এত জঞ্জাল এল কোথা থেকে? ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ রচিত ‘আলিবাবা’ নাটকে বিরক্ত মর্জিনার গলায় শোনা গিয়েছিল— ‘ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!’ সেই পরিচিত লব্জই এখন আড়ুপাড়ার বাসিন্দাদের মুখে মুখে।
ধস-পরবর্তী বেলগাছিয়া ভাগাড়ের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মঙ্গলবার ঠিক হয়েছিল, হাওড়া শহরের রোজকার আবর্জনা আর ভাগাড়ে নয়, ফেলা হবে শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের আড়ুপাড়ায়, কেএমডিএ-র পরিত্যক্ত জমিতে। বুধবার সেইমতো আড়ুপাড়ায় জঞ্জাল ফেলতে গিয়েই বিপত্তি বাধল। পুরসভার গাড়ি সেখানে আবর্জনা ফেলতে গেলে বাধা দেন স্থানীয়েরা। ময়লা ফেলার গাড়ি আটকে দেন তাঁরা। যার ফলে সেই কাজ আপাতত বন্ধ। বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছে পুরসভা। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সঙ্গে আলোচনাও চলছে। এ বার ওই জঞ্জাল কোথায় ফেলা হবে, তা নিয়ে নতুন করে সঙ্কটে প্রশাসন।
ভাগাড়ে ধসের জেরে বেলগাছিয়ায় বহু বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। যার ফলে বহু মানুষ এখন ঘরছাড়া। বুধবার তাঁদের জন্য কন্টেনারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খিদিরপুর থেকে ট্রেলারে করে সাতটি কন্টেনার সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাতে। হাওড়ার দাসনগর ট্র্যাফিক পুলিশের তত্ত্বাবধানে সেগুলি রাখা হয়েছে স্থানীয় একটি ক্লাবের মাঠে। পুরসভা সূত্রে খবর, সেগুলিকে বসবাসযোগ্য করে তোলার কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। প্রতিটি কন্টেনার ২০০ বর্গফুটের। প্রতিটিতে আটটি জানালা এবং দু’টি দরজা থাকবে। আলো-পাখা লাগানো হবে। ১৫-২০ জন থাকতে পারবে প্রতিটি কন্টেনারে।
পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ৫০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গৃহহারা হয়েছেন ৯৬টি পরিবারের ৩০০ জনের বেশি মানুষ। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য ৬টি বহুতলে ১৬টি করে ৯৬টি বাড়ি বাংলার বাড়ি প্রকল্পের আওতায় দু’বছরের মধ্যে তৈরি করে দেওয়া হবে।