ফাইল চিত্র।
এক দিকে রাতের কার্ফুতে ছাড়, অন্য দিকে বাজি নিয়ে কড়াকড়ি। কালীপুজোর আগে শুক্রবার এই দুই বড় ঘোষণা নিয়েই চর্চা চলল দিনভর। সব রকম বাজির বিক্রি এবং ফাটানোর উপরে কলকাতা হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই। তবে তাঁদের প্রশ্ন, দুর্গাপুজোয় ছাড়ের পরিণতি দেখেও কালীপুজোয় একই পথে কেন হাঁটল প্রশাসন? বাজি নিয়ে কড়াকড়ির ‘বজ্র আঁটুনি’ বিফলে যাবে না তো নৈশ বিধিতে ছাড়ের ‘ফস্কা গেরো’য়?
শুক্রবার ‘গ্রিন ক্র্যাকার’ বা সবুজ বাজি-সহ সব রকমের বাজি পোড়ানো এবং বিক্রি নিষিদ্ধ করার সময়ে হাই কোর্ট জানায়, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে গিয়েছেন, এমন মানুষদের পক্ষে যে কোনও বাজির ধোঁয়াই ক্ষতিকর। বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার মাথায় রেখেই এই রায় দেওয়া হচ্ছে। আদালত আরও জানায়, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সবুজ বাজি ফাটানোর জন্য দু’ঘণ্টা ছাড় দিলেও তা চিহ্নিত করার উপায় পুলিশের কাছে নেই। তাদের পক্ষে যন্ত্র হাতে রাস্তায় ঘোরাও সম্ভব না। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রশাসন জানিয়ে দেয়, কালীপুজোর জন্য আগামী ২ থেকে ৫ নভেম্বর রাত ১১টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত নৈশ কার্ফুর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হচ্ছে। যা দেখে এক করোনাজয়ীর মন্তব্য, ‘‘বেঁচে থাকার অধিকার মেনে বাজি ফাটানো নিষিদ্ধ হচ্ছে। অথচ, সেই অধিকারেই তো সংক্রমণ বাড়তে দেখে আরও কড়া ভাবে রাতের কার্ফু বলবৎ করা উচিত ছিল!’’
গত বছরও করোনার জন্য বাজি নিষিদ্ধ করেছিল আদালত। তার পরেও দেদার বাজি ফাটার অভিযোগ এসেছিল শহরের নানা প্রান্ত থেকে। রাত যত বেড়েছিল, শব্দবাজির তাণ্ডবে ততই দিশাহারা হয়ে গিয়েছিল পুলিশ। কিছু ক্ষেত্রে বিস্ফোরক আইনে মামলা করে কড়া পদক্ষেপ করা হয়। তাতেও বাজি-বিধি কার্যকর করায় পুলিশের ব্যর্থতা চাপা পড়েনি। অনেকের প্রশ্ন, এ বারেও কি সেই অবস্থা হবে? কার্ফুতে ছাড়ের সুযোগে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হবে না তো?
কলকাতা পুলিশের যদিও দাবি, রায় ঘোষণার পরেই দুপুর থেকে শহরের মোড়ে মোড়ে নাকা-তল্লাশি শুরু হয়েছে। দুই ২৪ পরগনা এবং হাওড়া থেকে যে সব গাড়ি শহরে ঢুকেছে, তার সব ক’টি থামিয়ে তল্লাশি চলেছে। লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তার মন্তব্য, ‘‘রাতের কার্ফু তুলে নেওয়ার ফল কী হল, সেটা পুজো না কাটলে বোঝা যাবে না। সে জন্য বসে না থেকে আগামী ক’দিন দফায় দফায় নাকা-তল্লাশি চলবে।’’ এ দিন স্ট্র্যান্ড রোড-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ৭০০ কেজির বেশি বাজি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন চার জন। পুলিশের একটি অংশের বক্তব্য, গত বছর এই ‘হোম ওয়ার্কেই’ ভুল হয়েছিল। যত দিনে কড়াকড়ি শুরু হয়েছিল, তার আগেই শহরে বাজি ঢুকে গিয়েছিল।
পুলিশের এই তৎপরতায় প্রমাদ গুনছেন বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশ। সব রকমের বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ হওয়ায় মজুত বাজির বিরুদ্ধে পুলিশি তৎপরতা বাড়তে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। সেগুলিকে মজুত রাখা বিস্ফোরক ধরে পুলিশ যাতে কড়া পদক্ষেপ না করে, সেই অনুরোধ জানিয়ে লালবাজারে চিঠি দিচ্ছেন তাঁরা। তবে সে সবের থেকেও পুলিশের এখন বড় চিন্তা, রাতের ছাড়ের মধ্যেও বাজি-জব্দের পথ নিশ্চিত করা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy