— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বড়দিন ও তার আগের রাতে শহরে মত্ত চালকদের দৌরাত্ম্য লাগাম ছাড়িয়েছিল। ওই দু’দিনে ১৯২ জন মত্ত চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি বলে অভিযোগ। বর্ষবরণের আগে যা চিন্তা বাড়াচ্ছে লালবাজারের। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ নামিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে লালবাজার। তবু চালক ও আমজনতার একাংশের পথে নেমে বিধি না-মানার প্রবণতা কতটা রোখা যাবে, তা নিয়ে শঙ্কা থাকছেই। আশঙ্কা আরও জোরালো করছে গত বছরের পরিসংখ্যান।
লালবাজার সূত্রের খবর, গত বছর বর্ষবরণের রাতে ১৭৯ জন মত্ত চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ছাড়া বিধিভঙ্গের দায়ে গ্রেফতার করা হয় ৫৪০ জনকে। বাজেয়াপ্ত হয় প্রায় ৮০ লিটার মদ। কিন্তু এ বছর কী হবে? আশঙ্কা বাড়িয়েছে এ বারের বড়দিন ও তার আগের রাতে একের পর এক বিধিভঙ্গের ঘটনা। ওই দু’দিনে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো থেকে বিনা হেলমেটে বাইক চালানো, বাইকের পিছনে একাধিক জনকে বসানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর মতো সব অভিযোগই উঠেছে। পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় নাকা তল্লাশি করে ব্যবস্থা নিলেও নজরদারি এড়িয়ে অবাধেই বিধিভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। ফলে বর্ষবরণের রাতে সেই প্রবণতা আদৌ রোখা যাবে কি না, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ কর্তারাও। পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে না যায়, সে জন্য বর্ষবরণের রাত ও বছরের প্রথম দিনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে কলকাতা পুলিশ।
লালবাজার সূত্রের খবর, আজ, রবিবার শহরে ২৫০০ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। ১ জানুয়ারি, সোমবার থাকবে অতিরিক্ত ২৪০০ পুলিশ। শহরের প্রায় একশোটি জায়গায় বিশেষ তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে পার্ক স্ট্রিট ও সংলগ্ন এলাকায় উপচে পড়া ভিড়কে মাথায় রেখে সেখানে থাকছে বিশেষ বন্দোবস্ত। পার্ক স্ট্রিটকে ৬টি সেক্টরে ভাগ করে থাকবেন ১০ জন উপ-নগরপাল পদমর্যাদার অফিসার, একাধিক ইনস্পেক্টর, সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার পুলিশ। তিনটি ওয়াচ টাওয়ার থেকে সেখানে রাতভর নজরদারি চলবে। দিনে ভিক্টোরিয়া, চিড়িয়াখানা, বিড়লা তারামণ্ডল-সহ শহরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকছে বাড়তি পুলিশ। সেখানে এক জন ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসার দায়িত্বে থাকবেন। বর্ষবরণের রাতে হোটেল, পানশালাগুলিতে আসা অতিথিদের উপরেও থাকবে কড়া নজর। মহিলাদের নিরাপত্তায় কলকাতা পুলিশের উইনার্স বাহিনীর পাশাপাশি থাকবে সাদা পোশাকের পুলিশও।
তবে এর পরেও আদৌ কতটা বিধি মানানো যাবে, তা ভাবাচ্ছে পুলিশকর্মীদের। ধর্মতলা চত্বরে কর্তব্যরত এক পুলিশের কথায়, ‘‘উৎসবে নিয়ম না মানাটাই অনেকে নিয়ম করে ফেলেছেন। আইনি ভয় দেখিয়েও এঁদের আটকানো যায় না।’’ লালবাজারের পুলিশকর্তারা যদিও কড়া হাতে বিধি বলবৎ করার আশ্বাস দিচ্ছেন। এক কর্তার কথায়, ‘‘শহরের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, তার জন্য যা যা করণীয় সে সবই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উৎসবের নামে রাস্তায় নেমে বিধিভঙ্গ বরদাস্ত করা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy