Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Satyajit Ray

Kolakata Karcha: আত্মসম্বিতের গান

লন্ডনে ইন্ডিয়ান সোসাইটি-র সভায় সঙ্গীত-বিশেষজ্ঞ আর্নল্ড রবীন্দ্রগানকে বলেছিলেন ‘বাঙালির সাংস্কৃতিক জীবনের সারাৎসারের দান’।

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২২ ০৭:৩৯
Share: Save:

তাঁদের একজন সঙ্গীতের উপরে লিখেছেন বই, ‘কবি’-র পিতা বেঁধেছেন ধর্মসঙ্গীত, আর এক ভাই জাতীয় স্তোত্র। আরেক ভাই, জ্যোতিরিন্দ্র, সারাদিন ব’সে থাকতেন পিয়ানোয়, বাজিয়ে যেতেন পুরোনো ক্লাসিকাল সুর আপনমনে, আর কবি... চেষ্টা করতেন সেই সুরে কথা বসানোর।” টোয়েন্টি সিক্স সংস অব রবীন্দ্রনাথ টেগোর গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছেন আর্নল্ড বাকে, দেখিয়েছেন পাশ্চাত্য, ভারতীয় ও লোকসঙ্গীতের সঙ্গমে কী ভাবে রবীন্দ্রনাথের গান ক্রমে পরিণত হল এক ‘হারমোনিয়াস ফর্ম অব আর্ট’-এ। স্রষ্টা স্বয়ং জানতেন তাঁর গানের গুরুত্ব, লিখে গিয়েছেন, “প্রায়ই আমার মনে হয়, যদি আমার সমস্ত কবিতা মানুষ ভুলেও যায়, আমার দেশের লোকের কাছে আমার গান স্থায়ীভাবে র’য়ে যাবে।”

লন্ডনে ইন্ডিয়ান সোসাইটি-র সভায় সঙ্গীত-বিশেষজ্ঞ আর্নল্ড রবীন্দ্রগানকে বলেছিলেন ‘বাঙালির সাংস্কৃতিক জীবনের সারাৎসারের দান’। সুভাষ ভট্টাচার্যের মতে রবীন্দ্রগান বাঙালির ‘বড় আদরের উপার্জন’, আর সুধীর চক্রবর্তী বলেন তার যাত্রাপথকথা, “নিজের কারুবাসনাকে দীর্ঘ ষাট বছরের নিরন্তর সক্রিয় প্রয়াসের মধ্যে দিয়ে নিয়ে গিয়ে তিনি একটি শীর্ষবিন্দুতে পৌঁছে দিয়ে গেছেন,” মনে করিয়ে দেন গানের বাণীসাধনার পিছনে দীর্ঘ অনুশীলনের কথা।

রবীন্দ্রনাথের বহুমুখী প্রতিভার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সৃষ্টিধারা হিসাবে তাঁর গানকেই সাব্যস্ত করেছে মুদ্রা পত্রিকা (সম্পাদক: শৈবাল সরকার) তাদের ‘রবীন্দ্রনাথের গান’ সংখ্যাটি নিবেদিত রবীন্দ্রগানের নানা দিক ও আঙ্গিক নিয়ে আলোচনায়। আর্নল্ড বাকে শৈলজারঞ্জন মজুমদার অনাদিকুমার দস্তিদার রাজ্যেশ্বর মিত্র নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত সুভাষ চৌধুরী সুভাষ ভট্টাচার্য পবিত্র সরকার শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় জয় গোস্বামী তিলোত্তমা মজুমদার সুশোভন অধিকারী অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্টজনের রবীন্দ্রগান-বীক্ষা সম্পদ এ পত্রিকার। কয়েকটি লেখা অপরিহার্য পুনর্মুদ্রণ। সুধীর চক্রবর্তী শুরু থেকেই অভিভাবক ছিলেন এ পত্রিকার, রবীন্দ্রসঙ্গীত ও গীতবিতান প্রসঙ্গে তাঁর, এবং সঙ্গীতকার ও পারফর্মারের দিক থেকে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মোহন সিংহ খাঙ্গুরার সাক্ষাৎকারগুলি বোঝায়, কেন রবীন্দ্রনাথের গান মানুষের ‘ক্রমবর্ধমান আত্মসম্বিতের গান’— কথামুখে যেমন বলেছেন সম্পাদক।

তাঁর গানের বিকৃতি প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের আক্ষেপ ছিল: “নিজে রচনা করলুম, পরের মুখে নষ্ট হচ্ছে, এ যেন অসহ্য।” সুর ও বাণীর বোধহীন, অবিনীত রবীন্দ্রগায়নের প্রবণতা আজও ঘিরে আছে এই সময়কে, এ কালে বরং তা বিপজ্জনক ভাবে বেশি। এই পত্রিকাটি সেই ক্ষতে প্রলেপ যেন, মনে করিয়ে দেয় রবীন্দ্রগান নিয়ে কোন জিনিসটি দরকার: সতত সংলাপ, চর্চা, বোধের অনুশীলন। ছবিতে শান্তিনিকেতনে ‘উদয়ন’ বাড়ির পিয়ানো।

চিঠির সত্যজিৎ

সাত তাড়াতাড়ি বিয়ে করে মেয়েটা বিরাট ভুল করে ফেলল... ডিম্পল কাপাডিয়া সম্পর্কে মত সত্যজিৎ রায়ের, ২৪ নভেম্বর ১৯৭৩-এর চিঠিতে। ’৭৫-এর ২১ জানুয়ারি লিখছেন জনঅরণ্য ছবির স্ক্রিপ্ট শুরুর কথা, ১৯৮৬-র ২৯ অগস্টের চিঠিতে ফুটে উঠছে তার আগের আড়াই বছর কোনও ছবি করতে না পারার হতাশা। ছবির জগতের মানুষটি, ছবির বাইরেরও— নিজের ভাবনা মেলে ধরেছেন গোড়ায় ‘ফ্যান’, পরে পারিবারিক বন্ধু হয়ে ওঠা নীলাঞ্জনা সেনের কাছে। সেই সব চিঠিই মূল উপজীব্য ইতি, সত্যজিৎদা নামের বই ও প্রদর্শনীর, চলছে কলকাতা সেন্টার ফর ক্রিয়েটিভিটি (কেসিসি)-তে, মুসুই আর্ট ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায়, সার্বিক পরিকল্পক এস রাধাকৃষ্ণন। আছে সত্যজিতের চিঠি, ছবি, পোস্টার, খেরোর খাতা... চোখ ও মনের রসদ। ৮ জুন পর্যন্ত, সকাল ১১টা-সন্ধ্যা ৬টা। সঙ্গের ছবিটি প্রচারপত্র থেকে।

জন্মদিনে

বাংলার এক অনন্য শিল্পমাধ্যমের পুরোধাপুরুষ তিনি, স্নেহময় শিক্ষকও। মন দিয়ে বসে দেখছিলেন শিল্পের উত্তরাধিকার— পরবর্তী প্রজন্ম কেমন আত্মস্থ করেছে মূকাভিনয় শিল্পকে। গত ৯ মে নব্বই ছুঁলেন যোগেশ দত্ত, পঁচিশে বৈশাখের সন্ধ্যায় যোগেশ মাইম অ্যাকাডেমিতে অন্তরঙ্গ আবহের অনুষ্ঠানটিতে কিন্তু মঞ্চে উঠলেন না এক বারও, রইলেন দর্শকাসনে, সুরেশ দত্ত মনোজ মিত্র-সহ বহু শুভার্থীর সঙ্গে। মঞ্চে অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থীদের রোবট, স্বপ্ন, ফুচকাওয়ালা, আমাকে বাঁচতে দাও-এর মতো মূকাভিনয় পরিবেশনাগুলি বুঝিয়ে দিল, শিক্ষা ও শিল্পের উত্তরাধিকার যোগ্য দক্ষতায় বহমান। প্রথমার্ধে ছিল প্রকৃতি দত্তের গান, মূলত রবীন্দ্রনাথের। জন্মদিনের উচ্ছ্বাস নয়, শান্ত শমিত কবীন্দ্র-সন্ধ্যা।

বিজয় স্মরণে

১৯৪৫ সালের ৮ মে ফ্রান্সে আত্মসমর্পণ করেছিল ফ্যাসিস্ট বাহিনী, ৯ মে তারা পরাস্ত হয়েছিল বার্লিনে— দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপন। জোসেফ স্তালিনের সময় থেকেই এই দ্বিতীয় তারিখটিকে ‘বিজয় দিবস’ হিসাবে পালন করে আসে রাশিয়া, সোভিয়েট-উত্তর পর্বে তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবস। ঐতিহাসিক দিনটির স্মরণে বড় আয়োজন কলকাতার রুশ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি কেন্দ্র গোর্কি সদনে। ১০ মে উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে উঠে এল বিশ্বযুদ্ধের নানা ঘটনা, লাল ফৌজের বীরত্বের কাহিনি— ১২ ও ১৩ মে বসেছিল সাহিত্য-সংস্কৃতির অধিবেশন। আগামী ১৭ মে, মঙ্গলবার সন্ধে ৬টায় তেমনই আর এক আয়োজনে বলবেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে চলবে রবীন্দ্রনাথের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপনও। প্রদর্শনীর সময় ৩টে থেকে ৬টা, রবিবার বাদে প্রতি দিন।

বহমান

রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলেন তাঁর গান উদাত্ত কণ্ঠে শুদ্ধ উচ্চারণে গীত হোক, সেই ভার নিন সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯৪৮-এ মহর্ষি ভবনের দোতলায় দক্ষিণের হলঘরে ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণীর উপস্থিতিতে প্রতিষ্ঠা ‘বৈতানিক’-এর। সৌম্যেন্দ্রনাথের প্রস্তাব ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীতের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উপর আলাদা ভাবে সঙ্গীত-সহ আলোচনার। সে বছর ডিসেম্বরে শান্তিনিকেতনে দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনে আমন্ত্রিত হয় এই প্রতিষ্ঠান। সঙ্গীত-সহ আলোচনা বৈতানিকের হাত ধরেই শুরু, বহতা আজও। ১৯৪৯-এ প্রথম রবীন্দ্র জন্মোৎসব পালন, অতিমারির দু’বছর হয়েছে আন্তর্জালে, এ বছর পঁচিশে বৈশাখে ফিরল স্বমহিমায়— বিষয়ভাবনা ‘রবীন্দ্রনাথ, স্বদেশ ও স্বাধীনতা’— বিপ্লব বসুর আলোচনায়, বৈতানিক-এর শিল্পীদের গানে।

রবি-গান

অজস্র বাঙালির কাছে রবীন্দ্রনাথের গান মানেই আজও দেবব্রত বিশ্বাস— পঁচিশে বৈশাখে, কবিপক্ষে তো বটেই, বছরভর। দেবব্রত বিশ্বাসের গানের সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেবব্রত বিশ্বাস স্মরণ কমিটির, এ বছর পঁচিশে বৈশাখে বাহার মিউজ়িক-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওঁদের উপহার জর্জ-কণ্ঠে তিনটি নতুন অ্যালবাম— অন্তরঙ্গ জর্জদা, গানের রতনহার, মেমোরেবল টেগোর সংস ইন দ্য গোল্ডেন ভয়েস অব দেবব্রত বিশ্বাস। অশ্রুতপূর্ব গান কি না জানা নেই, তবে কবিপক্ষে দেবব্রতকণ্ঠ শোনার নতুন সুযোগ স্বাগত সতত। নজরকাড়া উদ্যোগ ঢাকার ‘উত্তরায়ণ’ সংস্থারও, রবীন্দ্রনাথের ইউরোপ থাকাকালীন রচিত ৩১টি গান ওঁরা বেঁধেছেন তিনটি সিডিতে, গেয়েছেন লিলি ইসলাম ও সহশিল্পীরা। ‘ভাবনা’-র নিবেদনে প্রেস ক্লাবে অ্যালবামটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ আগামী ১৭ মে বিকাল ৫টায়।

মৃণাল-ভুবন

কবিতায় পাশাপাশি শব্দে অতীত-বর্তমানের বসবাস, গল্প-উপন্যাসেও, ফিল্মে কেন তা আনা যাবে না! এই জেদ পেয়ে বসেছিল একদিন অচানক তৈরির সময় মৃণাল সেনকে (ছবিতে এ সিনেমার শুটিংয়ে তাঁর সঙ্গে অপর্ণা সেন), বলেছেন এক সাক্ষাৎকারে। সেই ছবির নির্মাণপর্ব কেন্দ্র করে তাঁর মানসভুবন ছোঁয়ার চেষ্টা করেছেন সঞ্জয় ভট্টাচার্য, উইথ মৃণাল সেন তথ্যচিত্রে। “মৃণালদা কী ভাবে পৌঁছতেন স্ক্রিপ্ট টু স্ক্রিন, তা নিয়েই এ ছবি,” জানালেন সঞ্জয় ও তাঁর সঙ্গী সুব্রত ভট্টাচার্যও, ছবিটি দেখানো হবে আজ বিকেল ৫টায় সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে (এসআরএফটিআই) মৃণাল সেনের ৯৯ বছরের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে। এসআরএফটিআই-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের, বলবেন গৌতম ঘোষ ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় মমতাশঙ্কর অঞ্জন দত্ত শ্রীলা মজুমদার অশোক বিশ্বনাথন-সহ অনেকে। অন্য দিকে, আজ রাত ৮টায় মৃণাল সেনকে নিয়ে ‘নন্দন ভার্চুয়াল ফিল্ম সোসাইটি’-র আন্তর্জাল-আলোচনা ‘অ্যাক্সিডেন্টাল ফিল্মমেকার’, বক্তা শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় নিশা রুপারেল কুণাল সেন প্রমুখ। দেখা যাবে সোসাইটির ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেলেও।

স্মৃতিসুখ

ফিল্মের ক্যান হাতে হেঁটে যাচ্ছেন মানুষটি, পাশে আরও বহু ফিল্মের ক্যান ছড়ানো... বিলীয়মান দিনের ছবি। সিঙ্গল স্ক্রিন হল ছিল কলকাতা-সহ ভারতের বিভিন্ন শহরে, আজ তা অনেকটাই গল্পকথা। উঠেই গিয়েছে অধিকাংশ, বাকিরা ধুঁকছে, ভাঙাচোরা। প্রজেকশন রুম, প্রজেকশনিস্ট, হাফটাইমে মুখরোচক খাবারপানে ধাবমান দর্শক, টিকিটের ভিড়... সবই প্রায় উধাও। স্মৃতি হয়ে যাওয়া সিনেমাগামী শহরের সেই জীবন ফিরিয়ে এনেছেন অমিত ধর আর সাত্যকি ঘোষ, তাঁদের তোলা ছবিতে। স্মৃতিবাহী সেই সব ছবি নিয়েই প্রদর্শনী ‘কার্টেন ক্লোজ়েস’, গ্যালারি এইট ইনটু সিক্স-এ, আগামী কাল থেকে। উদ্বোধনে সন্দীপ রায়, চলবে ২৯ মে পর্যন্ত, রোজ দুপুর ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা। “সিনেমার প্রতি প্যাশন থেকে পুরনো সিনেমাহলের ছবি তুলে গিয়েছি... পাশে থেকে প্রাণিত করেছেন অমিত ধর। তাই আমাদের দু’জনের এই প্রদর্শনী।” জানালেন সাত্যকি, সঙ্গের ছবিটি তাঁরই তোলা।

আজও চমৎকার

কাঠ কুঁদে গড়া পুতুল সে। হাঁটে, কথা বলে, ঝগড়া করে, মিথ্যে কথা কইলেই লম্বা হতে শুরু করে নাকটা। ইটালিয়ান লেখক কার্লো কোল্লোদির ১৮৮৩ সালের বই দি অ্যাডভেঞ্চার্স অব পিনোক্কিয়ো আজও চমৎকার, সবার মন জয় করে চলেছে ছবিতে, টিভিতে, মঞ্চায়নে— জনসংস্কৃতিতে। পুতুলের কথা, পুতুলনাটক আঙ্গিকে না হলে হয়? আজ মধুসূদন মঞ্চে সন্ধ্যা ৬টায় ‘ডলস থিয়েটার’-এর পুতুলনাটকে হাজির বিশ্বখ্যাত ইটালীয় কল্পকথা পিনোক্কিয়ো— আয়োজনে ‘ফ্রিড’, সঙ্গী কলকাতার ইটালিয়ান কনসুলেট। আরও প্রাপ্তি রামপদ ঘোড়ুইয়ের বেণীপুতুলের পালা, মণিমালা চিত্রকরের পটের গান।

অন্য বিষয়গুলি:

Satyajit Ray mrinal sen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy