এসএসকেএমের স্নাতকোত্তর স্তরের চিকিৎসক-পড়ুয়া অভীক দে। —ফাইল ছবি।
রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অলিখিত ‘ক্ষমতা’ হয়ে উঠছিলেন তিনিও। অভিযোগ, সেই দাপটেই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাই কলেজে দীর্ঘ দিন অনুপস্থিত থাকলেও কাউকে কিছু জানানোর প্রয়োজন মনে করতেন না এসএসকেএমের স্নাতকোত্তর স্তরের চিকিৎসক-পড়ুয়া অভীক দে। ৯ অগস্ট সকালে আর জি করের সেমিনার রুমে চিকিৎসক-পড়ুয়ার দেহ উদ্ধারের আগের দিন অর্থাৎ ৮ অগস্ট (ওই রাতে খুন-ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল) থেকে অভীক কাজে অনুপস্থিত ছিলেন। কেন অনুপস্থিত? কোথায় ছিলেন তিনি? সেই প্রশ্নও সিবিআই তদন্তের আওতায় রয়েছে বলেই খবর। আর জি করের সেমিনার রুমে ৯ অগস্ট অভীক ছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
সূত্রের খবর, অভীকের বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে অভিযোগ উঠতে শুরু করায়, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের কাছে ওই চিকিৎসক-পড়ুয়া সম্পর্কে রিপোর্ট চাওয়া হয়। গত ৪ সেপ্টেম্বর রাজ্যের তৎকালীন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েককে চিঠি পাঠিয়ে বিস্তারিত জানান এসএসকেএমের ডিন অভিজিৎ হাজরা। সোমবার ওই চিঠি প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই মেডিক্যাল কলেজের শল্য বিভাগ থেকে কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, ৮ অগস্ট থেকে টানা অনুপস্থিত রয়েছেন অভীক। কুড়ি দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকলেও সংশ্লিষ্ট ইউনিট, বিভাগীয় প্রধান বা কলেজ কর্তৃপক্ষ, কাউকেই কিছু জানাননি তিনি।
এ ছাড়া, এসএসকেএমের শল্য বিভাগে স্নাতকোত্তর স্তরে অভীক ভর্তি হয়েছেন গত ২০ ফেব্রুয়ারি। নিয়মানুযায়ী, ভর্তির ছ’মাসের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে অন্যান্য নিয়মাবলি সম্পন্ন করতে হয় এক জন চিকিৎসক-পড়ুয়াকে। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরকে উত্তর দিতে গিয়ে দেখা যায়, সবটাই অভীক নিজের মর্জিতে চালিয়েছেন। চিঠিতে জানানো হয়েছে, শল্য বিভাগের ট্রেনি হিসেবে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেননি অভীক। এ বিষয়ে চিকিৎসক মহলের বড় অংশের কটাক্ষ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কে হবেন, সেই সিদ্ধান্তও নিতেন অভীক। এক জন আরএমও হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পরীক্ষা-পরিদর্শকের ভূমিকা পালন করতেন। তিনি নিয়ম মানবেন না সেটাই তো স্বাভাবিক।’ সিনিয়র চিকিৎসকেদের একাংশের কথায়, ‘বিরুদ্ধাচরণ করলেই অভীক-বাহিনীর রোষের মুখে পড়তে হত। কেউ তাই ঝামেলায় জড়াতে চাইতেন না।’
আবার স্নাতকোত্তর স্তরে পঠনপাঠনের সময়ে কী বিষয়ে গবেষণাপত্র জমা দেবেন, তার সারাংশও কলেজে জমা করেননি অভীক। এমনকি, জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের নিয়ম থাকলেও আধার যুক্ত বায়োমেট্রিক হাজিরা ব্যবস্থায় নিজেকে নথিভুক্ত করেননি। ভর্তির পর থেকে ডিনের কার্যালয়েই অভীকের পরিচয়পত্র পড়ে রয়েছে।
এই সব বিষয় উল্লেখ করে এসএসকেএমের ডিন কার্যত অসহায়তা প্রকাশ করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার কাছে চিঠি পাঠিয়ে ছিলেন। এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন তাঁরা আগে কখনও হননি, এবং এই অবস্থায় তাঁদের কী করণীয় সেই বিষয়েও জানতে চেয়েছিলেন।
তাই সিনিয়র চিকিৎসকদের প্রশ্ন, ‘এত কিছুর পরেও কি শুধু সাসপেনশনই অভীকের একমাত্র শাস্তি?’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy