) নামে মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা থানার কৃষ্ণপুর গ্রামের এক মৎস্যজীবী। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার হলে খুনের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় এক মৎসজীবীকে গ্রেফতার করেছিল মন্দারমণি উপকূল থানার পুলিশ। কিন্তু তারপরেও শঙ্করপুর মৎস্য বন্দর এলাকায় চোলাই রমরমা ঠেকানো যায়নি।
এদিন শঙ্করপুর ফিশারমেন অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ও প্রাক্তন বিধায়ক স্বদেশ নায়ক অভিযোগ করেন, ‘‘এলাকার মহিলারা পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকায় দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষুব্ধ। তবে চোলাইয়ের কারবার রুখতে এবং মৎস্যবন্দরকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবন দেওয়ার দাবিতে আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি।’’
শঙ্করপুর মৎস্য বন্দরের বিশেষ আধিকারিক বিশ্বরূপ বসু বলেন, ‘‘বন্দর এলাকার বাইরে অসামাজিক কাজকর্ম রোখার দায়িত্ব পুলিশের। এ ক্ষেত্রে আমরা পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার কথা বলব।’’ যদিও ওই এলাকায় চোলাইয়ের বাড়বাড়ন্তের অভিযোগ তাঁদের জানা ছিল না বলে দাবি পুলিশের। তাদের দাবি, শঙ্করপুর সমুদ্র সৈকতের কাছে রাস্তা তৈরির সময় সরকারি জায়গা দখল করে থাকা দোকানেগুলি আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই সেখানে মদ বিক্রির অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy