মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আনন্দবাজার পত্রিকার সাংবাদিক দেবমাল্য বাগচীর গ্রেফতারে প্রতিবাদের ধারা অব্যাহত রইল সোমবারও। দেওয়া হল চিঠি, প্রতিবাদপত্র, স্মারকলিপি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নির্দেশে কলকাতায় আজ, মঙ্গলবার কংগ্রেস মিছিলের ডাক দিয়েছে দেবমাল্যের মুক্তির দাবিতে।
এ দিন দেবমাল্যের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর প্রেস ক্লাব। চিঠি পাঠানো হয়েছে জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের দফতরেও। সাংবাদিকের মুক্তির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির আর্জিও রেখেছে ওই প্রেস ক্লাব। এই গ্রেফতারের প্রতিবাদ করে এ দিন বীরভূমের জেলাশাসকের মারফত মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে বীরভূম নাগরিক কল্যাণ সমিতিও। এ দিন দুপুরে সিউড়িতে জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে এই প্রতিবাদপত্র জমা দেন সমিতির সদস্যেরা। তাঁদের দাবি, সম্পূর্ণ ঘটনার তদন্ত না করে শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে এক জন সাংবাদিককে গ্রেফতার করা অনুচিত। শুধু সাংবাদিকই নয়, সর্বস্তরের মানুষের ক্ষেত্রেই শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতারের বিরোধিতা করেন তাঁরা। অবিলম্বে সাংবাদিকের মুক্তির দাবিও তোলা হয় এই প্রতিবাদপত্রে। সমিতির সম্পাদক সুশীল সরকার বলেন, “এই ঘটনা গণতন্ত্রের উপর আঘাত।”
পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল প্রেস কর্নারের পক্ষ থেকেও জেলা পুলিশ সুপারকে প্রতিবাদপত্র দেওয়া হয়েছে। পুরুলিয়া জার্নালিস্ট ক্লাব জেলা পুলিশের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়ে এই ঘটনায় তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেছে। ওই সংগঠনের জেলা সভাপতি অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এক জন সাংবাদিকের সংবাদ সংগ্রহের অধিকার রয়েছে। কিন্তু পুলিশ দিয়ে ভয় দেখানো ও মামলায় জড়ানো সব সাংবাদিককেই আতঙ্কিত করে তুলেছে।’’ স্মারকলিপি নেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অম্লানকুসুম ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি পাঠিয়ে দেব।’’
দেবমাল্যের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে ‘ইন্ডিয়ান জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর পশ্চিম বর্ধমান শাখা। দাবিপত্র পাঠানো হয়েছে দুর্গাপুর মহকুমা তথ্য আধিকারিকের দফতরে। দেবমাল্যের গ্রেফতারের প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ দেখাল এগরা মহকুমা জার্নালিস্টস ফোরাম ও নাগরিক সমাজ। পুলিশ ও মহকুমা শাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হল।
এ দিন ধৃত সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা করতে মেদিনীপুর জেলে আসতে চেয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে তিনি পরে এক্স হ্যান্ডলে দাবি করেন, দেখা করতে চেয়ে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ দেখা করার অনুমতি দেননি। রাজ্যে ‘আধা জরুরি অবস্থা’ চলছে বলেও অভিযোগ করেন শুভেন্দু। কেন দেবমাল্যের সঙ্গে দেখা করতে পারলেন না বিরোধী দলনেতা, এই প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে মেদিনীপুর জেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই আবাসিক তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। নিয়মানুযায়ী, তাঁর পরিবারের লোকজন দেখা করেছেন। এর অতিরিক্ত কারও সঙ্গে দেখা করার নিয়ম নেই।’’ সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি দেবমাল্যের সঙ্গে এই মামলায় ধৃত বাসন্তী দাসের মামলার বিচারও দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছে।
দেবমাল্যের অবিলম্বে মুক্তির জন্য মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রীর তৎপরতা দাবি করেছে ফরওয়ার্ড ব্লক। দলের সাধারণ সম্পাদক জি দেবরাজনের বক্তব্য, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনের এই পদক্ষেপ সংবাদমাধ্যমের এবং সাধারণ ভাবে বাকস্বাধীনতার পরিপন্থী। সংবাদমাধ্যমের কাজ সমাজের দিকে আয়না ধরা। চার পাশে যা ঘটছে, মানুষের কাছে তুলে ধরা তার কর্তব্য। আমরা তাই শুধু সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের মুক্তিই নয়, এই মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy