Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bike Accidents In Kolkata

রাতের শহরে পর পর বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু, নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন

চলতি মাস শেষ হতে এখনও এক সপ্তাহ বাকি। লালবাজার সূত্রের খবর, চলতি মাসে কলকাতা পুলিশ এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪ ০৭:২৪
Share: Save:

রাতের শহরে নিরাপত্তার ঢিলেমির সুযোগ নিয়েই কি বাড়ছে বাইকের দৌরাত্ম্য? তার জেরেই কি ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু? গত কয়েক সপ্তাহে রাতের শহরে পর পর মোটরবাইক দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুতে আপাতত এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। পুলিশের নজরদারি নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেমনই প্রশ্ন উঠেছে বাইকচালকদের সচেতনতা নিয়েও।

চলতি মাস শেষ হতে এখনও এক সপ্তাহ বাকি। লালবাজার সূত্রের খবর, চলতি মাসে কলকাতা পুলিশ এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রাত ১১টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে, যখন রাস্তায় তুলনামূলক ভাবে গাড়ি কম থাকে, সেই সময়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১০। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন দিনে ন’টি পৃথক দুর্ঘটনায় ওই ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন মোটরবাইকের চালক বা আরোহী।

সাম্প্রতিকতম ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে। ওই রাতে ১টা নাগাদ কাঁকুড়গাছি থেকে ফেরার পথে গাড়ির সঙ্গে ধাক্কায় মৃত্যু হয় শিবাজী ভট্টাচার্য নামে এক বাইকচালকের। রবিবার ভোরে রবীন্দ্র সরোবর থানা এলাকায় ট্যাক্সির সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যান বাইক-আরোহী এক তরুণী। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে বাঘা যতীন উড়ালপুলের উপরে বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল সমীর গায়েন নামে এক যুবকের। তার দিন তিনেক আগে সার্ভে পার্ক থানা এলাকার ই এম বাইপাসে ভোরে রাস্তায় রাখা গার্ডরেলে ধাক্কা মারে একটি বেপরোয়া বাইক। সেখানেও মৃত্যু হয় বছর আঠারোর তরুণের। এগুলির পাশাপাশি চলতি মাসে গড়িয়াহাট, হেস্টিংস-সহ একাধিক থানা এলাকায় রাতের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মোটরবাইক চালকের।

দিনের বেলায় শহরের রাস্তায় পর্যাপ্ত পুলিশি বন্দোবস্ত থাকলেও রাতে সেই নজরদারি তুলনায় কমে যায় বলে অভিযোগ। রাত ১১টার পর থেকে বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশের নজর পড়ে না বলেও একাধিক বার অভিযোগ তুলেছেন শহরবাসীর একাংশ। সেই ঢিলেমির সুযোগ নিয়েই রাতের শহরে বেপরোয়া বাইকের দৌরাত্ম্যের অভিযোগও দীর্ঘদিনের। কখনও পিছনে একাধিক জনকে বসিয়ে কমবয়সিদের বাইক ছোটাতে দেখা যায়, কখনও রাতের শহরে চলে ‘জয়রাইড’। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাইকচালক বা আরোহীর মাথায় হেলমেট থাকে না। রাতের শহরে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে যে কয়েক জন পুলিশকর্মীকে দেখা যায়, তাঁদেরও বিধিভঙ্গ হলেও বিশেষ ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না বলে অভিযোগ।

যদিও নিচুতলার পুলিশকর্মীদের অধিকাংশের দাবি, রাতে বিধি ভাঙা বেপরোয়া বাইক আটকানোর ক্ষেত্রে ঝুঁকি অনেক বেশি। এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘রাতে তীব্র গতির বাইক বা গাড়ির থামানোর চেষ্টা করলেই যে তারা থামবে, তার নিশ্চয়তা কোথায়? ডিউটি করছি বলে তো সব সময়ে প্রাণের ঝুঁকি নেওয়া যায় না। আর ক্যামেরা তো থাকে, যা ব্যবস্থা তার সাহায্যেই নেওয়া হয়।’’

রাতের শহরে পুলিশের এই প্রযুক্তি নির্ভরতা বাইকের দৌরাত্ম্য বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকেই। লালবাজার যদিও নজরদারির ঢিলেমির অভিযোগ মানতে নারাজ। এক কর্তার কথায়, ‘‘যে দুর্ঘটনাগুলি হয়েছে, সেখানে পুলিশি ঢিলেমির অভিযোগ আসেনি। রাতে থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডে পর্যাপ্ত পুলিশ থাকেন। লালবাজারের বিশেষ দলও ঘোরে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy