প্রতীকী চিত্র।
এ যেন অস্ত্রের ভাণ্ডার!
গ্রেফতার হওয়া ভুয়ো আইপিএস রাজর্ষি ভট্টাচার্যের বাড়িতে হানা দিয়ে মঙ্গলবার রাতে এই উপলব্ধিই হয়েছে লালবাজারের গোয়েন্দাদের। পুলিশ সূত্রে বুধবার জানা গিয়েছে, বেলঘরিয়ার পি সি ব্যানার্জি লেনে রাজর্ষির দোতলা বাড়ি থেকে মিলেছে মোট সাতটি আগ্নেয়াস্ত্র। যার মধ্যে রয়েছে রাইফেল, দো-নলা বন্দুক, এয়ারগান, রিভলভার এবং পিস্তল। এ ছাড়াও তল্লাশিতে মিলেছে প্রচুর কার্তুজ।
এত আগ্নেয়াস্ত্র এক জন ভুয়ো পুলিশের কাছে আসে কী করে? তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় রাজর্ষি জানিয়েছে, তার সব ক’টি আগ্নেয়াস্ত্রেরই লাইসেন্স রয়েছে। সে উত্তর কলকাতার রাইফেল শুটিং ক্লাবের সদস্য। তার বাড়ি থেকে যে রাইফেল উদ্ধার হয়েছে, তা শুটিং অনুশীলনের জন্যই ব্যবহার করা হত। আর উদ্ধার হওয়া রিভলভারটি তার দেহরক্ষীর। কিন্তু এয়ারগান বা দো-নলা বন্দুকটি কী কাজে ব্যবহার করা হত, সে সম্পর্কে রাজর্ষি কোনও স্পষ্ট জবাব দিতে পারেনি বলেই পুলিশ সূত্রের খবর। শুটিংয়ের অনুশীলন বা তার দেহরক্ষীর রিভলভার ব্যবহারের বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
তাঁকে আইনি জটিলতায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতারির হুমকি দিয়ে দু’লক্ষ টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে গত সোমবার পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তি। সেই অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে পুলিশ রাজর্ষিকে গ্রেফতার করে। সেই সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয় পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দা মহম্মদ সিকন্দর ও হাওড়ার জগাছার অভিজিৎ দাস ওরফে সন্তুকে। জানা যায়, আইপিএস সেজে রীতিমতো ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল রাজর্ষি। নীল বাতির পাশাপাশি আইপিএস-দের মতোই স্টার লাগানো গাড়িতে চড়ে ঘুরত সে। সিকন্দর ছিল রাজর্ষির গাড়িচালক। রাজর্ষির সঙ্গে সর্বক্ষণ থাকত বন্দুকধারী নিরাপত্তারক্ষীও। তাদেরই এক জন অভিজিৎ। রাজর্ষি নিজেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) ডেপুটেশনে থাকা আধিকারিক বলে পরিচয় দিত। এমনকি, নিজেকে গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-এর কর্মী বলেও দাবি করত সে। তার এই সব পরিচয় পেয়ে তটস্থ হয়ে থাকতেন আত্মীয় এবং প্রতিবেশীরা।
ধৃতদের মুখোমুখি বসিয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পরে রাজর্ষির বাড়িতে হানা দেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি স্টার লাগানো আইপিএসের ব্লেজ়ারও মিলেছে। এ ছাড়াও ছিল বেশ কয়েকটি খাকি উর্দি। সেগুলি সম্পর্কে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ধৃতের গাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া তিন লক্ষ টাকার উৎস সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, রাজর্ষি বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেলে যেত। সেখানেই ভাব জমাত ‘টার্গেটদের’ সঙ্গে। তার পরেই শুরু হত ‘কাজের’ কথাবার্তা। জানা গিয়েছে, সে ভাল ছবি আঁকতে পারে। ছবি কিনে প্রভাবশালীদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করত। পুলিশের অনুমান, সে বিভিন্ন জায়গা থেকে ছবি কিনে বড় শিল্পীদের আঁকা বলে লোকজনের কাছে চড়া দামে বিক্রি করত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy