প্রতীকী ছবি।
সাপে কাটার আট ঘণ্টার মধ্যে ‘এএসভি’ (অ্যান্টি স্নেক ভেনম) দেওয়া জরুরি। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে এএসভি না পেয়ে, এ দিক-ও দিক ঘুরে সময় নষ্ট করে বহু ক্ষেত্রেই প্রাণসংশয় ঘটে। এমন পরিস্থিতি এড়াতে খাওয়ার ট্যাবলেটের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এ বার শুরু হচ্ছে কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ‘ভ্যারেসপ্লেডিব মিথাইল’ নামের ওই ট্যাবলেটটি খাওয়ার পাশাপাশি এএসভি-ও নিতে হবে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সাধারণত স্যালাইনের মাধ্যমে অ্যান্টি-ভেনম দেওয়া হয়। তাতে এএসভি-র ২০টি ভায়াল মেশানো হয়। কখনও তা ৩০-৪০টাও লেগে যায়। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে, ওই ট্যাবলেট প্রয়োগের ফলে এএসভি-র ভায়াল কম লাগছে কি না, দু’টি ওষুধের একসঙ্গে প্রয়োগ মৃত্যুর হার আদৌ কতটা কমাচ্ছে এবং আট ঘণ্টা পরেও অ্যান্টি-ভেনম দেওয়া যাবে কি না। পরীক্ষামূলক এই গবেষণায় ওই ট্যাবলেটটি উত্তীর্ণ হলে একটা বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে, কিছুটা দেরিতে এএসভি শরীরে ঢুকলেও সাপে কাটা রোগীর সমস্যা হবে না। অর্থাৎ, এই ওষুধের ফলে হাতে বাড়তি সময় পাওয়া যাবে।
ন্যাশনাল মেডিক্যালের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর, চিকিৎসক পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, এখন সাপে কাটা রোগীদের যে এএসভি দেওয়া হচ্ছে, সেগুলির কার্যকারিতা অনেকটা কম। ভিন্ রাজ্য থেকে সেগুলি আনাই যার মূল কারণ। তাঁর কথায়, ‘‘আগে এখানকার সাপেদের উপরে ভিত্তি করে বেঙ্গল কেমিক্যাল, পাস্তুর ল্যাবরেটরিতে তৈরি হত এএসভি। এখন ভিন্ রাজ্য থেকে সেগুলি আসছে। সেখানকার সঙ্গে এখানকার সাপের বৈশিষ্ট মিলছে না, তাই ভেনম আলাদা হচ্ছে। ফলে অ্যান্টি-ভেনম দিলেও অনেক সময়ে রোগী বাঁচছেন না। সেই কারণে এই ট্যাবলেটটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’
তিনি জানাচ্ছেন, ডায়মন্ড হারবার-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের স্বাস্থ্যকেন্দ্র, গ্রামীণ হাসপাতালগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সাপে কাটা রোগী এলেই তৎক্ষণাৎ ন্যাশনাল মেডিক্যালে খবর পাঠাতে হবে। ওই রোগীকেও সেখানে পাঠাতে হবে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগী এলে তাঁকে এএসভি এবং ভ্যারেসপ্লেডিব মিথাইল ট্যাবলেট একসঙ্গে দেওয়া হবে। রাজ্যে এই গবেষণার ফেসিলিটেটর স্নেহেন্দু কোনার বলেন, ‘‘যদি ট্যাবলেটটির কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়, তা হলে ভবিষ্যতে সেটি বাড়িতেই খাওয়ানো যাবে। তাতে হাসপাতাল থেকে অ্যান্টি-ভেনম নিতে সময় লাগলেও রোগীর বিপদের আশঙ্কা কমবে।’’ ন্যাশনাল মেডিক্যাল-সহ দেশের আরও তিনটি হাসপাতালে হচ্ছে এই ট্রায়াল। এ দেশে মোট ১১০ জনের উপরে ট্যাবলেটটি প্রয়োগ করা হবে। ৫০ শতাংশ রোগী পাবেন প্লেসিবো।
স্বাস্থ্য দফতরের সর্পাঘাত প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রধান চিকিৎসক দয়ালবন্ধু মজুমদার বলেন, ‘‘শুধু ওই ট্যাবলেট খেলেই হবে, তেমনটা নয়। সাপে কাটা রোগীকে অ্যান্টি-ভেনম দিতেই হবে। তবে ওই ট্যাবলেট কাজে দিলে সেটি খাওয়ার কারণে চিকিৎসা শুরুর কিছুটা বাড়তি সময় মিলবে। কারণ গ্রাম থেকে শহরের হাসপাতালে আসতেই অনেকটা সময় লেগে যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy