আলিপুরের উত্তীর্ণ-য় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নিজস্ব চিত্র
অমিত শাহ ‘কদর্য’ এবং ‘দৈত্যপরায়ণ’। আখ্যা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের সভা থেকে মমতাকে লক্ষ্য করে কড়া তোপ দেগেছিলেন অমিত। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন-সহ ধর্মীয় সংগঠনের সম্মেলনে অমিতের ‘কদর্য’ এবং ‘দৈত্যপরায়ণ’ মনোভাবের উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘যেন শারীরিক ভাবে হুমকি দিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে এ সব মানায় না।’’ বস্তুত, অমিত কোচবিহারের সভায় য়ে সমস্ত বিষয় তুলে মমতা এবং তৃণমূলকে আক্রমণ করেছিলেন, ধরে ধরে সেই প্রতিটি বিষয়ের জবাব দিয়েছেন মমতা।
তবে পাশাপাশিই মমতা অমিতকে বাংলায় ‘স্বাগত’ও জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম না করলেও তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘আজকেও (বৃহস্পতিবার) তিনি এসেছেন। আমাদের এখানে আসুন। সবাইকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু তিনি এসে যে কথাগুলো বলে গেলেন...তাঁদের শারীরিক ভঙ্গি, ভাষার কদর্যতা এবং দৈত্যপরায়ণ মনোভাব, দুরন্ত ক্ষমতার অপব্যবহার করে যেন ধমক দিতে এসেছেন!’’ কোচবিহারের সভায় অমিত বলেছিলেন, ‘‘ভোট শেষ হতে না হতেই মমতাদিদিও ‘জয় শ্রীরাম’ বলা শুরু করবেন।’’ যার পাল্টা মমতা বলেন, ‘‘দিদি গলা কেটে দেবে! তা-ও আপনাদের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।’’ অমিতের রাজনৈতিক আক্রমণে ‘পিসি-ভাইপো’রও উল্লেখ ছিল। তারও জবাব দিয়েছেন মমতা। এবং সেই জবাব দিতে গিয়ে টেনে এনেছেন অমিত-তনয় জয় শাহের কথা। ঘটনাচক্রে, যিনি বিসিসিআইয়ের সচিব এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করেন। মমতার কথায়, ‘‘খালি বুয়া-ভাতিজা? আপনার ছেলে কী করে? কী করে এত টাকা এল তার কাছে!’’
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জিতে বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় এসে সরকার গড়বে বলে দাবি করেছিলেন অমিত। তৃণমূলনেত্রী পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘ফুচকা খাওয়ার ক্ষমতা নেই, ফুলকো লুচি খাবে!’’ এর পরেই বিজেপি-কে ব্রিগেডে ‘খেলা’র আহ্বান জানান মমতা। তবে বিজেপি-র পাশাপাশি তিনি বিরোধী সিপিএম এবং কংগ্রেসকেও একযোগে ‘খেলা’য় আহ্বান জানিয়েছেন। মমতার কথায়, ‘‘হোক না একটা খেলা! রাজনীতির খেলা। গণতন্ত্রের খেলা। দেখা যাক কে হারে কে জেতে! আপনারা থাকবেন। সঙ্গে সিপিএম, কংগ্রেসকেও দিয়ে দিলাম। ব্রিগেডে এক দিকে জগাই, মাধাই আর গদাই। অন্য দিকে আমি। আমি গোলরক্ষক। দেখি ক’টা গোল আপনারা দিতে পারেন! খেলা অত সহজ নয়।’’ এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘যো দিদি সে টকরায়েগা, ওহ্ চুর চুর হো যায়েগা।’’ অর্থাৎ যিনি দিদির সঙ্গে টক্কর নেবেন, তিনি চুরমার হয়ে যাবেন।
কোচবিহারের সভা থেকে অমিত তৃণমূল নেতৃত্ব এবং সরকারকে ‘দুর্নীতিপরায়ণ’ বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। তৃণমূলনেত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আমি দুর্নীতিপরায়ণ হলে তোমরা কী?’’ ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘সংযম’ দেখানোর বিষয়টিও বিজেপি নেতৃত্বকে মনে করিয়ে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘এটা বাংলা। এখানে গুন্ডামি চলবে না।’’ কোচবিহারের সভায় অমিত নাগরিকত্ব আইন ‘সিএএ’ সংক্ষেপে ‘ক্যা’ চালু করার কথা জোর দিয়ে বলেছিলেন। মমতা ‘উত্তীর্ণ’-র সভায় সেই ঘোষণাকেও কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘যত খুশি ক্যা-কু করো। কিন্তু এখানে ট্যাঁ ফু করা যাবে না!’’
বিজেপি-কে যেন বাংলার মানুষ ক্ষমতায় না আসতে দেন, সেই মর্মে হাতজোড় করে জনতার কাছে আবেদনও জানিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘ওরা এলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। আপনারা সেই সর্বনাশ হতে দেবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy