করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ফের বাড়ছে রাজ্যে। প্রতীকী ছবি
করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ফের বাড়ছে রাজ্যে। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে গত ছ’দিনে মারা যাওয়া সাত জনের মধ্যে ছ’জনেরই বয়স আশির উপরে। তাই এ বার কোমর্বিডিটিতে আক্রান্ত বয়স্কদের বেশি সতর্ক থাকার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু বাস্তব বলছে, সেই সতর্কতা একেবারেই চলে গিয়েছে!
সম্প্রতি রাজ্যের তরফে কোভিড-বিধি মেনে চলার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাউকেই কার্যত সেই সব মেনে চলতে দেখা যাচ্ছে না। এমনকি, কারও মধ্যে করোনার ন্যূনতম উপসর্গ রয়েছে বুঝে পরীক্ষা করানোর কথা বলা হলেও বেশির ভাগই রাজি হচ্ছেন না বলে অভিযোগ চিকিৎসকদের। এই সব কারণে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কম বয়সিদের ন্যূনতম উপসর্গ দেখা দিলেও, বয়স্কদের জন্য সেটাই মারাত্মক হয়ে উঠছে। শহরের এক সংক্রামক রোগের চিকিৎসকের কথায়, “আগেও বার বার এ নিয়ে বলা হয়েছিল। এখন ফের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বয়স্কদের প্রতি বাড়তি সতর্কতা নিতে বলা হচ্ছে। না-হলে নিজের অজানতেই পরিবারের বয়স্ক সদস্যকে সংক্রমিত করার ঝুঁকি বাড়ছে।”
মার্চের মাঝামাঝি থেকে রাজ্যে করোনার লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী। দৈনিক সংক্রমণ ইতিমধ্যেই ২০০ ছাড়িয়েছে। অ্যাক্টিভ রোগীর তুলনায় হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কমহলেও, চিকিৎসাধীন অধিকাংশেরই বয়স সত্তরের উপরে। যেমন,সোমবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২০ জনের মধ্যে ৬০ শতাংশই সত্তরোর্ধ্ব। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বয়সকালে এমনিতেই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, ক্যানসার-সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন অনেকে। সাম্প্রতিক কালে ওই সমস্ত কোমর্বিডিটির কারণেই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বয়স্কেরা। এর পরে করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় পুরনো সেই রোগ আরও মাথাচাড়া দিচ্ছে। ফলে তাঁর অবস্থা সঙ্কট জনক হয়ে পড়ছে। শহরের এক চিকিৎসকের কথায়, “অনেক সময়ে সিওপিডি-তে আক্রান্ত বয়স্কেরা নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। পরে তাঁর কোভিড ধরা পড়ছে। তখন নিউমোনিয়া আরও মাথাচাড়া দিচ্ছে। তাতে শারীরিক অবস্থা মারাত্মক খারাপ হয়ে শেষে মৃত্যু হচ্ছে।”
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের বক্ষরোগ চিকিৎসক কৌশিক চৌধুরী জানাচ্ছেন, শেষ কয়েক দিনে বেশি বয়স্করাই সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁরকথায়, “করোনায় আক্রান্ত হয়ে বা প্রতিষেধক নিয়ে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল, তার কার্যকারিতাএখন প্রায় চলে গিয়েছে। কিন্তু কম বয়সিরা সংক্রমিত হলেওতাঁদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা লড়াই করে তা প্রতিহত করতে পারছে। যেটা বয়স্কদের পক্ষে একেবারেই সম্ভব হচ্ছে না।” দেশে ওমিক্রনের উপপ্রজাতি এক্সবিবি.১.১৬ (আর্কটুরাস) এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, যা ওমিক্রনের থেকেও বেশি সংক্রামক। এ রাজ্যে অবশ্য এখনও তার অস্তিত্ব মেলেনি। ওমিক্রনেরই আর একটিউপপ্রজাতি এক্সবিবি.১.৫ (ক্র্যাকেন) সংক্রমণ ছড়াচ্ছে।
এ বার সামান্য জ্বর, কাশি, সর্দিতে আক্রান্ত হওয়ায় কেউই তেমন ভাবে বিধি মানছেন না। আরসেটাই বয়স্কদের পক্ষে সমস্যার সৃষ্টি করছে বলে অভিমত জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের। তিনি বলেন, “যে কোনও সংক্রমণই শিশু ও বিশেষত বয়স্কদের কাছে ঝুঁকির। কারণ, বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীরে প্রবেশ করা সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করতে পারে না। তাই তাঁদের প্রতি বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।” এ রাজ্যেও যে কোনও মুহূর্তে ‘আর্কটুরাস’ ঢুকে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে বলেও মত চিকিৎসকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy