ফাইল ছবি
লকডাউন-পরবর্তী সময়ে অন্যান্য বিভাগ কর আদায়ে দিশা দেখাতে পারলেও কলকাতা পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগে পরিস্থিতি এখনও বিশেষ আশাব্যঞ্জক নয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে বিজ্ঞাপন বিভাগ ফি-বছর গড়ে ২০ কোটি টাকা করে কর আদায় করত। কিন্তু গত তিন বছরে সাকুল্যে ২৫ কোটি টাকাও আয় করতে পারেনি তারা। আবার চলতি আর্থিক বছরেও বিজ্ঞাপন বাবদ কর আদায় বেশ কমেছে। পুরসভার মেয়র পারিষদ (বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমারের দাবি, ‘‘গত এক বছরে শহরের রাস্তায় কোনও হোর্ডিং বসানো যায়নি। টেন্ডারে কোনও সংস্থা যোগ দিচ্ছে না। সেই কারণেই আয় কমেছে।’’
পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, করোনার জেরে লকডাউনের সময়ে বিজ্ঞাপনের ব্যবসায় প্রভূত ক্ষতি হয়েছিল। যে ক্ষতি এখনও পূরণ করতে পারেননি এ শহরের ব্যবসায়ীদের অনেকেই। তাই তাঁদের অনেকেই বিজ্ঞাপনের খরচে রাশ টেনেছেন। বিজ্ঞাপন থেকে পুরসভার আয় কমার সেটাও একটা বড় কারণ।
তবে, মেয়র পারিষদ শহরের রাস্তায় হোর্ডিংয়ের সংখ্যা কমে যাওয়ার কথা বললেও মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতা বলছে, কলকাতার বহু এলাকাই অবৈধ হোর্ডিংয়ে ছেয়ে গিয়েছে। পুরসভারই অন্দরের খবর, তিনটি বিজ্ঞাপন সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে যে, তারা পার্ক স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিট, কালীঘাট ও বালিগঞ্জের মতো এলাকায় কয়েকশো বেআইনি হোর্ডিং বসিয়েছে। এই সংক্রান্ত অভিযোগ মেয়রের কাছেও জমা পড়েছে।
করোনা কালে কর আদায়ের ক্ষেত্রে সব থেকে দুরবস্থা দেখা দিয়েছিল বিজ্ঞাপন বিভাগের। তাই বিজ্ঞাপন বাবদ কর আদায় বাড়াতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। যেমন, গত বছরের জানুয়ারিতে বিজ্ঞাপন বিভাগের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, বিজ্ঞাপন থেকে কর আদায়ের ক্ষেত্রে দিল্লি ও পুণের পথ অনুসরণ করবে কলকাতা পুরসভা। অর্থাৎ, বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলির কাছ থেকে প্রথম সাত মাস কোনও কর নেওয়া হবে না। করোনা-পরবর্তী সময়ে দিল্লি ও পুণে পুরসভা এই পথে হেঁটে সাফল্য পেয়েছিল। কিন্তু কলকাতা পুরসভা মুখে বললেও এই পদ্ধতি বাস্তবায়িত করতে পারেনি।
পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের যত্রতত্র বেআইনি হোর্ডিং লাগানো হলেও সেগুলির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর বিষয়টি কার্যত শিকেয় উঠেছে। অভিযোগ, পুরকর্তাদেরই একটি অংশ কয়েকটি বিজ্ঞাপন সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিতে চাইছেন। পুর আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, বেআইনি হোর্ডিংয়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হলে সংস্থাগুলি বৈধ হোর্ডিং লাগাতে বাধ্য হবে। যার ফলে বিজ্ঞাপন বাবদ কর আদায়ও বাড়বে পুরসভার। এক শীর্ষ পুর আধিকারিকের পর্যবেক্ষণ, ‘‘কয়েক বছর আগেও কিন্তু বেআইনি হোর্ডিংয়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হত। এমনকি, রাতভর অভিযান চলত। সেই সময়ে বছরে বিজ্ঞাপন বাবদ কর আদায় হয়েছিল ৩৫ কোটি টাকার বেশি।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, এ শহরের একাধিক বিপজ্জনক বাড়ি ও হেরিটেজ ভবনে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং টাঙানো হয়েছে বলে পুর দফতরে অভিযোগ জমা পড়েছে। বিপজ্জনক বাড়িতে বড় বড় হোর্ডিং টাঙানো হলে যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় বিপদ ঘটে যেতে পারে বলে পুর আধিকারিকেরাই জানাচ্ছেন। পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বিপজ্জনক বা হেরিটেজ বাড়িতে হোর্ডিং থাকার কথা নয়। এ বিষয়ে আগেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামী দিনেও পুরসভা পদক্ষেপ করবে। সমস্ত বেআইনি হোর্ডিং সরিয়ে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy