বিপজ্জনক: রাস্তার পাশে হাঁ হয়ে রয়েছে ম্যানহোল। দমদমের সাতগাছি এলাকায়। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
দৃশ্য এক: স্টেশন সংলগ্ন রাস্তার দু’দিকেই বসেছে বাজার। সেখানে আসা ক্রেতারা যে যেখানে পেরেছেন, গাড়ি রেখে দিয়েছেন। পথের ধারে সাইকেল ভ্যান দাঁড় করিয়েই চলছে বিকিকিনি। যার ফলে রাস্তার পরিসর কমতে কমতে এখন দুর্বিষহ অবস্থা। গাড়ি, সাইকেল ভ্যান, দোকান আর মানুষের ভিড়ে কার্যত নড়াচড়ারও জায়গা থাকে না। দমদম স্টেশন থেকে নাগেরবাজার যাওয়ার পথে এটাই এখন প্রতিদিনের ছবি।
দৃশ্য দুই: দমদম রোড ও যশোর রোডের সংযোগস্থলে নাগেরবাজার মোড়ে বাস এবং অটোর স্ট্যান্ড। পুলিশের নজরদারি সত্ত্বেও মাঝেমধ্যেই মোড়ের কাছে যাত্রী তোলার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকে বাস। সেই সঙ্গে যত্রতত্র গাড়ি রাখার সমস্যা তো রয়েছেই। ফুটপাত জুড়ে পর পর দোকান। তাই হাঁটাচলার জন্য রয়ে গিয়েছে একচিলতে পরিসর। ভিড়ের সময়ে সেখানে গুঁতোগুঁতি-ঠেলাঠেলি লেগেই থাকে। বাধ্য হয়ে তাই ফুটপাত ছেড়ে পথেই নামতে হয় পথচারীদের।
দৃশ্য তিন: দমদম রোডের উপরেই পড়ে রয়েছে বালি আর পাথরকুচির স্তূপ। অনেক জায়গায় আবার ফুটপাতের অস্তিত্বই নেই। তা চলে গিয়েছে দখলদারদের হাতে।
এই সব খণ্ডচিত্র শুধুমাত্র দমদম স্টেশন রোড কিংবা যশোর রোডের নয়, দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় এ ভাবেই চলছে দখলদারির রাজত্ব।
এই সমস্যা অবশ্য নতুন নয়, দীর্ঘদিনের। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকায় জনসংখ্যার ঘনত্বের নিরিখে রাস্তার পরিসর কম। ফলে প্রায় সর্বত্রই সারাক্ষণ ভিড় লেগে থাকে। এই অবস্থাতেও রাস্তার ধারে দোকান, বাজার, অবৈধ পার্কিং, ইমারতি দ্রব্যের স্তূপ— কিছুরই কমতি নেই। যার অবধারিত পরিণাম হিসেবে তৈরি হচ্ছে যানজট। দুর্ভোগে পড়ছেন অসংখ্য মানুষ।
সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পুরসভার কর্তারা। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুকান্ত সেনশর্মা জানালেন, মানুষের যে ভোগান্তি হচ্ছে, সে ব্যাপারে তাঁরা ওয়াকিবহাল। পুর বোর্ড পুরোপুরি তৈরি হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট পুর প্রতিনিধিদের নিয়ে একযোগে রাস্তা দখলমুক্ত করে পথচারী ও গাড়িচালকদের দুর্ভোগ কমানোটাই হবে প্রাথমিক লক্ষ্য।
নাগেরবাজার এলাকার এক বাসিন্দা সুমিতা রায়ের কথায়, ‘‘এর আগে পুরসভা বেশ কয়েক বার অভিযান চালিয়ে রাস্তা উন্মুক্ত করতে পেরেছিল। কিন্তু ফের যে কে সে-ই। পরিস্থিতির আর পরিবর্তন হয় না।’’ স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘এই পুর এলাকায় ফাঁকা জায়গা নেই বললেই চলে। বাড়ির মেরামতি বা নির্মাণকাজ হলে তার জন্য ইমারতি দ্রব্য রাখার জায়গা পাওয়াই মুশকিল। বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, অলিগলি তো দূর অস্ত্, দমদম রোড, যশোর রোড, নাগেরবাজার মোড় এবং বাগুইআটির কাছে ভিআইপি রোড থেকে নাগেরবাজার যাওয়ার রাস্তাতেও পথচারীদের হাঁটাচলার জায়গা থাকে না। তাঁরা বলছেন, ‘‘রুজি-রোজগারের জন্য দোকান-বাজার তো থাকবেই। কিন্তু সব কিছুকেই শৃঙ্খলায় বাঁধা প্রয়োজন। তাতে সকলেরই লাভ।’’
সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে দক্ষিণ দমদম পুরসভার নব নির্বাচিত চেয়ারপার্সন কস্তুরী চৌধুরী বলেন, ‘‘সমস্যা রয়েছে। যান চলাচল এবং পথচারীদের যাওয়া-আসার জন্য রাস্তা ও ফুটপাত উন্মুক্ত করার চিন্তাভাবনা রয়েছে পুরসভার। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy