E-Paper

খরচ ১৮ কোটি, টেন্ডার-অস্বচ্ছতায় থমকে ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের সংস্কার

প্রায় ২৭ বছর আগে রাজ্য এবং জেলা স্তরে খেলাধুলোর চর্চা বাড়াতে তৈরি হয়েছিল এই ইনডোর স্টেডিয়াম।

হাওড়া ডুমুরজলায় সবুজ সাথী স্টেডিয়াম।

হাওড়া ডুমুরজলায় সবুজ সাথী স্টেডিয়াম। ছবি দীপঙ্কর মজুমদার।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ১০:০৫
Share
Save

রাজ্য ও আন্তর্জাতিক স্তরে খেলাধুলোর চর্চা কেন্দ্র হিসাবে হাওড়ার ডুমুরজলায় তৈরি হয়েছিল জেলার একমাত্র ইনডোর স্টেডিয়াম। যার বর্তমান নাম সবুজ সাথী ক্রীড়াঙ্গন। রাজ্য পুর দফতরের পরিকল্পনায় ২০১৯ সালে এই স্টেডিয়ামের আমূল সংস্কারের কাজ শুরু করেছিল হাওড়া পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, সেই সংস্কারের কাজ ইতিমধ্যেই প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়ে গিয়েছে। তার জন্য খরচ হয়েছে ১৮ কোটি টাকা। কিন্তু, এর পরে হাওড়া পুরসভার টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে পুর দফতর অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দেয়। ফলে আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও গত পাঁচ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বাকি ২০ শতাংশ কাজ।

প্রায় ২৭ বছর আগে রাজ্য এবং জেলা স্তরে খেলাধুলোর চর্চা বাড়াতে তৈরি হয়েছিল এই ইনডোর স্টেডিয়াম। কিন্তু ইনডোর গেমসের যথেষ্ট পরিকাঠামো না থাকায় সেখানে কোনও খেলার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রই তৈরি করা সম্ভব হয়নি। বাম আমলে এই স্টেডিয়ামটি মাঝেমধ্যে খেলা বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার করা হলেও তৃণমূলের আমলে স্টেডিয়ামটি কখনও পুরসভার বিন রাখার জায়গা, কখনও সরকারের সবুজ সাথী সাইকেল বিতরণ কেন্দ্র, কখনও বিভিন্ন টিভি সিরিয়ালের শুটিংয়ের জায়গা হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে।

২০১৩ সালে হাওড়া পুরসভায় ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। এর পরে ২০১৯ সালে স্টেডিয়ামটি সংস্কারে উদ্যোগী হয় পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। সংস্কারের জন্য প্রথমে ১৪ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ ধার্য হলেও পরে তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়। পুরসভা সূত্রের খবর, সংস্কারের জন্য বরাত দেওয়া হয়েছিল যে বেসরকারি সংস্থাকে, তারা স্টেডিয়ামে দর্শকাসন সংখ্যা তিন হাজার থেকে বাড়িয়ে ছ’হাজার করে। এ ছাড়া, গোটা স্টেডিয়ামটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করার জন্য ১২০০ কিলোওয়াটের বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়। খেলোয়াড়দের বিশ্রাম-কক্ষ, লাইব্রেরি, কমিউনিটি হল, অফিসঘর তৈরি করা হয়। ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের দিকে স্টেডিয়ামের সামনের অংশের সৌন্দর্যায়ন করা হয়। শুধুমাত্র বাকি ছিল শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র কেনার কাজ।

পুরসভা সূত্রের খবর, ওই বেসরকারি সংস্থার পাওনা বাবদ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা দিতে না পারায় রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হয় পুরসভা। তখন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে জানানো হয়, তাদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখেই এই বিপুল অর্থ বিনা অনুমতিতে খরচ করা হয়েছে। কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশও দেয় পুর দফতর। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই তদন্ত রিপোর্ট সম্প্রতি পুর দফতরে জমা পড়েছে। এর পরেই পুর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, স্টেডিয়াম সংস্কারের কাজের জন্য বরাতের প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ। একটি মাত্র সংস্থা আবেদন করেছিল এবং আশ্চর্যজনক ভাবে তাদেরই বরাত দেওয়া হয়েছে। এমনকি, বরাত পেলে রাজ্য সরকারের কাছে যে দুই শতাংশ হারে ‘সিকিয়োরিটি ডিপোজ়িট রাখতে হয়, তা-ও মাত্র এক শতাংশ রাখা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ নিয়ম-বর্হিভূত।

হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই ঘটনা তদানীন্তন তৃণমূল বোর্ডের সময়ে ঘটেছিল। এই জটিলতায় স্টেডিয়ামটি সংস্কারের বাকি কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। বকেয়াও মেটানো যাচ্ছে না ঠিকাদার সংস্থার। তবে আদালতের নির্দেশ মেনে আমরা স্টেডিয়ামটি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভাড়া দেওয়ার জন্য খুলে দিয়েছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Howrah

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।