সোমবার এসএসকেএমের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সুমন বল্লভ।
প্রান্তিক এলাকার মানুষদের কাছেও যাতে রাজ্যের চিকিৎসা উৎকর্ষ কেন্দ্রের পরিষেবা পৌঁছে যায়, সেই লক্ষ্যে এ বার থেকে এসএসকেএম হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকদের পালা করে ওই সব এলাকায় পাঠানোর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, গভীর রাতে বা ভোরে হাসপাতালের আপৎকালীন পরিস্থিতি সামলাতে জুনিয়র চিকিৎসকেরাই অনেকবেশি দায়িত্ব নেন বলেও সোমবার জানান তিনি।
পূর্ব ভারতে চিকিৎসার উৎকর্ষ কেন্দ্র এসএসকেএমের ৬৭তম প্রতিষ্ঠা দিবস ছিল সোমবার। এ দিন সেখানে এক অনুষ্ঠানে এসে পিজি-র অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জুনিয়র চিকিৎসকদের দল তৈরি করে তিন-চার দিনের জন্য প্রান্তিক এলাকায় পাঠান। সেখানে গিয়ে শিবির করে ওঁরা পরিষেবা দিয়ে আসবেন।’’ মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এতে জুনিয়র চিকিৎসকেরা যেমন বাইরের জগৎ সম্পর্কে জানতে পারবেন, তেমনই প্রান্তিক এলাকার মানুষেরা চিকিৎসকদের কতটা ভালবাসেন, তা-ও বুঝতে পারবেন। এর জন্য পরে পেশাগত জীবনে আলাদা কিছু সুবিধাও মিলতে পারে বলে এ দিন জানান মমতা।
মমতার নির্দেশেই পিজির ট্রমা কেয়ারে এখন রাতে এক জন করে সিনিয়র চিকিৎসক থাকেন। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘জুনিয়রেরা রাত জেগে কাজ করেন। আমি মনে করি, কোনও না কোনও বড় জায়গায় বা উৎকর্ষ কেন্দ্রে রাতে কাউকে না কাউকে থাকতেই হবে। কারণ, গভীর রাতে বা ভোরে দুর্ঘটনা বা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেশি হয়।’’
কিন্তু স্রেফ বিলের অঙ্ক বাড়ানোর লক্ষ্যে মৃতদেহ আইসিইউয়ে রেখে দেওয়ার মতো ঘটনার উল্লেখ করে বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। তিনি বার্তা দেন, টাকার পিছনে না ছুটে নবীন প্রজন্মকে আরও মানবিক ও পরিবারের পাশে থাকতে হবে। নাম না করে বেসরকারি চিকিৎসা পরিষেবা ক্ষেত্রের সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অনেকে জোর করে পেসমেকার বসায়। মারা যাওয়ার পরেও আইসিইউয়ে দেহ রেখে বিল বাড়ায়। সব খবর আমাদের কাছে আছে। তবে অনেক ভাল হাসপাতালও রয়েছে। যাঁরা হাসপাতালে কাজ করেন, তাঁদের থেকে বড় সমাজসেবী নেই।’’
এক জন মানুষের কোন জীবন গ্রহণ করা উচিত, তা নিয়েও এ দিন প্রশ্ন উসকে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘এখন কেউ একের বেশি দু’টি পদ খাবার খান না। সকলেরই স্বাস্থ্যের দিকে নজর রয়েছে। টাকা থাকলেও খরচ হয় না।’’ সেই সূত্রেই জুনিয়র চিকিৎসক তথা নতুন প্রজন্মের ডাক্তারদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিদেশের তুলনায় দেশে কম টাকা রোজগার হলেও পরিবারের সঙ্গে থাকার আনন্দই আলাদা। তিনি বলেন, ‘‘বিদেশে অনেক টাকা আয় হতে পারে। কিন্তু সেখানে থাকা-খাওয়া-যাতায়াতে খরচও অনেক। সেই তুলনায় কলকাতায় অনেক কম টাকায় স্বচ্ছন্দে থাকা যায়। সন্তানকে মানুষ করতেই মা-বাবার ২০-২৫ বছর কেটে যায়। তাঁদের শেষ বয়সে একা থাকতে হয়। এটা ভাল লাগে না।’’
এ দিন পুলিশ হাসপাতালে এমআরআই কেন্দ্র, রেডিয়োথেরাপি বিভাগের সেমিনার হল, হাইপার-অ্যাকিউট স্ট্রোক ইউনিট, বহির্বিভাগ ও জরুরি ভবনের সংযোগকারী গ্যাংওয়ে এবং হেড-অ্যান্ড-নেক অস্ত্রোপচারের রোগীদের জন্য ইএনটি বিভাগে ১০ শয্যার আইসিইউ, বহির্বিভাগ ভবনের নতুন পাঁচটি তলের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন তলে ৯০টি শয্যা, ৬টি অপারেশন থিয়েটার, দন্ত ও রেটিনার চিকিৎসার কেন্দ্র থাকছে। পিজির স্নায়ু বিভাগ থেকে টেলিমেডিসিন পরিষেবার মাধ্যমে ৮০০ স্ট্রোক হওয়া রোগীকে বাঁচানো গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy