নন্দীগ্রামের এই ঘাটেই বন্ধ ফেরি চলাচল। —নিজস্ব চিত্র
বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ‘দাদাগিরি’ করার অভিযোগ উঠল নন্দীগ্রামে। সেখানকার একটি ফেরিঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল। পদ্মশিবিরের অবশ্য দাবি, ব্যক্তিগত বিষয়ে অহেতুক দলকে টেনে আনা হচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম থেকে হলদিয়া মহকুমার অন্যান্য অংশের মধ্যে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হল নৌকা বা লঞ্চ। হলদি নদীর তীরবর্তী নন্দীগ্রাম থেকে সহজে শিল্পশহর হলদিয়ায় যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছে একাধিক ফেরিঘাট। এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ হল নন্দীগ্রাম-বালুঘাটা ফেরি সার্ভিস। প্রতি দিন এই ঘাট থেকে বহু মানুষ হলদিয়ায় যাতায়াত করেন। কিন্তু বিজেপি নেতার ‘বাধায়’ শুক্রবার থেকে এই ফেরিঘাট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কাজে বেরিয়েও বাড়ি ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে। শনিবারও ফেরি সার্ভিস চালু করা যায়নি।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, শুক্রবার সকালে বিজেপির বুথ সভাপতি শুভেন্দু জানা বিশাল দলবল নিয়ে ওই ফেরিঘাটে হাজির হন। অভিযোগ, সেই সময় নৌকায় যে সকল যাত্রীরা উঠেছিলেন, তাঁদের জোর করে নামিয়ে দেওয়া হয়। নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পঞ্চম খণ্ড জালপাই গ্রামের ৩২ নম্বর বুথে, পঞ্চম খণ্ড জালপাই থেকে হলদিয়ার বালুঘাটা পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কাছ থেকে ফেরি পরিষেবার ইজারা নিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাত মাজি। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি নেতা শুভেন্দু বেশ কয়েক জন বিজেপি কর্মীকে নিয়ে এসে ওই ফেরি পরিষেবা চালু রাখার জন্য তার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন।
বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, ঘাটের সরকারি ইজারাদার প্রভাতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, তাঁর অনুমতি ছাড়া ওই ঘাটে যাত্রী পরিবহণ করা যাবে না। প্রভাত জানিয়েছেন, তিনি ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রাম থানায় ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, “বিজেপি নেতা শুভেন্দু জানা, সত্যব্রত জানা, নাড়ু জানাদের দাবি, এই নদীর পাড়ে তাঁদেরই জায়গার উপর ঘাট তৈরি হয়েছে। তাই জেলা পরিষদকে টাকা দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকেও টাকা দিতে হবে। এই টাকা দিতে অস্বীকার করায় ঘাটে এসে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে নৌকা চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এই ঘটনার বিষয়ে নন্দীগ্রাম থানার পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনকেও জানিয়েছি।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “শনিবারও এই ফেরী সার্ভিস চালুর বিষয়ে প্রশাসন কোনও উদ্যোগ নেয়নি। এর ফলে আমি যেমন আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, তেমনই যাত্রীরাও চরম সমস্যার মধ্যে পড়েছেন।”
এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ এই প্রসঙ্গে বলেন , “নদীর চরেও এখন বিজেপি নেতার জমি বেরিয়ে পড়ছে। অথচ দীর্ঘ বছর ধরেই এই জায়গায় জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে নৌকা চলাচল করছে।” নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে তাঁর সংযোজন, “এত দিন তিনি কোথায় ছিলেন জানা নেই। এলাকার বিধায়কের প্রশ্রয়েই এই নেতাদের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে।” তবে স্থানীয় বিজেপি নেতা সুদীপ দাসের পাল্টা মন্তব্য, “জায়গাটি যে শুভেন্দু জানারই, তার সপক্ষে নথি রয়েছে। সেটা তিনি পুলিশের কাছেও জমা করেছেন। তবে বিষয়টি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত, এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। অযথা ঘটনাটির সঙ্গে বিজেপিকে জড়িয়ে কুৎসা করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy