Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Tangra Murder Case

গোপন জবানবন্দির আবেদন জানাবেন অভিযোগকারিণীই

ঘটনার তিন রাত পরেও রহস্য কাটল না ট্যাংরার অভিযোগ ঘিরে।

ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক দল। বৃহস্পতিবার, গোবিন্দ খটিক রোডে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক দল। বৃহস্পতিবার, গোবিন্দ খটিক রোডে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:১০
Share: Save:

ঘটনার তিন রাত পরেও রহস্য কাটল না ট্যাংরার অভিযোগ ঘিরে। শনিবার রাত পর্যন্তও জানা গেল না, ঘটনার রাতে অভিযোগকারিণীকে হাত ধরে টেনে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলার চেষ্টা হয়েছিল কি না। যদিও পুলিশ এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে গত কয়েক দিনের মতো শনিবার সন্ধ্যাতেও অভিযোগকারিণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাঁকে অকুস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণেরও চেষ্টা হয়।

শুক্রবার অভিযোগকারিণীর শারীরিক পরীক্ষাও করানো হয়েছে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানতে চান, তাঁর বাঁ হাতে ব্যথা রয়েছে কি না। হাতে রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগকারিণীর দাবি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার তিন দিনের মাথায় পরীক্ষা হল। কিন্তু হাত ধরে টানলে এত পরে কী-ই বা পাওয়া যেতে পারে?’’

গত মঙ্গলবার রাতে ট্যাংরার গোবিন্দ খটিক রোডে অ্যাম্বুল্যান্সের ধাক্কায় এক প্রৌঢ়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃতের পুত্রবধূর দাবি, বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার সময়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স তাঁর পথ আটকায়। চালকের পাশের আসনে বসা এক যুবক তাঁর বাঁ হাত ধরে টেনে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলার চেষ্টা করে। চিৎকার শুনে তাঁর শ্বশুর ও বাকিরা ছুটে এসে অ্যাম্বুল্যান্সটিকে আটকানোর চেষ্টা করেন। সেটি পালাতে গিয়ে শ্বশুরকে ধাক্কা মেরে বেরিয়ে যায়। যার জেরে প্রায় ৬৩ মিটার দূরে গিয়ে পড়েন প্রৌঢ়। রাতেই এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃদ্ধকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

প্রৌঢ়ের মৃত্যুর আগে ৩০৮ ধারায় (অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা) মামলা হলেও পরে ৩০৪ ধারা (অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানো) যুক্ত করা হয়। তবে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগটিকে পুলিশ গুরুত্ব দিচ্ছে না দাবি করে বিক্ষোভ দেখান মৃতের আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা। এর পরে শিয়ালদহ আদালতে এই মামলার সঙ্গে ৩৫৭ (অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ), ৩৪১ (অন্যায় ভাবে বাধাদান) এবং ৩৪ নম্বর ধারা (একই উদ্দেশ্যে অপরাধ ঘটানোর চেষ্টা) যুক্ত করে পুলিশ। অ্যাম্বুল্যান্সের চালক এবং সহযোগী হিসেবে আব্দুর রহমান ও তাজউদ্দিন নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ওই রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে প্রত্যক্ষদর্শীদের পাশাপাশি ওই বধূ ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এ দিন সন্ধ্যায় ফের অভিযোগকারিণীর বাড়ি যান গোয়েন্দারা। অকুস্থলে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেন হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীরা। অভিযোগকারিণীর আইনজীবী লাল্টু দে-র দাবি, ‘‘পুলিশ বলছে, ওই প্রৌঢ় রাস্তার মাঝে চলে এসেছিলেন। দ্রুত গতিতে অ্যাম্বুল্যান্স ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। হাত ধরে টেনে তোলার চেষ্টার মতো কিছু ঘটে না থাকলে অভিযোগকারিণী ধৃত অভিযুক্তদের দেখেই চিনতে পারলেন কী করে? দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্স বেরিয়ে গেলে তো চিনতে পারার কথা নয়। পুলিশ এখনও অভিযোগকারিণীর গোপন জবানবন্দির দাবি জানায়নি আদালতে। সোমবার আমরাই সেই দাবি জানাব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Tangra Murder Case Secret Confession
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE