রাজভবন। —ফাইল চিত্র।
কলকাতায় রাতের রাজপথে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে সব মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছিল ‘উইনার্স’। কলকাতা পুলিশের সেই বিশেষ মহিলা বাহিনীকেই আর রাখা হচ্ছে না রাতপথের টহলে! পুলিশ সূত্রে তেমনই জানা গিয়েছে। বদলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ও রাজভবনের আশপাশে দিনের বেলায় ডিউটি দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। প্রশ্ন উঠেছে, রাতের শহরে নজরদারি ও ধরপাকড়ে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই বাহিনীর কাজের দায়িত্ব বদলে হঠাৎ ভিভিআইপি এলাকা দেখাশোনার ভার দেওয়া হচ্ছে কেন? রাতে মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়টি তা হলে দেখবেন কারা? লালবাজার জানিয়েছে, এটা একেবারেই প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। মুখ্যমন্ত্রী নিজে উইনার্সের কাজে অত্যন্ত খুশি। তাই তাঁর ইচ্ছেতেই এই দুই দায়িত্ব পেয়েছে উইনার্স।
২০১৮ সালে আত্মপ্রকাশ উইনার্স বাহিনীর। তখন নগরপাল ছিলেন রাজীব কুমার। সন্ধ্যা ও রাতের দিকে পথে বেরোনো মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই বাহিনীর সৃষ্টি বলে সে সময়ে জানান রাজীব। বাছাই করা মহিলা পুলিশকর্মীদের নিয়ে পিটিএস-এ ২০১৮ সালের মার্চে শুরু হয় প্রশিক্ষণ। মোটরবাইকে সওয়ার এই বাহিনী মার্শাল আর্টস জানার পাশাপাশি আধুনিক সব আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারেও সিদ্ধহস্ত। তিন জন অফিসারের পাশাপাশি ৩৬ জনকে নিয়ে পথ চলা শুরু করা এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা এখন ৫০। রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদে তিন বছর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন মহিলাদেরই যুক্ত করা হয়েছে উইনার্সে। পুলিশের দাবি, গত কয়েক বছরে এই বাহিনীর জন্যই শহরে অনেকটাই কমেছে রাস্তাঘাটে মহিলাদের উত্ত্যক্ত করার ঘটনা। যে সমস্ত এলাকায় মহিলাদের বিরুদ্ধে অতীতে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার নজির রয়েছে, সেখানেই বাড়তি গুরুত্ব দিতে দেওয়া হয়েছে এই বাহিনীকে। দেশে সাড়া ফেলে দেওয়া একাধিক ধর্ষণের ঘটনার পরেও উইনার্সকে কলকাতা পুলিশ এলাকায় আলাদা করে নজরদারি চালাতে দেখা গিয়েছে।
দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর সময়ে ভিড় সামলেও বিশেষ প্রশংসা পেয়েছে এই বাহিনী।
উইনার্সের এক সদস্য জানাচ্ছেন, ২০২২ সালের অগস্টে প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয় উইনার্স-কে। সেই জন্য কিছু দিন বন্ধ রাখা হয় এই বাহিনীর মূল কাজ, রাতে টহলদারি। মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথে কালীঘাট থেকে নবান্ন পর্যন্ত রাখা হত এই বাহিনীকে। এক সদস্যের কথায়, ‘‘কালীঘাট থেকে নবান্ন পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর যাতায়াতের পথে প্রতিটি বিটে আমাদের দু’জন করে রাখা হত। মুখ্যমন্ত্রী শহরের মধ্যে কোথাও গেলে সেই পথে বা বাইরে গেলে শহরের সীমানা পর্যন্ত আমরা সঙ্গ দিতাম।’’ এর পরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে রাস্তায় রাতপাহারায় রাখা হত উইনার্সকে। হাজরা মোড় থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি ঘিরে টহল চলত। এ বার সেই রাতের কাজের বদলে দিনে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি চত্বরে এবং রাজভবনে দু’টি আলাদা দলকে ভাগ করে কাজ দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে চলছে ১৫ অগস্টের প্রস্তুতি। রেড রোডে এই বাহিনীর বিশেষ কসরত এ বার নতুন ভাবে পুলিশ তুলে ধরবে।
কিন্তু মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য রাতপাহারার কী হবে? পুলিশের কোনও মহল থেকেই এ নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এক পুলিশকর্তা শুধু বলেছেন, ‘‘কলকাতা পুলিশের ‘শক্তি’ বাহিনী রয়েছে। যার সব সদস্যই মহিলা। এ ছাড়াও রয়েছে যে কোনও সশস্ত্র হামলার মোকাবিলায় বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলা বাহিনী ‘ওয়ারিয়র্স’। ফলে কোনও কাজই কোনও বাহিনীর জন্য আটকে থাকবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy