Advertisement
E-Paper

পথ নিরাপত্তায় মুম্বই, দিল্লির থেকে এগিয়ে কলকাতা, মত সিপির, বেহালার সংঘর্ষে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৫

কলকাতার রাস্তায় গাড়ি নিয়ে যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করেন, তাঁদের একাংশের দাবি, শহরের মধ্যে গাড়ির গতিবেগ যে গণ্ডিতে বেঁধে রাখার নিয়ম, তাতে এমন দুর্ঘটনা ঘটারই কথা নয়।

What Kolkata Police Commissioner Vineet Goyal says about road safety after Friday’s road accident in Behala

কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। —ফাইল চিত্র ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৩ ১৭:০৬
Share
Save

বেহালার দুর্ঘটনাকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘাতক লরির চালক এবং খালাসিকে শুক্রবারই গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার পরেও ধরপাকড় চলছে। শনিবার দুপুরে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি জানান, শুক্রবারের ঘটনা সত্ত্বেও দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাইয়ের মতো বড় শহরগুলির তুলনায় কলকাতায় পথ নিরাপত্তা অনেক বেশি। পাশাপাশি, তিনি দুর্ঘটনা এড়াতে পথচারীদেরও সতর্ক হওয়ার কথাও বলেন। বিনীতের কথায়, ‘‘সব সময় যে গাড়িচালকের ভুল থাকে, তেমনটা নয়। মাঝেমধ্যে পথচারীদেরও ভুল থাকে।’’

শুক্রবার সকালে বেহালা চৌরাস্তার কাছে লরি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বড়িশা হাই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সৌরনীল সরকারের। লরির ধাক্কায় আহত সৌরনীলের বাবা বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেই ঘটনার জেরে শুক্রবার সকাল থেকেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল ডায়মন্ড হারবার রোডের উপর বেহালা চৌরাস্তা এলাকা। দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ ও উন্মত্ত জনতা। কিন্তু এক দিন পরেই সেই চৌরাস্তাতেই পুলিশি তৎপরতা চূড়ান্ত।

পুলিশের কড়া নজরদারিতে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করছে যানবাহন। চৌরাস্তার কাছে চতুর্দিকেই পুলিশের ছড়াছড়ি। গতি কমিয়ে চালানো হচ্ছে আলিপুর এবং ঠাকুরপুকুরগামী গাড়িঘোড়া। গাড়ির গতিবিধি এবং রাস্তা পারাপার করা জনতার দিকে নজর রাখছে পুলিশ। ব্যস্ত ডায়মন্ড হারবার রোডের একাধিক জায়গায় ‘ড্রপ গেট’ এবং পুলিশি ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। মূলত ফুটপাত এবং রাস্তার সংযোগস্থল— যে জায়গা দিয়ে পথচারীরা রাস্তা পারাপার করেন, সেখানে এই ‘ড্রপ গেট’ লাগানো হয়েছে।

শনিবার সকালে পথ নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে আসেন সিপি। শুক্রবারের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘রাত থেকেই পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমি নিজে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছি। দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, কলকাতার মধ্যে তুলনা করে দেখে নিন। সব থেকে ভাল পথ নিরাপত্তা রয়েছে কলকাতাতেই। সব সময় গাড়ির ভুল থাকে না। পথচারীদেরও ভুল থাকে। তাই পথচারীদের মধ্যেও সচেতেনতা বাড়াতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বড় রাস্তা পার হওয়ার সুবিধার্থে রাস্তার মাঝে আমরা একটা করে আইল্যান্ড করে দেব । যাতে মানুষ মাঝখানে এসে দাঁড়াতে পারে। সচেতনতা এক রাতে আসে না। সময়ের সঙ্গে আসে। মানুষ যদি পুলিশকে সহায়তা না করে, তা হলে হবে না। কিছু মানুষ এখনও সহায়তা করছেন না। আগের বছরগুলির রেকর্ড দেখতে হবে। তা হলেই বোঝা যাবে দুর্ঘটনা বেড়েছে না কমেছে।’’

তবে কলকাতার রাস্তায় গাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করেন যাঁরা, তাঁদের একাংশের দাবি, শহরে গাড়ির গতিবেগ যে গণ্ডির মধ্যে বেঁধে রাখা হয়েছে, তাতে এমন দুর্ঘটনা ঘটারই কথা নয়। তাঁদের দাবি, কলকাতার গাড়ির গতিবেগ মুম্বই, দিল্লির মতো বড় শহরগুলির তুলনায় অনেকটাই কম। মা উড়ালপুল এবং রেড রোডের মতো রাস্তায় গতিবেগ ঘণ্টা প্রতি ৩৫-৬০ কিলোমিটারে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তাই কলকাতার রাস্তায় গাড়ি চলে ধীর গতিতে।

দমদম থেকে প্রতি দিন মা ফ্লাইওভার হয়ে গড়িয়াহাটে যাতায়াত করেন বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত চিরঞ্জিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘অন্যান্য শহরে গাড়ি কলকাতার থেকে বেশি গতিবেগে চালানো যায়। তাই দুর্ঘটনার প্রবণতা বেশি হয়। কলকাতায় গতিবেগজনিত নিয়মের কারণে ফাঁকা রাস্তাতেও ধীরে গাড়ি চালাতে হয়। এতে কোনও জায়গাতেই দুর্ঘটনার ঘটার কথা নয়। বরং তাতে যানজট বেশি হয়। তাই বেহালায় যা হয়েছে তা কখনওই হওয়ার কথায় নয়। পুলিশের উচিত সবাই নির্দিষ্ট গতিবেগ মেনে গাড়ি চালাচ্ছে কি না তা সুনিশ্চিত করা।’’

অন্য একটা অংশের মতে কলকাতায় পথ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী পুলিশের লাগানো গার্ডরেল এবং ব্যারিকেড। তাঁদের দাবি, পুলিশের তরফে পথ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এত ব্যারিকেড এবং গার্ডরেল লাগানো হয়েছে যে, তাতে দুর্ঘটনা বাড়ে বই কমে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতার এক গাড়িচালক বলেন, ‘‘রাতে ফাঁকা রাস্তায় গাড়ির গতি একটু বেশি থাকে। কিন্তু রাস্তায় গার্ডরেল এমন ভাবে রাখা থাকে যে, তাতে দুর্ঘটনার প্রবণতা বাড়ে। প্রচণ্ড ঝড়ের সময়েও গার্ডরেল সরে গিয়ে বিপত্তি বাড়তে পারে।’’

বেহালার ঘটনার পর লালবাজার নির্দেশ দিয়েছে, আপাতত সকাল ৬টার পর কলকাতায় কোনও ট্রাক ঢুকবে না। শনিবার থেকেই এই নিয়ম চালু হয়েছে। সমস্ত ট্রাফিক গার্ডকে ইতিমধ্যেই মৌখিক ভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি হোক বা বেসরকারি— কলকাতার সমস্ত স্কুলের বাইরে যান নিয়ন্ত্রণ ও ভিড় সামলানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।

Vineet Goyal Behala Road Accident CP Kolkata Police Road safety

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।